সরকারি ডাক্তারদের বাঁধছে বারাসত-মডেল

বিভিন্ন বিভাগের রোগীর জন্য বিভিন্ন রঙের কার্ড। সন্ধের রাউন্ড শেষে ডাক্তারবাবু হাসপাতালের নির্দিষ্ট জায়গায় রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করলে (হাসপাতালের পরিভাষায় পেশেন্ট-পার্টি মিট) সেই কার্ডের পিছনে তাঁকে দিয়ে সই করিয়ে নেবেন পরিজনেরা। ডাক্তারবাবু সরকারি নির্দেশ মেনে তাঁর বিভাগে নিয়মিত রাউন্ড দিচ্ছেন কি না এবং রোগীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করছেন কি না, তা নজরদারির জন্যই এই লিখিত প্রমাণের ব্যবস্থা।

Advertisement

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৪ ০২:০১
Share:

বিভিন্ন বিভাগের রোগীর জন্য বিভিন্ন রঙের কার্ড। সন্ধের রাউন্ড শেষে ডাক্তারবাবু হাসপাতালের নির্দিষ্ট জায়গায় রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করলে (হাসপাতালের পরিভাষায় পেশেন্ট-পার্টি মিট) সেই কার্ডের পিছনে তাঁকে দিয়ে সই করিয়ে নেবেন পরিজনেরা। ডাক্তারবাবু সরকারি নির্দেশ মেনে তাঁর বিভাগে নিয়মিত রাউন্ড দিচ্ছেন কি না এবং রোগীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করছেন কি না, তা নজরদারির জন্যই এই লিখিত প্রমাণের ব্যবস্থা। পরপর কয়েক দিন কার্ডে সই না থাকলেই ওই চিকিৎসকের জবাবদিহি চাইতে পারবেন কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে তুলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া যাবে।

Advertisement

বারাসত হাসপাতালে দিন ২০ আগে শুরু হওয়া এই পদ্ধতিকে গোটা রাজ্যে সরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রে ‘মডেল’ হিসেবে নিতে চলেছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য-অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীর কথায়, “টানা তিন মাস এই ব্যবস্থার ফলাফল দেখা হবে। যদি সাফল্য একই রকম থাকে তা হলে প্রথমে প্রত্যেকটি জেলা হাসপাতাল এবং পরে সব মেডিক্যাল কলেজে এই বারাসত-মডেল চালু হবে।”

৩৫-৪০ বছর আগে কলকাতার সব মেডিক্যাল কলেজে সন্ধ্যার পরে চিকিৎসকের সঙ্গে রোগী বাড়ির লোকের দেখা করা ও কথা বলার চল ছিল। সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে সেই ব্যবস্থা লাটে ওঠে। বছর দু’য়েক আগে পুরনো সেই নিয়ম ফের চালু করতে সরকারি নির্দেশ জারি হয়। তা সত্ত্বেও প্রায় কোনও সরকারি হাসপাতালেই সিনিয়র চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সন্ধ্যায় নিয়মিত ওয়ার্ডে রাউন্ড দেওয়া, রোগীর বাড়ির লোকের সঙ্গে দেখা করার মতো জরুরি কাজ করাতে পারেনি স্বাস্থ্য দফতর। এসএসকেএম, আর জি কর, এম আর বাঙুর, ন্যাশনাল মেডিক্যালের কর্তৃপক্ষেরা জানান, বিকেল চারটের পরে কোনও সিনিয়র ডাক্তারকে হাসপাতালের তল্লাটে দেখা যায় না। তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সকাল সাড়ে ন’টায় হাসপাতালে এসে এর বেশি সময় দেওয়া যাবে না।

Advertisement

বিভিন্ন হাসপাতালে প্রায় প্রতি দিন একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। তাতে কোথাও রোগীর বাড়ির লোক বলছেন, তাঁরা সিনিয়র চিকিৎসকের দেখাই পাচ্ছেন না, পেলেও তিনি দুর্ব্যবহার করছেন, রোগীর ঠিক কী হয়েছে তাঁরা জানতে পারছেন না। বারাসতের সুপার সুপ্রিয় মিত্রের দাবি, এই ব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর। কারণ, কিছু দিন আগে পর্যন্তও তাঁর কাছে সপ্তাহে অন্তত চার-পাঁচটি অভিযোগ আসত ডাক্তার দেখা করছেন না বলে। কিন্তু গত ২০ দিনে একটি অভিযোগও আসেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন