ডায়াবেটিস নিয়ে একটা স্তরের মধ্যে সচেতনতা বাড়লেও দেশের ২৫ শতাংশ মানুষ এই রোগের নামটাই শোনেননি। অথচ প্রতি ৮ সেকেন্ডে ১ জনের মৃত্যু হয় এই রোগে। কলকাতাও তার ব্যতিক্রম নয়। এ শহরের বিভিন্ন চিকিৎসকদের নিয়ে তৈরি একটি ফোরামের সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, কলকাতায় প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ১০ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলেও এখানকার সব শ্রেণির মানুষের কাছে এই রোগের চিকিৎসা পৌঁছয়নি।
দুঃস্থদের কাছে চিকিৎসা পৌঁছতে বেশ কিছু চিকিৎসকদের নিয়ে তৈরি ‘কলকাতা ডায়াবেটিস অ্যান্ড এন্ডোক্রিনোলজি ফোরাম’ ডায়াবেটিসের উপরে নতুন প্রশিক্ষণ চালু করেছে। পাবলিক হেল্থ ফাউন্ডেশন ও কলকাতা পুরসভার যৌথ উদ্যোগে কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ২০ জন করে চিকিৎসককে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষিত হওয়ার পরে তাঁরা যে ওয়ার্ডে চিকিৎসা করেন, সেখানকার গরিব মানুষেরা কম খরচে বা বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন। চিকিৎসক তীর্থঙ্কর চৌধুরী বলেন, “এ বছরের এপ্রিল থেকে প্রশিক্ষণ কর্মসূ্চি চালু করেছি। আশা করছি, এর ফলে যাঁরা অর্থাভাবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে পৌঁছতে পারেন না, তাঁরা উপকৃত হবেন।”
চিকিৎসক শুভঙ্কর চৌধুরী জানান, দরিদ্র শ্রেণির কাছে চিকিৎসা পৌঁছনোর পাশাপাশি বাচ্চাদের জীবনযাত্রায় বদল আনাও জরুরি। ডায়াবেটিসের থাবা থেকে রক্ষা পেতে ছোট থেকেই খাদ্যাভ্যাস বদলানোর পাশাপাশি কায়িক পরিশ্রম করা জরুরি। কিন্তু দু’টি জিনিসই বর্তমানে মেনে না চলায় বাচ্চাদের মধ্যে ওবেসিটি বা স্থূলতার সমস্যা বাড়ছে যা ভবিষ্যতে ডায়াবেটিসের আশঙ্কা বাড়ায়। তিনি আরও জানান, সম্প্রতি কলকাতার বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের বাচ্চাদের উপর করা একটি সমীক্ষার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, স্কুলগুলির ১০-১৫ শতাংশ বাচ্চারই ওবেসিটি রয়েছে। ফলে কম বয়সে এদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অন্য বাচ্চাদের থেকে অনেক বেশি বলেই মনে করেন তিনি।
রবিবার এই ফোরামের এক আলোচনাসভায় ডায়াবেটিস রোগের উপসর্গ, তার প্রতিরোধ থেকে শুরু করে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বিষয়ক নানা বক্তব্য রাখেন দেশ-বিদেশের ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞরা। আলোচনায় উঠে আসে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। এই ফোরাম কলকাতার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের পাশাপাশি জরুরি পরিষেবা দেওয়ারও পরিকল্পনা করছে বলে জানা গিয়েছে।