বাড়ির দরজার কাছে এসে দাঁড়ালেন। চাবি বের করতে হল না। পকেট থেকে বেরোল স্মার্টফোন। খুলে গেল দরজা।
ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই জ্বলে উঠল আলো। এ বারও কোনও সুইচ অন করতে হল না!
এসি চালাতেও হাতড়াতে হল না রিমোট। বাড়ি ঢোকার আগেই চালু হয়ে গিয়েছে সেটা।
এতটা পড়ে নিশ্চয়ই ভাবছেন, এ কোনও কল্পবিজ্ঞানের গল্প। আজ্ঞে না, এ একেবারে ঘোর বাস্তব। ২০১৭ সালে কয়েকটি গ্যাজেট আর স্মার্টফোনের দৌলতে নিজের বাড়িকেই পালটে ফেলতে পারবেন ‘জেমস বন্ড’ ছবির সেটে।
পোশাকি ভাষায় এ হল স্মার্টহোম।
বিদেশে তো বটেই, স্মার্টহোমের চাহিদায় কিন্তু পিছিয়ে নেই ভারতও। আর ব্যবসার সেই বিশাল ক্ষেত্রটা উপলব্ধি করে বিভিন্ন বড় বড় সংস্থা ঝাঁপিয়ে পড়ছে নতুন নতুন উদ্ভাবনে।
নেস্ট
স্মার্টহোম তৈরিতে গুগল নিয়মিত নতুন গ্যাজেট আর অ্যাপ নিয়ে এসেছে। নেস্টের লক্ষ্য হল, বাড়ির সব কিছুকে ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে জুড়ে দেওয়া। এসির টেম্পারেচার ঠিক করার থার্মোস্ট্যাট থেকে স্মোক ডিটেক্টর, সবই পেয়ে যাবেন এখানে। আর গ্যাজেটগুলো যে শুধু একটি নির্দিষ্ট কোম্পানিরই হতে হবে, এমন কোনও কথা নেই। ফলে বাড়ির লাইট থেকে শুরু করে সিকিয়োরিটি ক্যামেরা সবই কনট্রোল করতে পারবেন ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে।
হোমকিট
হোমকিট অ্যাপ এখন আইওএস-এ (অপারেটিং সফ্টওয়ার) এমনিতেই পাওয়া যায়। আর সেই অ্যাপ দিয়েই কনট্রোল করতে পারবেন গ্যাজেটগুলো। এ ক্ষেত্রেও সুবিধা হল, কোনও বিশেষ কোম্পানির প্রডাক্ট দরকার হবে না। বিভিন্ন কোম্পানির স্মার্টলাইটও কনট্রোল করতে পারবেন হোমকিটের মাধ্যমে। এমন স্মার্টলাইটের দাম চার হাজার টাকা থেকে শুরু। লাইটের দাম শুনে ঘাবড়াবেন না। এ লাইট শুধু এক রঙের আলো দেবে না। মুড আর সময় অনুযায়ী বদলে নিতে পারবেন আলোর রং।
স্মার্ট হোম
হোম অটোমেশনের পথে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে স্মার্ট হোম। শুধু লাইট বা ক্যামেরাতে আটকে থাকেনি, ওয়াশিং মেশিন থেকে শুরু করে হোম থিয়েটার সবই পরিচালনা করতে পারবেন এর মাধ্যমে। এটি শুধু ওয়াইফাই নয়, নির্ভর করে সেন্সরের উপর। একটি হোম সার্ভারের সঙ্গে অ্যাপের মাধ্যমে যে কোনও স্মার্ট ডিভাইস আপনি চালাতে পারবেন। বাড়ির সামনের দরজার কাছাকাছি এলেই সেন্সর আলো জ্বালিয়ে দেবে। অথবা টিভির সামনে সোফায় বসলেই চালু হয়ে যাবে টিভি আর হোম থিয়েটার। বলা হয়, বিদ্যুতের খরচও বাঁচিয়ে দেবে এটি। কারণ আপনি কোথায় আছেন, সেটা বুঝে সেই এসিটাই শুধু চালাবে।