ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে উত্তরবঙ্গে, মৃত দুই

শিলিগুড়ির পরে ডেঙ্গি ছড়াল উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলায়। জ্বর, গা ব্যথা নিয়ে গত মঙ্গলবার থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতি দিন ৩০-৩৫ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। একশোরও বেশি রোগী জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি। এখনও অবধি ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে দুই রোগী মারাও গিয়েছেন। তবে রক্ত পরীক্ষা না হওয়ায়, ডেঙ্গিতেই মৃত্যু হয়েছে কি না নিশ্চিত নন ডাক্তাররা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৪ ০০:৫৬
Share:

শিলিগুড়ির পরে ডেঙ্গি ছড়াল উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলায়। জ্বর, গা ব্যথা নিয়ে গত মঙ্গলবার থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতি দিন ৩০-৩৫ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। একশোরও বেশি রোগী জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি। এখনও অবধি ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে দুই রোগী মারাও গিয়েছেন। তবে রক্ত পরীক্ষা না হওয়ায়, ডেঙ্গিতেই মৃত্যু হয়েছে কি না নিশ্চিত নন ডাক্তাররা।

Advertisement

মালদহ মেডিক্যাল কলেজের সুপার মহম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, শুক্রবার ১০০ জনের রক্ত পরীক্ষা হয়েছে। রিপোর্ট মিলবে আজ, রবিবার। রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে এক যুবকের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলল শনিবার। এ দিন আলিপুরদুয়ার থেকে ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে এক মহিলা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হ’ন।

ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো মশা-বাহিত রোগ দেখা দেয় পুজোর পর। প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। উত্তরবঙ্গে অক্টোবর থেকেই ডেঙ্গি শুরু হয়েছে। শিলিগুড়িতে ৩৮ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে নানা হাসপাতাল, নার্সিং হোমে ভর্তি হ’ন। সেখানে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর খবর না থাকলেও মালদহে সে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তিন দিনে কালিয়াচকের নয়াবস্তির পাঁচ বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের অবশ্য দাবি, এদের মধ্যে দু’জন জ্বরে আক্রান্ত হন। তবে ডেঙ্গিতেই মৃত্যু কি না স্পষ্ট হয়নি, কারণ রক্ত পরীক্ষা হয়নি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ মন্ডল জানান, শিলমপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে আনার পথেই মৃত্যু হয় রিসবা বিবির (৩০)। সাহেব শেখ (৫০)-কে বুধবার মেডিক্যালে ভর্তি করা হলেও, রক্ত পরীক্ষার আগেই মারা যান তিনি।

Advertisement

কালিয়াচকের নয়াবস্তিতে মশা-বাহিত রোগ মারাত্মক ভাবে ছড়িয়েছে। জ্বরে আক্রান্ত ১২ জনের রক্ত পরীক্ষা করে ছ’জনের শরীরে ডেঙ্গি ও আর এক জনের দেহে ম্যালেরিয়ার জীবাণু মিলেছে বলে জানান মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। তিনি বলেন, “নয়াবস্তি গ্রামে মেডিক্যাল ক্যাম্প খোলা হয়েছে। ওই গ্রামে জ্বরে আক্রান্ত সমস্ত রোগীর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।”

চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ার মতো, ডেঙ্গি-আক্রান্ত ওই গ্রামে সমস্ত নর্দমা পরিষ্কার করে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। জেলাশাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও মালদহ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে জ্বরের রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, জানান তিনি। কিন্তু আগেই কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, “সচেতনতা তৈরি করতে গ্রামে গ্রামে প্রচার করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও যদি মানুষ জল জমতে দেন, কী করব?”

রোগীদের চিকিত্‌সায় হাসপাতাল কতটা প্রস্তুত, প্রশ্ন তা নিয়েও। মালদহ মেডিক্যাল কলেজে আর একটি মাত্র রক্ত পরীক্ষার কিট রয়েছে। তাতে আর শ’খানেক রোগীর পরীক্ষা হতে পারে, জানান মেডিক্যাল কলেজের সুপার, মহম্মদ আব্দুল রশিদ।

কালিয়াচক দক্ষিণ মালদহ সংসদ এলাকার অন্তর্গত, যার সাংসদ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের গাফিলতির জন্যই আক্রান্তরা মারা গিয়েছেন। তাঁদের রক্ত পরীক্ষা হয়নি কেন? হাসপাতাল কি করছিল?” এ বিষয়ে তিনি রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবের কাছে জানতে চাইবেন, বলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন