শহরের নার্সিংহোমগুলির পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে ধারাবাহিক অভিযান শুরু করল প্রশাসন। বৃহস্পতিবার কালনা শহরে ঘন্টা দু’য়েকের ওই অভিযানে হাজির ছিলেন মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ এবং মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক (এসিএমওএইচ) শেখ মোসারফ আলি।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহখানেক আগে শহরের বৈদ্যপুর মোড় লাগোয়া একটি নার্সিংহোমে চিকিত্সার গাফিলতিতে এক বধূ মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। তারপরেই তত্পর হয় প্রশাসন। ঘটনার রাতেই জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের নির্দেশে নার্সিংহোমটির অপারেশন থিয়েটার সিল করে দেওয়া হয়। যদিও গত বুধবার কয়েকটি শর্তসাপেক্ষে ওই নার্সিংহোমটির সিল খুলে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ওঠার পরেই মহকুমা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয় শহরের বাকি নার্সিংহোমগুলিও নিয়ম মেনে চালানো হচ্ছে কি না এবং প্যাথলজিকাল ল্যাবগুলি চলছে কি না তা দেখতে হবে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ এসিমওএইচকে সঙ্গে নিয়ে পরিদর্শনে বের হন মহকুমাশাসক। প্রথমে বৈদ্যপুর মোড়ের সামনে পাণ্ডুয়াগামী রাস্তার ধারের একটি নার্সিংহোমে ঢোকেন। সেখানে দীর্ঘক্ষণ নানা নথিপত্র দেখেন। হাসপাতালটি ঘুরেও দেখেন। এরপরে কালনা মহকুমা হাসপাতাল লাগোয়া একটি নার্সিংহোমে যান তাঁরা। দু’টো নাগাদ অভিযান শেষ হয়। দু’টি নার্সিংহোমেই আধিকারিকেরা ওটি, স্টক, ডিসচার্জ, স্টাফ-সহ হাসপাতালের নানা রেজিস্টার খুঁটিয়ে দেখেন। যে সমস্ত নার্স রয়েছেন, তাঁরা প্রশিক্ষিত কি না জানতে চাওয়া হয়। মেডিক্যাল অফিসারের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হয়। এছাড়া কতগুলি শয্যা রয়েছে, আর কত রোগী ভর্তি রয়েছেন তা ঘুরে দেখেন আধিকারিকেরা। এছাড়া আগুন লাগলে বেরোনোর পথ রয়েছে কি না, অপারেশন থিয়েটার তৈরিতে সরকারি নিয়ম যথাযথ ভাবে মানা হয়েছে কি না, দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও দমকলের শংসাপত্র রয়েছে কি না তাও দেখা হয়।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম নার্সিংহোমটিতে তদন্ত চলাকালীন বেশ কিছু ত্রুটি ধরা পড়েছে। তুলনায় দ্বিতীয় নার্সিংহোমটির পরিকাঠামো ভাল। তবে এখনই শাস্তিমূলক কোনও ব্যবস্থা নিতে নারাজ মহকুমা প্রশাসন। মহকুমাশাসক বলেন, “তদন্ত চলাকালীন যে ত্রুটিগুলি ধরা পড়েছে সে ব্যাপারে প্রথমে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে শুধরে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ৯০ দিন পরে ফের অভিযান করা হবে।”