অত্যাবশ্যক তালিকায় না-থাকা ওষুধের দামের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ার ক্ষমতা এ বার নিয়ন্ত্রক এনপিপিএ-র কাছ থেকে ফিরিয়ে নিল কেন্দ্র। তবে গত জুলাইয়ে এ ধরনের যে-১০৮টি ওষুধের দামের ঊর্ধ্বসীমা তারা স্থির করে দিয়েছিল, আপাতত তা বহাল থাকছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মার্কিন সফর শুরুর ঠিক আগে তাঁর সরকারের এই সিদ্ধান্তকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে।
ভারতে ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রক এন পি পি এ (ন্যাশনাল ফার্মাসিউ -টিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি) জানিয়েছে, এই নির্দেশ এসেছে সার ও রাসায়নিক মন্ত্রকের অধীনে থাকা ওষুধ সংক্রান্ত দফতরের কাছ থেকে। ওষুধের দর নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে যে-নির্দেশিকা এনপিপিএ-র কাছে ছিল, তার একটি অংশ অনুযায়ী, কোনও ওষুধ অত্যাবশ্যক তালিকায় না-থাকলেও, প্রয়োজন বুঝে তার সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দিতে পারত তারা। কিন্তু সেই ক্ষমতা এ বার ফিরিয়ে নিল কেন্দ্র।
২০১৩ সালে অপরিহার্য ৩৪৮টি ওষুধকে মূল্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার আওতায় আনার কথা ঘোষণা করা হয়। গত সপ্তাহে এই তালিকায় আরও ৩৬টি ওষুধের নাম যোগ করেছে মোদী-সরকারও। কিন্তু এ ভাবে দাম বাঁধায় স্বাভাবিক ভাবেই অখুশি ওষুধ শিল্প। তাদের দাবি, এর ফলে মুনাফা কমবে। টান পড়বে ওষুধ তৈরির গবেষণায়। তার উপর আবার গত জুলাইয়ে এমন ১০৮টি ওষুধের সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দিয়েছিল এনপিপিএ, যেগুলি অত্যাবশ্যক তালিকায় ছিল না। তখনও অনেকের আশঙ্কা ছিল, এতে ধাক্কা খাবে র্যানব্যাক্সি, ফাইজার, অ্যাবটের মতো বিভিন্ন সংস্থার মুনাফা। বিশেষত যেখানে ভারতে ওষুধের দাম এমনিতেই বিশ্বের অন্য অনেক দেশের চেয়ে কম।
ফলে এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের এই ক্ষমতা ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তার উপর তা বাড়তি তাৎপর্যের কারণ, এই ওষুধ নিয়েই সম্প্রতি আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত হয়েছিল ভারতের। ওবামার দেশের অভিযোগ ছিল, এ বিষয়ে ভারতের বাণিজ্য নীতি এবং মেধা-স্বত্ব আইন আঁটোসাঁটো নয়। আর কেন্দ্র এই দাম বেঁধে দেওয়ার ক্ষমতা ফিরিয়ে নিল তখন, যখন সেই মার্কিন মুলুকেই সফর শুরু করতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী।