চক্ষু বিভাগ বন্ধ দু’দিন, বোর্ড দেখে বিভ্রান্তি রোগীদের

ছিলেন তিন চিকিৎসক। তাঁদেরই একজন লোকসভার সাংসদ হয়ে ইস্তফা দেওয়ায় পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের চক্ষুবিভাগে চিকিৎসকের সংখ্যা কমে হয়েছে দুই। নতুন করে চক্ষু চিকিৎসক না আসায় ওই বিভাগে রোগীদের দুর্ভোগ বেড়ে গিয়েছে। মঙ্গলবারই চক্ষুবিভাগের বহির্বিভাগ বন্ধ থাকায় দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীরা হতাশ হয়ে ফিরে গেলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৪ ০২:৩১
Share:

অপেক্ষাই সার। —নিজস্ব চিত্র

ছিলেন তিন চিকিৎসক। তাঁদেরই একজন লোকসভার সাংসদ হয়ে ইস্তফা দেওয়ায় পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের চক্ষুবিভাগে চিকিৎসকের সংখ্যা কমে হয়েছে দুই। নতুন করে চক্ষু চিকিৎসক না আসায় ওই বিভাগে রোগীদের দুর্ভোগ বেড়ে গিয়েছে। মঙ্গলবারই চক্ষুবিভাগের বহির্বিভাগ বন্ধ থাকায় দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীরা হতাশ হয়ে ফিরে গেলেন।

Advertisement

হাসপাতালের সুপার নীলাঞ্জনা সেন বলেন, “চক্ষু বিশেষজ্ঞ মৃগাঙ্ক মাহাতো লোকসভার সাংসদ হয়ে ইস্তফা দেওয়ায় এখন মাত্র দু’জন চিকিৎসক রয়েছেন। চাপ বেড়ে যাওয়ায় তাই অধিকাংশ মঙ্গলবার ও শুক্রবার চক্ষুর বহির্বিভাগ বন্ধ থাকছে। এ দিন কয়েকজন রোগীর চোখের অস্ত্রোপচার থাকায় বহির্বিভাগে চিকিৎসকেরা যেতে পারেননি।”

এ দিন বেলা ১১টা. নাগাদ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সমস্ত বিভাগের বহির্বিভাগের সামনে থিকথিকে ভিড়। কিন্তু টিকিট হাতে নিয়ে চক্ষু বিভাগের ১১ নম্বর ঘরের সামনে রোগীরা কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে ফিরে যাচ্ছেন। দরজায় ঝুলছে তালা। সবে সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন, চক্ষু বিভাগের দরজায় তালা কেন? রোগীরা অবশ্য এ প্রশ্নের কোনও সদুত্তর পাচ্ছেন না। আড়শার একটি গ্রাম থেকে আসা এক রোগী এ দিন চক্ষু বিভাগ কেন বন্ধ রয়েছে জানতে চাওয়ায় হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মী জবাব দেন, কেন বন্ধ তিনি জানেন না। এক রোগী জানালেন, হত শুক্রবার এসেও তিনি দরজা বন্ধ দেখে ফিরে গিয়েছিলেন।

Advertisement

আড়শা থেকে চক্ষু বিভাগে এসেছিলেন সুশীলা রায় ও শিশু রায়। তাঁরা বলেন, “গত বুধবার চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে। এক সপ্তাহ পরে পরীক্ষা করিয়ে নিয়ে যেতে বলেছিল। কিন্তু এসে দেখছি চক্ষু বিভাগের দরজাই খোলেনি। এখন কী করব?” পুরুলিয়া মফস্সল থানার চিড়কা গ্রাম থেকে মাকে নিয়ে এসেছিলেন ছেলে বনমালি মাহাতো। টিকিট হাতে বিভাগের সামনে এসে বিভাগ বন্ধ দেখে এ দিক ও দিক চেয়ে কেন বন্ধ জবাব পেলেন না। বিভাগের দরজার উপরে অবশ্য যথারীতি বোর্ডে টাঙানো রয়েছে চিকিৎসকদের নাম সোমবার-মঙ্গলবার আলোক কুণ্ডু, বুধবার-বৃহস্পতিবার দেবাশিস প্রামাণিক এবং শুক্রবার-শনিবার মৃগাঙ্ক মাহাতো। সেই বোর্ড দেখে বনমালিবাবু এক স্বাস্থ্যকর্মীকে ডেকে জানতে চাইলেন, “ওই তো ডাক্তারবাবুদের নাম লেখা রয়েছে। তাহলে এ দিন ডাক্তার বসবেন না কেন?” জবাব দিতে পারেননি ওই স্বাস্থ্যকর্মী।

এ দিন একই ছবি দেখা গিয়েছে বহির্বিভাগের দোতলায় নাক-কান-গলা বিভাগেও। ওই বিভাগের দরজাও বন্ধ ছিল। রোগীরা এসে চিকিৎসা না করাতে পেরে ফিরে যান। কাশীপুরের আগরডি গ্রামের বাসিন্দা উত্তমকুমার মাহাতো এসেছিলেন গলা ব্যথার উপসর্গ নিয়ে। তাঁদের প্রশ্ন, “এত বড় জেলা হাসপাতাল। অথচ এখানেও ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা বন্ধ থাকবে? তা হলে আমরা যাব কোথায়?”

হাসপাতালের সুপার নীলাঞ্জনা সেন বলেন, “চক্ষু এবং নাক-কান-গলা বিভাগে এখন প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক কম। তাই কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।” তিনি জানান, সমস্যা কী ভাবে সমাধান করা যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন