সম্প্রতি ফণীভূষণ বিদ্যাবিনোদ মঞ্চে রূপমঞ্জরীর আয়োজনে শোনা গেল বিভিন্ন শিল্পীর কণ্ঠে বিভিন্ন সময়ের জনপ্রিয় গান। অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিলেন শিবাজী চট্টোপাধ্যায়। এই ধরনের পুরনো গানের আসরে গাইবার সময় সব শিল্পীরই বোধ হয় একটা আলাদা ধরনের নস্টালজিয়া আর দায়ভার কাজ করে। শিবাজী চট্টোপাধ্যায় তাঁর হেমন্তগানে একদা পেয়েছিলেন সেই মহান শিল্পীর আশীর্বাদ। সামনে কোনও খাতা নেই। ঝরনার মতো একের পর এক গান। সব সেরা কোনটিকে বলি! ‘রানার’ না ‘আমার গানের স্বরলিপি’ না ‘ঝড় উঠেছে’ না ‘কাজল নয়না হরিণী’, মন প্রাণ ঢেলে গাইলেন এ দিন শিবাজী।
শ্যামল মিত্রের গাওয়া প্রায় সব গানেই এক ধরনের মাদকতা আছে। শ্রোতাদের কানে এখনও বাজে সেই সুর। সেই শিল্পীর একগুচ্ছ গানের সম্ভার নিয়ে মঞ্চে এলেন রাজা রায়। বড় ভাল গাইলেন শিল্পী। প্রতিটি গানই সুন্দর। তার মধ্যে ‘রাজার পঙ্খী উইড়া গেলে’, ‘আমি চেয়ে চেয়ে দেখি সারা দিন’, ‘এই পথে যায় চলে’, ‘কী নামে ডেকে’ সুন্দরতর।
মান্না দে-র গানে ছিলেন পল্লব ঘোষ। তারই মধ্যে আচ্ছন্ন করলেন শ্রোতাদের। একে একে ‘ভালবাসার রাজপ্রাসাদে’, ‘কে তুমি তন্দ্রাহরণী’, ‘তুমি কি সেই’ প্রতিটি গানই ভাল লাগে। শেষ পর্বে শ্রোতাদের অনুরোধে হেমন্ত-মান্নার যুগলবন্দি চিরকালীন সেই বিখ্যাত গান ‘হাজার টাকার ঝাড়বাতিটা’।
এ দিন অনুষ্ঠান শুরু হয় সুছন্দা ঘোষের কয়েকটি গান দিয়ে। ‘কী গাব আমি’ চমত্কার নির্বাচন। তার পর ‘না চাহিলে যারে’, ‘আমার মন বলে’, ‘আকাশ ভরা’ স্মরণীয় নিবেদন।
বৃষ্টি-নেশায়
শিশিরমঞ্চে ‘সৃজন সন্ধানী’ নিবেদন করল হেমন্তকুমার মুখোপাধ্যায়ের ৯৪ তম জন্মদিনে ‘গানের হেমন্তকাল’। পরিচালনায় অভিজিত্ ঘোষ। অভিজিতের সুরঋদ্ধ কণ্ঠ, গায়কিতে প্রতিটি গানই সুমধুর। তবুও ‘এ নয়ন ডরি ডরির’ তুলনা নেই। সুতপা দত্ত রায়ও সাবলীল, মিষ্টি কণ্ঠে গেয়েছেন ‘আকাশের অস্তরাগে’। কমলিকা চক্রবর্তী ‘আমার মল্লিকা বনে’ গানটিতে উতরে গেলেও দর্শকমনে কোনও সাড়া জাগাতে পারেননি। সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘অনেক কথা বলেছিলেম’ ও ‘তুমি যে আমার’ হৃদয়ের অন্তঃস্থলে নাড়া দেয়। ভাষ্যে ছিলেন মধুমিতা বসু। দিনটি ছিল আষাঢ়ের প্রথম সন্ধ্যা। তাই বৃষ্টির গানের নামকরণও ছিল ‘বৃষ্টি নেশা ভরা সন্ধ্যাবেলা’। শিল্পীরা ছিলেন দর্পনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়, শুক্লা সেনগুপ্ত, শৈবাল চৌধুরী, ছন্দা দেব, কৃষ্ণেন্দু সেন প্রমুখ।