অভিজিত্(৪৭) • স্ত্রী(৪০) • মেয়ে(১০) • বাবা(৮০)
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী • থাকেন দিল্লিতে • পরিবার কলকাতায় • লক্ষ্য মেয়ের পড়াশোনা ও বিয়ের জন্য সঞ্চয়
• ইচ্ছে ৫১ বছরে সচ্ছল অবসর • বছরে এক বার বেড়াতে যেতে চান
এখন অনেকেই ৪০ বা ৫০ বছর পর্যন্ত চাকরি করে অবসর জীবন নিজের ইচ্ছেমতো উপভোগ করতে চান। অভিজিত্ সে রকমই এক জন। তিনি ২০১৮ সালে ৫১ বছর বয়সে চাকরি থেকে অবসর নিতে আগ্রহী। অবসরের সঞ্চয় তাই এখনই সেরে রাখতে চাইছেন। তাঁর কিছু সঞ্চয় আছে। তহবিলও মন্দ নয়। কিন্তু তা মূল তিনটি লক্ষ্য পূরণ করবে কি না, তা-ই দেখে নেব।
সে জন্য চোখ রাখব অভিজিতের কত অর্থ প্রয়োজন, সেই অঙ্কে (পাশের প্রয়োজন-তালিকা দেখুন)। ধরে নিচ্ছি মূল্যবৃদ্ধি ৭% ও সুরক্ষিত প্রকল্পে রিটার্ন ৮%। একই ভাবে মিউচুয়াল ফান্ড তহবিলে ১২% ও নিয়মিত এসআইপিতে ১৫% রিটার্ন ধরে তালিকাটি করা হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি হিসাব করে দেখা যাচ্ছে তাঁর অবসরের পরে সংসার চালানো, মেয়ের উচ্চশিক্ষা ও বিয়ের জন্য সব মিলিয়ে প্রায় ১.১২ কোটি টাকা চাই।
এ বার দেখব অভিজিতের সঞ্চয় তাঁর প্রয়োজন মেটাতে পারে কি না। সে জন্য তাঁর লগ্নিতে চোখ রাখব (রয়েছে-তালিকা দেখুন)। তাঁর ৪০ লক্ষ টাকার স্থায়ী আমানতের ৫ লক্ষের সুদ নিয়মিত যায় এসআইপি-তে। বাকি ৩৫ লক্ষের সুদ জমা হয়। দেখতে পাচ্ছি, ৪৭ বছরেই অভিজিত্ প্রায় ১ কোটি টাকার তহবিল গড়ে তুলতে পেরেছেন। তাঁর সুরক্ষিত লগ্নি হিসেবে স্থায়ী আমানত আছে। আবার ঝঁুকি নিয়ে ফান্ডও চালাচ্ছেন। তবে এর পরও চাহিদা মেটাতে প্রায় ১৩ লক্ষ লাগবে। তাই তাঁকে কিছু পরামর্শ দিতে চাই—
জীবনবিমা
তাঁর ১০ লক্ষ টাকার ৫টি বিমা রয়েছে। কিন্তু প্রতিটিই শুরু হয়েছে দেরি করে। বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করুন কোনটা চালাবেন। এ ছাড়া, ১২ বছরের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার টার্ম পলিসি নিন। অবসরের পরে সুরক্ষা দেবে। বিমাগুলি বন্ধ করে দিলে সেখান থেকে পাওয়া টাকা করছাড়যুক্ত বন্ডে রাখতে পারেন। যা আপনার তহবিলে যোগ হবে।
তা ছাড়াও...
• অবসরের তহবিলে অতিরিক্ত যে টাকা থাকবে, তা মেয়ের উচ্চশিক্ষা ও বিয়ে পর্যন্ত ফের লগ্নি করতে হবে। যার থেকে ওই দুই লক্ষ্যপূরণ সম্ভব।
• অবসরের পরে এসআইপি চালিয়ে যান। তবে প্রয়োজনে তা কমানোর ও প্রকল্প বদলানোর রাস্তা খোলা রাখুন।
• যত দিন না মেয়াদ ফুরোয়, পিপিএফ চালান। তার পর সেই টাকা ঋণপত্র নির্ভর ফান্ডে লগ্নি করতে পারবেন। এই টাকা মেয়ের বিয়েতে কাজে আসবে।
• স্থায়ী আমানতে এত টাকা না-রেখে তা ছড়িয়ে দিন ডাকঘর এমআইএস ও ঋণপত্র নির্ভর ফান্ডেও।
• করছাড়ের জন্য ইএলএসএস ফান্ডে এসআইপি-র কথা ভাবুন। তবে তা ওই ২০ হাজারের মধ্যেই হতে হবে।
• বেড়াতে যেতে রেকারিং করুন। এই মুহূর্তে পারবেন না। কিন্তু পরে টাকা জোগাড়ে অসুবিধা হবে না।
• অবসরের আগে তহবিল এমন ভাবে সাজাতে হবে, যাতে মাসে বা ত্রৈমাসিকে হাতে নিয়মিত টাকা আসে।
শেষে একটা কথা বলতে পারি, অভিজিত্ ঠিক পথেই এগোচ্ছেন। লক্ষ্য পূরণে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
অভিজিতের মতো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ পেতে পারেন আপনিও।
নিজের ঠিকানা ও ফোন নম্বর জানিয়ে চিঠি লিখুন ‘বিষয়’, ব্যবসা বিভাগ,
আনন্দবাজার পত্রিকা, ৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা, পিন-৭০০০০১.
ই-মেল: bishoy@abp.in
ভ্রম সংশোধন
গত বিষয়-আশয়ের ট্যাক্স কর্নার-এ প্রকাশিত অর্ধেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের সঠিক উত্তর হবে: আয়কর আইনের ১০(১৬) নম্বর ধারা অনুযায়ী, শিক্ষার খরচ চালানোর জন্য দেওয়া স্কলারশিপের টাকায় আয়কর ছাড় রয়েছে।
এই সংক্রান্ত ভুলের জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।