নখের সৌন্দর্যের কদর সর্বত্র। তা সে ছোট করে কাটা নখ হোক কিংবা খানিকটা বাড়িয়ে ধারগুলো গোলাকার বা আয়তাকার করে শেপ করা নখ। আর নখের সৌন্দর্য বজায় রাখার জন্য কসরতও কম করতে হয় না। তবে ম্যানিকিয়োর করার পর চোখে পড়ার জন্য কিন্তু নেল পলিশই শেষ কথা নয়। নেল আর্টের ট্রেন্ড এসে গিয়েছে বেশ কিছু বছর। তা হলে আর নতুন কী রইল? ট্রেন্ড মানেই তা বদলাতে থাকে। নেল আর্টের ট্রেন্ডেও এসেছে নতুন জোয়ার।
একরঙা নেল পলিশ থেকে প্রথম বদল এসেছিল দু’রকম রঙের। প্রতিটি নখে দু’-তিন রঙের নেল পলিশ যেমন ছিল, তেমনই আবার হাতের পাঁচ আঙুলের মধ্যে বিশেষ একটি বা দু’টি নখে আলাদা রং করারও চল ছিল। পরে এল প্রতিটি নখে নানা প্যাটার্ন তৈরির চল। দেখে নেওয়া যাক নেল আর্টের চলতি ট্রেন্ডগুলো।
ব্রাশ পেন্টিং: নানা ধরনের ব্রাশ ব্যবহার করে এই ধরনের নেল পেন্টিং করা যায়। প্রাথমিক ভাবে একটি বেস কালার ব্যবহার করে তার উপর অন্য রং দিয়ে নানা রকম কৌণিক, ফ্ল্যাট, লাইন, ডটিং জাতীয় প্যাটার্ন তৈরি করা যায়।
স্পাঞ্জ ববিং: নখে অ্যাক্রোম্যাটিক ডিজাইন করার জন্য সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হল স্পাঞ্জ ববিং। নখে একটা বেস রং লাগিয়ে নিন। একটি ছোট স্পাঞ্জের উপর ইচ্ছে মতো অন্য রং লাগিয়ে নখের উপর চেপে চেপে স্পাঞ্জ করতে হবে। এর ফলে স্প্রিঙ্কলিং এফেক্ট তৈরি হয়। পুরো নখে অথবা কোনও বিশেষ প্যাটার্ন অনুযায়ীও এই স্পাঞ্জ করা যায়।
টেপিং: যদিও সাধারণত নিখুঁত ভাবে নেল আর্ট করার অন্যতম পদ্ধতি হল টেপিং। তবে টেপিংয়ের সাহায্যে নানা ধরনের জ্যামিতিক আকার তৈরি করা যায়। বেস কালারের উপর ইচ্ছে মতো টেপ বা লেবেল ব্যবহার করে দ্বিতীয় বা তৃতীয় রং করতে হবে।
ডিজি আর্ট: থেরাপিস্ট বা বিউটি সাঁলোয় এই ডিজি নেল আর্ট ব্যবহারের চল বেশি। ডিজিটাল ক্যামেরা থেকে ইচ্ছে মতো ছবি স্ক্যান করে নখের উপর লাগানোর জন্য এটা ব্যবহার করতে হয়। অর্থাৎ প্রিয়জনের মুখ হোক কিংবা পছন্দের কোনও জায়গার ছবি, সবই আপনার নখে স্থান পেতে পারে এই ডিজি আর্টের মাধ্যমে।
স্টেনসিল মেথড: একটি বেস রঙের ড্রাই কোট দেওয়ার পর স্টেনসিল ব্যবহার করতে হয়। স্টেনসিল লাগিয়ে অন্য রঙের নেল পলিশ লাগিয়ে নিতে হবে। সবশেষে রং শুকিয়ে গেলে স্টেনসিল তুলে ফাইনাল কোটিং ব্যবহার করলেই পাওয়া যাবে অন্য ধরনের নেল আর্ট। এই মেথড খানিকটা টেপিংয়ের মতো হলেও ডিজাইন করার জন্য আলাদা করে সৃজনশীলতার প্রয়োজন হয় না।
এয়ারব্রাশ নেল আর্ট: স্টেনসিল মেথডের পরবর্তী ধাপ হল এয়ারব্রাশ। এতে বেস কোট লাগানোর পর স্টেনসিল ব্যবহার করে অন্য প্যাটার্ন তো হল। কিন্তু তার পর এয়ারব্রাশ মেশিনের সাহায্যে ফিনিশিং দেওয়া হয়।
ডিক্যাল ও স্টিকার: নখের উপর নানা এমবেলিশ লাগানোর জন্যই দরকার ডিক্যাল ও স্টিকার। এতে বিশেষ খাটনি না থাকলেও বেস কোট লাগানোর পর ডিক্যাল বা স্টিকার ব্যবহারের সময় ধৈর্য না ধরলে নড়েচড়ে নষ্ট হয়ে যেতে পারে এমবেলিশমেন্ট। এই পদ্ধতিতেই ট্যাটু, জুয়েলারি, গ্লিটার বা স্টোন বসানো যায় নখের উপর।
স্প্ল্যাটার নেল: নখের গ্র্যাফিতি আনার জন্য বাড়িতে স্প্ল্যাটার আর্টে ব্যবহার করতে পারেন নরম টুথব্রাশ। তবে সাঁলোয় ফ্যান ব্রাশ স্ট্রোকের সাহায্যে নখের উপর আনা হয় এই বিশেষ ধরনের প্যাটার্ন।
ওয়াটার মার্বেল: জলের উপর এক ফোঁটা নেল পলিশ ফেলুন। তারই মধ্যে পছন্দ অনুযায়ী আরও রঙের ফোঁটা দিতে থাকুন। একটি টুথপিক দিয়ে ইচ্ছে মতো ডিজাইন জলেই রঙের উপর আঁকুন। আলতো করে নখ ডুবিয়ে তুলে নিন। ফাইনাল কোটিং দিলেই তৈরি ওয়াটার মার্বেল নেল আর্ট।
কৃত্রিম নেল আর্ট: নিজের নখে তো হল এত ধরনের আর্ট। কিন্তু আপনার নখ যদি তেমন সুন্দর না-ও হয়, তা হলে কি নেল আর্টের ইচ্ছে অপূর্ণই থেকে যাবে? মোটেও নয়। তাই বাজারচলতি কৃত্রিম বা আর্টফিশিয়াল নখও লাগিয়ে নিতে পারেন। এই কৃত্রিম নখে নানা ধরনের টেকনিক আপনি পেয়ে যাবেন সহজেই।
তা হলে নেল আর্টের ইচ্ছেপূরণ কিন্তু আপনারই হাতে। আর তার জন্য দরকার শুধু সময় এবং অল্প সৃজনীশক্তির।