৯ সিসিইউ চালু হবে উত্তরবঙ্গে

উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবার পরিকাঠামো গড়তে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। আগামী বছরের মাঝামাঝির মধ্যে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন হাসপাতালে আরও অন্তত ৯টি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) চালু করতে চাইছে তারা। রবিবার এ কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিষয়ে রাজ্যের মাল্টি ডিসিপ্লিনারি অ্যাডভাইসরি গ্রুপের চেয়ারম্যান সুব্রত মৈত্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৪ ০২:২৪
Share:

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, সুপার ও চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন মাল্টি ডিসিপ্লিনারি গ্রুপের সদস্যরা।

উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবার পরিকাঠামো গড়তে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। আগামী বছরের মাঝামাঝির মধ্যে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন হাসপাতালে আরও অন্তত ৯টি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) চালু করতে চাইছে তারা। রবিবার এ কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিষয়ে রাজ্যের মাল্টি ডিসিপ্লিনারি অ্যাডভাইসরি গ্রুপের চেয়ারম্যান সুব্রত মৈত্র। এ দিন ৮ সদস্যের ওই দল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। বিভিন্ন হাসপাতালে সিসিইউ পরিষেবা চালুর পাশাপাশি দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে ডায়ালিসিস পরিষেবা চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

সুব্রতবাবু বলেন, “চিকিৎসার জন্য বাসিন্দাদের ভেলোর, কলকাতা যেতে হয়। কিন্তু এই পরিষেবা পেতে বাসিন্দাদের যাতে কথায় কথায় বাইরে যেতে না হয়, সে জন্য দার্জিলিং জেলা হাসপাতাল, জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল, বালুরঘাট হাসপাতাল ও কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালে সিসিইউ চালু হয়েছে। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে উত্তরবঙ্গে সব মিলিয়ে ১২-১৪টি হাসপাতালে ওই পরিষেবা চালু করা হবে। জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং এবং কালিম্পং হাসপাতালে ডায়ালিসিস পরিষেবাও চালু করা হচ্ছে।” তিনি জানান, উত্তরবঙ্গে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবার পরিকাঠামো গড়ে তুলতে উদ্যোগী স্বাস্থ্য দফতর। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিওরোসার্জারি ইউনিট এবং কার্ডিও থোরাসিক ইউনিট খোলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন। জরুরি বিভাগে চালু করা হবে ২০ শয্যার ‘অবজার্ভেশন ওয়ার্ড’। মেডিক্যাল কাউন্সিলর অব ইন্ডিয়া নানা মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালগুলিতে এ ধরনের অবজারভেশন ওয়ার্ড খুলতে সুপারিশ করেছে। মাল্টি ডিসিপ্লিনারি অ্যাডভাইজরি গ্রুপের সদস্যরাও চান ওই পরিকাঠামো গড়ে তুলতে। এ দিন জরুরি বিভাগে ওই ওয়ার্ড খোলার জায়গায় পরিদর্শন করেন তাঁরা। কার্ডিও থোরাসিক ইউনিট না থাকার জন্য রোগীদের চিকিৎসা করাতে বাসিন্দাদের অনেকেই দক্ষিণ ভারতে যান। এখানে এ ধরনের বিভাগ চালু হলে বাসিন্দারা উপকৃত হবেন বলে চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন।

পরিদর্শক দল সূত্রেই জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি হাসপাতালে খুব শীঘ্রই ১২ শয্যার সিসিইউ চালু হতে চলেছে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে কার্শিয়াঙে চালু হবে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ)। কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালে, দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে সিসিইউ-তে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হবে। আগামী বছরের মাঝামাঝি দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে ডায়ালিসিস ইউনিট চালু হবে। আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে ১২টি শয্যার সিসিইউ চালু করা হবে কালিম্পং হাসপাতালে। দেখা গিয়েছে, ওই এলাকায় কিডনির অসুখে আক্রান্ত হন অনেকেই। সে জন্য ওই হাসপাতালে ডায়ালিসিস ইউনিট খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রম্ভিতে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। জাতীয় সড়কের ধারে ওই এলাকায় দুর্ঘটনাগ্রস্ত মানুষদের প্রাথমিক চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার মতো একটি ট্রমা সেন্টার খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Advertisement

আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে, আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে, দিনহাটা এবং মাথাভাঙা হাসপাতালে খোলা হবে সিসিইউ। রায়গঞ্জ এবং ইসলামপুর হাসপাতালেও সিসিইউ পরিষেবা চালু করা হবে। জলপাইগুড়ি হাসপাতালে সিসিইউ-র শয্যা সংখা বাড়ানো হবে। ওই হাসপাতালে বয়স্কদের জন্য জেরিয়াট্রিক ইউনিট চালু করা হবে। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সিসিইউ-র শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে ৩৬টি করা হচ্ছে। জায়গাও চিহ্নিত হয়েছে। তার মধ্যে ১২টি শয্যা নিয়ে গড়ে তোলা হবে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট বা (এইচডিইউ)। বর্তমানে সিসিইউতে ১২টি শয্যা রয়েছে। এই দিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার জানিয়েছেন যে, ইতিমধ্যেই ট্রমা সেন্টার তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। ওই প্রকল্পে আপাতত সরঞ্জাম কেনা ও পরবর্তীতে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ হলেই তা চালু করা সম্ভব হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন