হাসপাতালে স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা। ছবি: তাপস ঘোষ।
একই দিনে সন্তান প্রসবের পরে কয়েক ঘণ্টার তফাতে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে মৃত্যু হল দুই প্রসূতির। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন দু’জন। প্রসবের পরে প্রত্যেকেরই খিঁচুনি হচ্ছিল বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি। সোমবারের এই ঘটনার জেরে ওই রাতে হাসপাতালে এসে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতাদের আত্মীয়-পরিজনেরা। হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়ায়। মঙ্গলবার ঘটনার তদন্তে আসে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
মৃতদের নাম সাহিদা বিবি (২৬) এবং বেলমণি টুডু (২০)। সাহিদা চুঁচুড়ার খাগড়াজোলের বাসিন্দা। বেলমণি থাকতেন পাণ্ডুয়ার শিবরা গ্রামে। অপুষ্টিতে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের অনুমান। সুপার সুভাষ মণ্ডল বলেন, “ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞ দল এসেছিল। তারা সব কিছু খতিয়ে দেখে তদন্ত করছে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের কোনও ঘটনা না ঘটে, তার জন্য হাসপাতালের পক্ষ থেকে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” স্বাস্থ্য দফতরের দলটির নেতৃত্বে থাকা রাজ্য পরিবার কল্যাণ বিভাগের অধিকর্তা শিখা অধিকারী এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে ন’জন প্রসূতির সিজার হয়। তার মধ্যে বিকেলের পরে যে চার জনের অবস্থার অবনতি হয়, তার মধ্যে রয়েছেন সাহিদা বিবি, বেলমণি টুডু, জাহিরা বিবি ও নিতু সাউ। সাহিদাকে ভর্তি করানো হয়েছিল রবিবার। সোমবার তিনি একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। তাঁর মৃত্যু হয় রাত ৮টা নাগাদ। বেলমণি মারা যান রাত দেড়টা নাগাদ। দু’জনের বাড়ির লোকজন হাসপাতালে এসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তবে, তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে কেউ ছিলেন না। গোলমালের আশঙ্কায় পুলিশ মোতায়েন করা হয় হাসপাতালে। তবে, মৃতদের পরিবারের লোকজন চিকিৎসায় গাফিলতি নিয়ে থানা বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। মঙ্গলবার সকালে জাহিরা এবং নিতুকে কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়।
প্রসূতি-মৃত্যুর খবর পেয়ে শিখাদেবীর নেতৃত্বে এ দিন দুপুরে হাসপাতালে আসে স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল। তারা হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, নার্স এবং সুপারের সঙ্গে কথা বলেন।