প্রতি বছর গ্রীষ্মকালে রাজ্যে রক্তের জোগান এমনিতেই কম থাকে। তার উপর সামনে লোকসভা নির্বাচন এসে যাওয়ায় রক্তদান শিবিরগুলি প্রায় বন্ধের মুখে। তাতেই ঘটেছে বিপত্তি। সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালেই রক্তের ভাঁড়ারে টান। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সরকারি হাসপাতালগুলিতে রক্তের জোগান এখন প্রায় অর্ধেকে এসে দাঁড়িয়েছে।
রক্তদান শিবির আয়োজককারী এক কর্তা জানান, শীতকালেই শিবির বেশি হয়। গরমে সেই সংখ্যা এমনিই ২০ শতাংশ কমে যায়। ভোটের জন্য তা ৪০-৫০ শতাংশ কমে গিয়েছে।” তাঁর ব্যাখ্যা, রাজনৈতিক দলগুলিই সাধারণত শিবিরের আয়োজক। কিন্তু এই সময় ভোটের কাজে তাঁরা ব্যস্ত থাকায় রক্তদান শিবিরগুলি বন্ধের মুখে।
আগামী এক-দু’মাস শিবির হবে না ধরে নিয়েই রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠান-সহ কিছু সরকারি হাসপাতাল (এসএসকেএম, এনআরএস) রক্তের ওই সঙ্কট দূর করার জন্য একটি ব্যবস্থা চালু করেছে। কী এই ব্যবস্থা?
কোনও রোগীর রক্তের প্রয়োজন হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রক্ত দিচ্ছেন। তবে ওই রোগীর পরিবারের যে কোনও এক জনের কাছ থেকে এক ইউনিট রক্ত সংগ্রহও করে রাখছেন। রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বামী উজ্জ্বলানন্দ বলেন, “রক্তের আকাল হলেই আমরা এই ব্যবস্থা চালু করি। তাতে সমস্যা মিটে যায়।” তিনি আরও বলেন,“আমাদের ভাঁড়ারে প্রায় ৩২ ইউনিট রক্ত মজুত রয়েছে। কিন্তু আগামী দু’মাস রক্তের জোগান কমবে বলেই ওই ব্যবস্থা।”
তবে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া বেশির ভাগ রাজ্যেই এখন রক্তদান শিবির প্রায় তুলে দেওয়া হচ্ছে। ভিন্ রাজ্যের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলির কর্তৃপক্ষ মনে করেন, রক্তদান শিবির আয়োজন করে যা রক্ত পাওয়া যায়, সংরক্ষণের অভাবে তার অনেকটা নষ্ট হয়ে যায়। তার চাইতে ভাল হাসপাতালগুলির কাছে রক্তদাতার তালিকা প্রস্তুত রাখা বেশি যুক্তিযুক্ত। রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অনিরুদ্ধ কর বলেন, “চেন্নাই কিংবা বেঙ্গালুরুর বিভিন্ন হাসপাতালে বহু আগে থেকেই এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। সেখানে হাসপাতালগুলিতে রক্তদাতার তালিকা মজুত থাকে। কোন দিন কত রক্ত লাগবে তা বুঝে দাতাদের ডেকে ওই রক্ত সংগ্রহ করা হয়।”