শিলিগুড়িতে এখন ‘হাইপার টেনশন’-এর রোগী বাড়ছে। খুবই চিন্তার বিষয়। এটা বাড়ছে মূলত চার দশক ধরেই। কিন্তু এখন যেন মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বয়সের বাছবিচার নেই, সেটা আরও বেশি উদ্বেগের। কিন্তু এই হাইপার-টেনশনের কারণ? কারণ অবশ্য দু’ধরনের। প্রাইমারি আর সেকেন্ডারি। প্রথমটির কারণ জানা যায় না। অথচ এটাই সবচেয়ে বেশি হয় যেমন একশো জনের মধ্যে পঁচানব্বই জনই এতে আক্রান্ত। তিরিশ বছরের পর বয়স যত বাড়তে থাকে আমাদের রক্তনালী ততই শক্ত হতে থাকে। একই সঙ্গে রক্তনালীর মধ্যে লিপিড বা চর্বির মাত্রা আরও বেশি বাড়তে থাকে। আর সেকেন্ডারির মূল করাণ হল, থাইরয়েড, ডায়বেটিস ও বিভিন্ন হরমোনের ওষুধ, কিডনির ওষুধ এবং প্রেগন্যান্সির কারণে এর প্রাদুর্ভাব হয়। কিন্তু অনেকেই প্রশ্ন করেন, কোন ধরনের মানুষের বেশি হাইপার টেনশন হয়? আসলে সব বয়সেই এটা হয়। শিশু থেকে বৃদ্ধ কেউ বাদ যান না। তবে বেশি দেখা যায় ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ বছর বয়স অবধি। কারণ ওই সময়টাতেই রক্তনালী শক্ত হতে থাকে। আর তার উপরে জীবনযাত্রার পরিবর্তন এত দ্রুত ঘটছে যে এই সমস্যা তত বেশি চেপে বসছে। খাদ্যাভাস পরিবর্তন না হলে আরও বিপদ। বাইরের খাবারে নুনের মাত্রা বেশি থাকায় বিপদ যেমন আছে, তেমনই চিনি বা মিষ্টি খাওয়া তৈলাক্ত জিনিস বা ফাস্ট ফুড খাওয়া অনেক বেশি বেড়ে গেছে। অথচ ফল এবং শাক-সব্জি এখন ক’জন খান? দেখা যাচ্ছে মানুষ যদি খাদ্যাভাসের পরিবর্তন ঘটায়, তা হলে ব্লাড প্রেশার দশ থেকে পনেরো শতাংশ কমে যায়। সময়ের অভাবে এখন কেউই ব্যায়াম করতে পারেন না। তার উপর শারীরিক পরিশ্রম কমে গেছে। ফলে ওবেসিটি বাড়ছে। সবচেয়ে দুশ্চিন্তার বিষয়,কর্মসূত্রে মানসিক চাপ ও পরিশ্রম এতটাই বেড়ে গেছে যে টেনশন জাতীয় রোগ আরওচপে বসছে। ধূমপানও অবশ্য বড় কারণ। অ্যালকোহল জাতীয় মাদক দ্রব্য আরও বেশি ক্ষতি করছে। আমার মনে হয় চল্লিশ পেরোলেই তিন মাস অন্তর নিজের ব্লাড-প্রেশার চেক করানো ভাল।
যোগাযোগ- ৯৪৩৪০০১৪২২