এ বার ডেঙ্গির জীবাণু মিলল হলদিয়া শহরের চকতাড়োয়ানের বাসিন্দা সাড়ে তিন বছরের শিশু সুপ্রভা মোহান্তির রক্তে। গত ২২ জুলাই থেকে সুপ্রভা অসুস্থ হলেও রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট মিলেছে সোমবার। সুপ্রভার বাবা বারিদবরণ মোহান্তি কংগ্রেসের হলদিয়া শহর সভাপতি। তিনি মঙ্গলবার পুরসভার কাছে লিখিতভাবে মেয়ের অসুখের কথা জানিয়ে পুর-এলাকায় মশার প্রাদুর্ভাব রুখতে জরুরি পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন।
বারিদবরণবাবু এ দিন বলেন, “বিভিন্ন জেলায় মশাবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। হলদিয়া পুর-এলাকাতেও এর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। কিন্তু পুরসভা নিষ্ক্রিয়। আমার শিশুকন্যা ডেঙ্গি আক্রান্ত। পরিবারের সবাই এ নিয়ে আতঙ্কিত। একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে আমি চাই না, অন্য কেউ এই রোগের প্রকোপে পড়ুক। তাই ওই আবেদন জানিয়েছি।”
তাঁর যুক্তি, এখনই ব্যবস্থা না-নিলে রোগ ছড়াবে। পরে তা নিয়ন্ত্রণ দুঃসাধ্য হবে। হলদিয়া পুরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর শুভশ্রী সামন্ত বলেন, “এখন মশা দূর করতে বাড়তি বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। তা পুরপ্রধানকে জানিয়েছি। ওয়ার্ড কমিটির পক্ষ থেকে বাড়িতে বাড়িতে সতর্ক করায় উদ্যোগী হয়েছি। ওই পরিবার যাতে সরকারি চিকিৎসা পান, তা-ও দেখা হচ্ছে।” পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, “সারা বছরই পুরসভার পক্ষ থেকে জীবাণু ও মশা নিধনে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বর্ষাতেও নেওয়া হচ্ছে। ওই শিশু ডেঙ্গি আক্রান্ত, তা জানার পরেই পুরস্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁদের বাড়ি যান।” তিনি আশ্বাস দেন, প্রয়োজনে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে মশা মারতে উদ্যোগী হবে পুরসভা।
পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকারি নির্দেশিকা মেনে জেলা জুড়ে সতর্কতামূলক প্রচার চলছে। পঞ্চায়েত, ব্লক প্রশাসন, আশাকর্মীদের সেই প্রচারে সামিল করা হয়েছে। লিফলেট বিলি করা হচ্ছে।” তাঁর দাবি, ব্লক, মহকুমা ও জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গির চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। জেলা হাসপাতালে রয়েছে রক্তপরীক্ষার ব্যবস্থা। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, যে এলাকায় এমন রোগ ধরা পড়ছে সেই এলাকায় সামগ্রিক পরিকল্পনায় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে।
সুপ্রভার পরিবার সূত্রে খবর, বেশ কিছু দিন ধরেই জ্বরে ভুগছিল সুপ্রভা। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে ওষুধ খাওয়ার ছ’দিন পর জ্বর কমে গেলেও ১ অগস্ট ফের কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। শুরু হয় সারা শরীরে যন্ত্রণা, গা-বমি ভাব, খিদে না-থাকা ইত্যাদি। উপসর্গ দেখে ডেঙ্গি সন্দেহ হওয়ায়, স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ওই দিনই তার রক্ত পরীক্ষা করা হয়। কলকাতার একটি বেসরকারি পলিক্লিনিক থেকে দেওয়া রিপোর্টে ডেঙ্গির জীবাণু থাকার কথা বলা হয়।