রক্তে প্যাশন আছে

প্রায় তিরিশ বছর হয়ে গেল কলকাতায় আসছি। প্রথম যখন এসেছিলাম, আশির দশকের মাঝামাঝি হবে। কত আর বয়স, মেরেকেটে বছর কুড়ি! ইমরান খান তখন আমাদের ক্যাপ্টেন। ইডেনে খেলার সুবাদে সেই যে কলকাতা, বাংলা আর বাঙালির সঙ্গে একটা কানেকশন তৈরি হয়ে গেল, আজও রমরম করে চলছে। আর এখন তো যোগাযোগটা আরও ঘন, গভীর হয়ে উঠল, যে দিন থেকে কলকাতা নাইট রাইডার্স-এর বোলিং কোচ হলাম, আপনাদের সব্বার সঙ্গে গলা মেলালাম, ‘করব, লড়ব, জিতব রে!’

Advertisement

ওয়াসিম আক্রম

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৫ ০০:০১
Share:

প্রায় তিরিশ বছর হয়ে গেল কলকাতায় আসছি। প্রথম যখন এসেছিলাম, আশির দশকের মাঝামাঝি হবে। কত আর বয়স, মেরেকেটে বছর কুড়ি! ইমরান খান তখন আমাদের ক্যাপ্টেন। ইডেনে খেলার সুবাদে সেই যে কলকাতা, বাংলা আর বাঙালির সঙ্গে একটা কানেকশন তৈরি হয়ে গেল, আজও রমরম করে চলছে। আর এখন তো যোগাযোগটা আরও ঘন, গভীর হয়ে উঠল, যে দিন থেকে কলকাতা নাইট রাইডার্স-এর বোলিং কোচ হলাম, আপনাদের সব্বার সঙ্গে গলা মেলালাম, ‘করব, লড়ব, জিতব রে!’ এত দিন দেখেশুনে আমার সবচেয়ে দুর্দান্ত লাগে বাঙালির ‘প্যাশন’— জীবনের যে কোনও কাজে, যে কোনও কিছুতে মনপ্রাণ উজাড়, উপুড় করে দেওয়ার অভ্যেস।

Advertisement

একটা খেলাপাগল জাতি ক্রিকেটকে নিয়ে যে কী মাতামাতি করতে পারে, ইডেনে কেকেআর-এর প্রতিটা ম্যাচে নতুন করে বুঝতে পারি। প্যাশন বলতে শুধু হুল্লোড়বাজি নয় কিন্তু। ক্রিকেটকে ঠিকঠাক, ষোলো আনা অ্যাপ্রিশিয়েট করতেও জানে এই বাঙালি। এখন না হয় কলকাতা আমার হোম টিম, ইডেন হোম গ্রাউন্ড। কিন্তু যখন পাকিস্তানের হয়ে, ‘অপোনেন্ট’ হয়ে খেলতে এসেছি, তখনও বুঝতে পেরেছি— এই শহরটা, এই মানুষেরা ক্রিকেটের ‘এসেন্স’টা বোঝে। আসলি ক্রিকেটীয় অ্যাচিভমেন্ট, সে দেশের কি বিদেশের যে কোনও প্লেয়ারের হোক না কেন, কদর করে। সত্যিকারের প্যাশন না থাকলে এই খাতিরদারি করা যায় না। এই সে দিনও তো, আমরা হারলাম, কিন্তু ইডেনের দর্শক ক্রিস গেল-এর ছক্কায় কী হাততালি দিল!

শুধু খেলা কেন, বাঙালির প্যাশন ছড়িয়ে আছে জীবনের সব ক্ষেত্রে। গানবাজনা, খাওয়াদাওয়া, পড়াশোনা। শিল্প, সাহিত্য। পৃথিবীর আর কোন জাতি এ রকম সব কিছুতে, সব কিছু নিয়ে হইহই বাঁচে, আমার তো জানা নেই। বাঙালির এই ‘জুনুন’ দেখে আমি নিজেই ক্লিন বোল্ড!

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement