বিষ্ণুপুরে শিশু-মৃত্যু, শুরু শুয়োর তাড়ানো

এক শিশুর প্রাণ চলে যাওয়ার পরে টনক নড়ল বিষ্ণুপুর পুরসভার। এক দিকে, বিষ্ণুপুর শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালগঞ্জ এলাকায় মেডিক্যাল টিম পাঠিয়ে জ্বরে আক্রান্তদের রক্তের নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি শুয়োর থেকে দূরে থাকার মাইক-প্রচার শুরু করল স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৪ ০২:২৯
Share:

চলছে শুয়োর ধরা।

এক শিশুর প্রাণ চলে যাওয়ার পরে টনক নড়ল বিষ্ণুপুর পুরসভার।

Advertisement

এক দিকে, বিষ্ণুপুর শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালগঞ্জ এলাকায় মেডিক্যাল টিম পাঠিয়ে জ্বরে আক্রান্তদের রক্তের নমুনা সংগ্রহের পাশাপাশি শুয়োর থেকে দূরে থাকার মাইক-প্রচার শুরু করল স্বাস্থ্য দফতর। অন্য দিকে, এ দিনই বাউরিপাড়া থেকে শুয়োর ধরার কাজও শুরু করল বিষ্ণুপুর পুরসভা। এবং এ সবই হল তিন বছরের শিশু অয়ন কুচলানের মৃত্যুর পরে!

শনিবার রাতে দু’দিনের জ্বরে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় গোপালগঞ্জের বাসিন্দা অয়ন। হাসপাতাল থেকে বলা হয়, অয়ন ‘অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস’-এ আক্রান্ত হয়েই মারা গিয়েছে। রবিবার সকালে এই খবর জানার পরেই এলাকায় শুয়োরের অবাধ বিচরণ এবং নর্দমার আবর্জনা পরিষ্কার না হওয়া নিয়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন শহরের পুরপ্রধান তথা মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তাঁকে ঘিরে ধরে কাছে শুয়োর তাড়ানো ও আবর্জনা সাফাইয়ের দাবি তোলেন এলাকাবাসী। সেই দাবি মেনে বসতি এলাকায় শুয়োর ঢোকা আটকানোর কাজ শুরু হয়েছে বলে সোমবার জানান শ্যামবাবু। তিনি বলেন, “বিষ্ণুপুর শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাউরিপাড়া এলাকায় বেশি শুয়োর রয়েছে। ওই শুয়োরগুলি জ্বর আক্রান্ত এলাকা গোপালগঞ্জেও ঢুকে পড়ে। ফলে, ওখান থেকেই অভিযান শুরু করা হল। এই অভিযান শহরের অন্যত্রও চলবে।”

Advertisement

রক্তের নমুনা নেওয়া হচ্ছে।

বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুরেশ দাস জানান, এ দিন ওই এলাকায় সাত সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছিল। জ্বরে আক্রান্ত কয়েক জনের রক্তের নমুনা ওখান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। শহরের মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য মাইকে প্রচারও চালানো হচ্ছে। নর্দমায় ডিডিটি স্প্রে করতে পুরসভাকে বলা হয়েছে। শিশু-মৃত্যুর পরে শুয়োর ধরতে বিষ্ণুপুর পুরসভা নড়েচড়ে বসলেও বাঁকুড়া পুরসভার তরফে এখনও তেমন কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি, যা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে পুরবাসীর মধ্যে। বাঁকুড়ার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা ইতিমধ্যেই পুরসভায় স্মারকলিপি দিয়ে শুয়োর ধরার দাবি জানিয়েছেন। এমনকী, বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আশেপাশেও অবাধে শুয়োর ঘুরতে দেখা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত বছর জেলায় মোট ২১ জন জ্বরে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে জাপানি এনসেফ্যালাইটিস ধরা পড়েছিল। তাঁদের মধ্যে শুধুমাত্র বাঁকুড়া পুর-এলাকা থেকেই ৬ জন এমন রোগীর সন্ধান মিলেছিল বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে। বাঁকুড়ার পুরপ্রধান শম্পা দরিপার অবশ্য দাবি, “জাপানি এনসেফ্যালাইটিস রুখতে শুয়োর প্রতিপালনকারীদের নামের তালিকা ধরে ধরে আমরা সাবধান করেছি। অবিলম্বে এই পশুদের বসতি এলাকা থেকে দূরে রাখার নির্দেশ দিয়েছি।” এর পরেও কেউ নির্দেশ না মানলে পুরসভা কড়া ব্যবস্থা নেবে বলে হুঁশিয়ারি পুরপ্রধানের।

—নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন