জলাতঙ্কের গুজব কমার লক্ষণ নেই সন্দেশখালিতে

জলাতঙ্ক নিয়ে এখনও আশঙ্কায় সন্দেশখালির শীতলিয়া গ্রামের মানুষ। জেলা স্বাস্থ্যকর্তার বারণ সত্ত্বেও বাধ্য হয়েই পুলিশ প্রহরায় বৃহস্পতিবারও শতাধিক মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে গত ১৪ দিনে গ্রামের হাজার দু’য়েক মানুষ প্রতিষেধক নিলেন। অথচ এখনও পর্যন্ত একজনেরও মধ্যেও জলাতঙ্ক রোগের কোনও লক্ষণই দেখা যায়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সন্দোশখালি শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৩১
Share:

প্রতিষেধক নেওয়ার লাইন। নিজস্ব চিত্র।

জলাতঙ্ক নিয়ে এখনও আশঙ্কায় সন্দেশখালির শীতলিয়া গ্রামের মানুষ। জেলা স্বাস্থ্যকর্তার বারণ সত্ত্বেও বাধ্য হয়েই পুলিশ প্রহরায় বৃহস্পতিবারও শতাধিক মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে গত ১৪ দিনে গ্রামের হাজার দু’য়েক মানুষ প্রতিষেধক নিলেন। অথচ এখনও পর্যন্ত একজনেরও মধ্যেও জলাতঙ্ক রোগের কোনও লক্ষণই দেখা যায়নি। স্রেফ গুজবের জেরে প্রতিদিন যে ভাবে মানুষ প্রতিষেধক নিতে আসছেন, তাতে রীতিমতো উদ্বিগ্ন ব্লক মেডিক্যাল অফিসার পীযূষ মণ্ডল। এ দিন ১৮০ জনকে প্রতিষেধক দিতে হয়েছে বলে জানিয়ে পীযূষবাবু বলেন, “পদস্থ কর্তারা প্রতিষেধক দিতে বারণ করছেন। অথচ ভোর থেকে মানুষ তা নেওয়ার জন্য লাইন দিচ্ছেন হাসপাতালের সামনে।” স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশের আশঙ্কা, এই অবস্থায় যদি গ্রামের লোককে বলা হয় আর প্রতিষেধক দেওয়া যাবে না, তা হলে অবস্থা হিতে বিপরীত হতে পারে। পরিস্থিতির কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পীযূষবাবু।

Advertisement

গত তিন মাস আগে যে গরুর দুধে রাসমেলায় ভোগ রান্না হয়েছিল, সেই খাবার খান শীতলিয়া গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। এক হাতুড়ে চিকিৎসকের দাবি, একটা পাগলা কুকুরের কামড়ের পরে জলাতঙ্ক হয়ে মারা যায় একটি গরু। তার দুধও ভোগ তৈরিতে ব্যবহার হয়েছিল। রটে যায়, জলাতঙ্কে আক্রান্ত গরুর দুধে তৈরি খাবার খেয়েও নাকি জলাতঙ্ক হতে পারে। যার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তা ও চিকিৎসকেরা। কিন্তু গত ৯ জানুয়ারি থেকে প্রতিদিন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ সন্দেশখালি গ্রামীণ হাসপাতালে ভিড় করছেন জলাতঙ্কের প্রতিষেধক নিতে।

ডেপুটি সিএমওএইচ সন্তোষ রায় এবং স্থানীয় বিধায়ক নিরাপদ সর্দার, পঞ্চায়েত প্রধান মান্তা পাত্রও সকলকে বুঝিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও আতঙ্ক কাটছে না। গ্রামবাসীদের আতঙ্ক কাটাতে বুধবার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে সন্দেশখালি গ্রামীণ হাসপাতালে যান বসিরহাটের সাংসদ ইদ্রিশ আলি। গুজবে কান না দেওয়ার জন্য সকলকে অনুরোধ করা সত্ত্বেও পরিস্থিতি বদলানোর লক্ষণ নেই।

Advertisement

এ দিকে বসিরহাট জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক পুষ্পেন্দু সেনগুপ্ত বুধবারই জানিয়েছিলেন, নতুন করে আর কাউকে প্রতিষেধক দেওয়া হবে না। তবে যাঁরা একটা-দু’টো ডোজ নিয়ে ফেলেছেন, তাঁরা যেন পুরো কোর্স শেষ করেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন