এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে কোচবিহারে আরও এক রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার কোচবিহার সদর হাসপাতালে ভর্তি সুশীল বর্মনের (৬৫) মৃত্যু হয়। তুফানগঞ্জ মহকুমার ভেলাপেটার বাসিন্দা সুশীলবাবুকে গত শনিবার জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, এইএস বা ‘অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিন্ড্রোম’-এ আক্রান্ত হয়ে সুশীলবাবুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে শুধু জুলাই মাসেই এনসেফ্যালইটিসে ২১ জনের মৃত্যু হল।
পরপর মৃত্যুর ঘটনায় জেলার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মাস দুই আগে এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ শুরু হলেও, এতদিনেও কেন জেলা হাসপাতালে রোগ নির্ণয়ের ব্যবস্থা হল না, তা নিয়ে যেমন বিরোধী দলগুলি প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে, তেমনই মৃত্যুর কারণে শুধু উপসর্গ কেন লেখা থাকবে, তা জানতে চেয়েছেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা।
দিন কয়েক আগে জেলাশাসক জানিয়েছিলেন, সচেতনতা প্রসারের সঙ্গে জেলায় রক্ত পরীক্ষার জন্য প্রচুর কিট চাওয়া হয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী সম্প্রতি জেলা হাসপাতালে গিয়ে পরিকাঠামো দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শীঘ্রই জেলায় টিকাকরণ শুরু হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন। বিজেপির জেলা সম্পাদক নিখিলরঞ্জন দে অভিযোগ করে বলেন, “জেলায় মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে। তবুও প্রশাসনের জরুরি ভিত্তিতে টিকাকরণের প্রক্রিয়াই শুরু হয়নি।” সিপিএম জেলা সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য মহানন্দ সাহার অভিযোগ, “শুধু ব্লিচিং ছড়িয়ে, শুয়োর ধরে সংক্রমণ রোখা যাবে না। এই সামান্য বিষয়টাও প্রশাসনের আধিকারিক কেউ বুঝতে চাইছেন না। ফলে টিকাকরণ, রক্ত পরীক্ষা নিয়ে গড়িমসি হচ্ছে।” শাসক দলের নেতারা অবশ্য এনসেফ্যালাইটিস নিয়ে কেন্দ্রকে দুষেছেন। তৃণমূল জেলা সভাপতি দাবি করেন, “কেন্দ্র সরকার কোচবিহারকে টিকাকরণের তালিকায় রাখেনি। টিকা সরবরাহ হলে মৃত্যু হত না।” মৃত সুশীলবাবুর আত্মীয় নীরোদ বর্মনের প্রশ্ন, “মঙ্গলবার রক্ত নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবারেও রিপোর্ট জানা গেল না। তার আগেই মৃত্যুর কারণে এনসেফ্যলাইটিস উপসর্গ লেখা হল। আসলে কতটা চিকিৎসা হয়েছে, তা নিয়েই আমাদের সন্দেহ রয়েছে।”