ফরাক্কায় ডেঙ্গি, উদাসীন প্রশাসন

মাস খানেক ধরে জ্বরের প্রকোপ ছড়িয়েছে ফরাক্কার অর্জুনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তোফাপুর ও শিবনগরে। এই মহূর্তে ওই দুই গ্রামের অন্তত ১৫ জন আক্রান্তের চিকিৎসা চলছে বিভিন্ন হাসপাতালে। তাঁদের মধ্যে ১১ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবানু ধরা পড়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। অথচ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে হেলদোল নেই খোদ স্বাস্থ্য দফতরেরই। গ্রামবাসীদের অভিযোগটা যে অমূলক নয় সেটা আরও স্পষ্ট হয়ে যায় জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়ায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৪ ০২:০২
Share:

মাস খানেক ধরে জ্বরের প্রকোপ ছড়িয়েছে ফরাক্কার অর্জুনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তোফাপুর ও শিবনগরে। এই মহূর্তে ওই দুই গ্রামের অন্তত ১৫ জন আক্রান্তের চিকিৎসা চলছে বিভিন্ন হাসপাতালে। তাঁদের মধ্যে ১১ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবানু ধরা পড়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। অথচ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে হেলদোল নেই খোদ স্বাস্থ্য দফতরেরই। গ্রামবাসীদের অভিযোগটা যে অমূলক নয় সেটা আরও স্পষ্ট হয়ে যায় জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়ায়। বৃহস্পতিবার সুমিতবাবু বলেন, “এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে ফরাক্কার ব্লক স্বাস্থ্য দফতর থেকে পাঠানো কোনও রিপোর্ট আমার নজরে আসেনি। ওই এলাকায় এত জন কী ভাবে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলেন ও সেখানে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” বিষয়টি নিয়ে ফরাক্কার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক দ্বৈপায়ন মণ্ডলকে একাধিক বার ফোন করা হলেও যোগাযোগ করা যায়নি।

Advertisement

অর্জুনপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক আশিস অধিকারী বলেন, “প্রথমে ভাইরাল ফিভার বলে মনে হয়েছিল। পরে রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়ে। গত দু’দিনে ৬ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। তাঁদের অন্যত্র চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। ৮ অক্টোবর শিবনগরের বাসিন্দা কাজেম শেখ (৩৩) নামে এক যুবকের মৃত্যুও হয়েছে। ওই যুবকের রক্তেও ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল। এই পরিস্থিতি জানিয়ে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে ফরাক্কা ব্লক স্বাস্থ্য দফতরে।”

অর্জুনপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এএনএম কর্মী পারুল সরকার বলেন, “দুই গ্রামে অন্তত ১৫ জন জ্বরে আক্রান্ত। ১১ জনের রক্তেই ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। বাকিদের রক্তের রিপোর্ট এখনও মেলেনি। আক্রান্তদের নাম-সহ রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরে। তবে গ্রামে এখনও পর্যন্ত বিশেষ ক্যাম্প করে আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়নি। সকলকেই অর্জুনপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে অন্যত্র পাঠানো হয়েছে।”

Advertisement

অর্জুনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের বিশাখা মণ্ডল বলেন, “শুধু রিপোর্ট পাঠিয়ে দায় সেরেছে স্বাস্থ্য দফতর। প্রতি সপ্তাহে গ্রাম পঞ্চায়েতে স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে যে বৈঠক হয়। তাতে কিছুই জানান হয়নি। সোমবার পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে এত লোকজনের জ্বরের কারণ জানতে চাওয়া হলে তখন স্বাস্থ্যকর্মীরা ডেঙ্গির কথা জানান। তখনই বিডিওকে জানানো হয়।” ফরাক্কার বিডিও সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, “গ্রামের জঙ্গল পরিষ্কার করতে বলা হয়েছে। কাঁচা ড্রেন রয়েছে সেগুলিতে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হচ্ছে। জ্বরে আক্রান্তদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা ও রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করার ব্যাপারেও স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে কথা বলছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন