ইবোলা

মালি-তে এক খুদের মৃত্যু, হু-র তথ্য বাড়াচ্ছে আশঙ্কা

মা-বাবা দু’জনেই মারা গিয়েছিলেন ইবোলায়। তার পর বেশি দিন কাটল না। একই রোগে প্রাণ গেল ২ বছরের খুদেরও। মাত্র দু’দিন আগেই মালির এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। প্রশাসন ঘোষণা করেছিল, মালির প্রথম ইবোলা-আক্রান্ত ওই খুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। এখন প্রশাসনের লক্ষ্য একটাই। শিশুটির সংস্পর্শে যাঁরা যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করে আগামী ২১ দিন নজরদারি চালানো। ইতিমধ্যেই এ রকম ৪০ জনকে আলাদা করে (কোয়ারেন্টাইন) দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৫৮
Share:

মা-বাবা দু’জনেই মারা গিয়েছিলেন ইবোলায়। তার পর বেশি দিন কাটল না। একই রোগে প্রাণ গেল ২ বছরের খুদেরও। মাত্র দু’দিন আগেই মালির এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। প্রশাসন ঘোষণা করেছিল, মালির প্রথম ইবোলা-আক্রান্ত ওই খুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। এখন প্রশাসনের লক্ষ্য একটাই। শিশুটির সংস্পর্শে যাঁরা যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করে আগামী ২১ দিন নজরদারি চালানো। ইতিমধ্যেই এ রকম ৪০ জনকে আলাদা করে (কোয়ারেন্টাইন) দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

প্রশাসন জানিয়েছে, মঙ্গলবার ঠাকুমার সঙ্গে গিনি থেকে মালিতে এসেছিল অসুস্থ শিশুটি। বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হয় সে। তখনই জানা যায় তার ইবোলা হয়েছে। প্রশাসনের ধারণা, মঙ্গল থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে চল্লিশেরও বেশি মানুষের সংস্পর্শে এসেছিল শিশুটি। ফলে তাদেরও সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। তা এড়াতেই নজরদারি শুরু হয়েছে। শিশুটির ঠাকুমাকেও কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ১০ জন স্বাস্থ্যকর্মী যাঁরা শিশুটির চিকিৎসা করেছিলেন, তাঁদের উপরও নজরদারি চলছে। হু জানিয়েছে, মালির পরিস্থিতি যাতে গিনি, সিয়েরা লিওন কিংবা লাইবেরিয়ার মতো না হয়, সে জন্য খুব দ্রুত সেখানে আরও কিছু বিশেষজ্ঞ পাঠানো হবে।

নজরদারি বাড়ানো হয়েছে নিউ ইয়র্কেও। তবে বাসিন্দাদের অযথা আতঙ্কিত না হতে ফের অনুরোধ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এ দিন তিনি বলেন, “এই রোগকে হারানো সম্ভব। আমরা হারাবই। কিন্তু আপনাদের শুধু চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।” তবে এ সবের পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, “আমাদের বিজ্ঞানের উপর ভরসা রাখতে হবে, অকারণ আতঙ্কের উপর নয়।” ভয়ের পরিবেশ দূর করতে গত কালও বার্তা দিয়েছিলেন ওবামা। সরাসরি কিছু না বললেও নিনা ফ্যাম নামে ডালাসের এক নার্সকে আলিঙ্গন করেন তিনি। বেশ কিছু দিন আগে নিনার ইবোলা ধরা পড়েছিল। এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। তাঁর বা তাঁর মতো মানুষদের নিয়ে আমজনতার আশঙ্কা কাটাতেই গত কাল নিনাকে আলিঙ্গন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

Advertisement

তবে সতর্কতার প্রশ্নে যে কোনও ধরনের সমঝোতা করা হচ্ছে না, সেটা বোঝাতে ওবামা ফের মনে করান, পশ্চিম আফ্রিকার ইবোলা-আক্রান্ত তিন দেশ থেকে যাঁরা মার্কিন মুলুকে আসছেন, তাঁদের প্রত্যেকের উপরই ২১ দিন নজরদারি চালানো হবে। প্রয়োজনে তাঁদের কোয়ারেন্টাইনেও পাঠানো হতে পারে। যেমন এ দিন নিউ জার্সির এক স্বাস্থ্যকর্মীকে পাঠানো হয়েছে। তিনিও গিনি থেকে ইবোলা-আক্রান্তের চিকিৎসা করে সদ্যই নিউ জার্সি ফিরেছিলেন।

তবে এ ভাবে শুধু নজরদারি চালিয়ে সংক্রমণ কতটা রোখা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষত এ দিন হু যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তার পর উদ্বেগ আরও বেড়েছে। হু জানিয়েছে, ইবোলায় সব মিলিয়ে ইতিমধ্যেই ৪,৯৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের আরও বিশ্লেষণ, অনেকেই আক্রান্তদের বাড়িতে রাখছেন। তাতে যেমন রোগীর মৃত্যু হচ্ছে, তেমনই দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। থামাতে ভরসা শুধু প্রতিষেধক। তা যাতে দ্রুত ব্যবহার করা যায়, সে জন্য বিভিন্ন গবেষণাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষার গতি বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে ইবোলা রুখতে যেটি সব চেয়ে কাজে দেবে, সেটিকেই ২০১৫ সালের মাঝামাঝির মধ্যে পশ্চিম আফ্রিকার আক্রান্ত দেশগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে হু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন