ভাঙনখালি

বহু দিন তালাবন্ধই পড়ে থাকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র

সকাল সাড়ে ১০টা। একটি রিকশায় গুরুতর এক রোগীকে নিয়ে প্রাণপণে ছুটছেন তার পরিজনেরা। রিকশায় বসে রোগীকে সামলাতে ব্যস্ত দুই মহিলা। এক যুবক প্রাণপণে রিকশা চালাচ্ছে। আরেক যুবক পিছন থেকে রিকশা ঠেলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাসন্তী শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৪ ০১:৩৬
Share:

সকাল সাড়ে ১০টা। একটি রিকশায় গুরুতর এক রোগীকে নিয়ে প্রাণপণে ছুটছেন তার পরিজনেরা। রিকশায় বসে রোগীকে সামলাতে ব্যস্ত দুই মহিলা। এক যুবক প্রাণপণে রিকশা চালাচ্ছে। আরেক যুবক পিছন থেকে রিকশা ঠেলছে। বাসন্তীর ভাঙনখালি গ্রামের ওই রোগীর পরিবার বাসন্তীর কাঁঠালবেড়িয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখেন গেটে তালাবন্ধ। অনেক ডাকাডাকি করেও কাউকে না পেয়ে নিরুপায় হয়ে ওই পরিবার রোগীকে নিয়ে ছুটলেন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে।

Advertisement

এমন অভিজ্ঞতা শুধু ওই রোগীর পরিবারের নয়, বাসন্তীর ভাঙনখালি, খেড়িয়া, কাঁঠালবেড়িয়া, পুরাতন ডকঘাট-সহ আশেপাশের বহু গ্রামের মানুষের। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জরুরি সব পরিষেবা বন্ধ।

বহির্বিভাগ মাঝে মাঝে খোলা থাকলেও অধিকাংশ সময় বন্ধই থাকে। ৩০ শয্যাবিশিষ্ট ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক সময়ে রোগী ভর্তি থাকলেও বর্তমানে পরিকাঠামোগত ও পরিষেবার অভাবের কারণে রোগী ভর্তি বন্ধ। আগে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসব করানো হলেও এখন তা সম্পূর্ণ বন্ধ বলে অভিযোগ। কাঠালবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রাজা গাজি, সালমা গাজি, রজিমা মণ্ডলরা বলেন, “আগে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত চিকিত্‌সকেরা থাকতেন। আগে রাত-বিরেতে কোনও মায়ের প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে তাকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিত্‌সা হত। এখন কোনও রোগীকে নিয়ে যেতে হয় বাসন্তী ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অথবা ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। যা সময় সাপেক্ষ। চিকিত্‌সক না থাকায় প্রায়ই বন্ধ থাকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র।”

Advertisement

ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে খবর, আগে ২ জন চিকিত্‌সক ছিলেন। তার মধ্যে একজনকে তুলে নেওয়া হয়। নার্স মাত্র এক জন। অস্থায়ী কর্মীদের দিয়ে গ্রুপ ডি-র কাজ করানো হত। যেখানে চিকিত্‌সক, নার্সের সংখ্যা অপ্রতুল, সেখানে জরুরি পরিষেবা কী ভাবে দেওয়া সম্ভব। ওই চিকিত্‌সক বা নার্সের একজন অসুস্থ হয়ে পড়লে বহির্বিভাগ চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে।

বাসন্তী পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি মাজেদ মোল্লা বলেন, “ওই এলাকায় ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবাগত সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এ নিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে আলোচনা করে কী ভাবে পরিষেবার উন্নতি ঘটানো যায়, তার সব রকম ব্যবস্থা করা হবে।”

ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রামকৃষ্ণ ঘোষ সমস্যার কথা মেনে নিয়ে বলেন, “মাত্র ১ জন চিকিত্‌সক দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। তার মধ্যে সব রকম পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। সমস্যার কথা জেলাতে জানানো হয়েছে।” দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম দাস মালাকারের কথায়, “বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। মানুষকে কী ভাবে সব রকম পরিষেবা দেওয়া যায়, দ্রুত তার ব্যবস্থা করা হবে।”

খাবার খেয়ে অসুস্থ ৮ জন

খাবার খাওয়ার পর কয়েকজন শিশু অসুস্থ বোধ করার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে উত্তেজনা ছড়ায় শালবনি থানার পিড়রাকুলিতে। স্থানীয় আইসিডিএস কেন্দ্রের খাবার খেয়ে ৭- ৮ জন শিশু অসুস্থ বোধ করে। তাদের স্থানীয় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে শিশুদের পরিবারের লোকেরা আইসিডিএস কেন্দ্রে ভিড় করেন। এলাকায় আসেন জেলা পরিষদ সদস্য সনৎ মাহাতোও। প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবশ্য সকলেই বাড়ি ফিরে যায়। সনৎবাবু বলেন, “স্থানীয় আইসিডিএসের খাবার খাওয়ার পর কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার পরই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে সকলকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মনে হচ্ছে, চালের মানটা ঠিক ছিল না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন