২০২১ সালে সুপ্রিম কোর্ট মহিলা প্রার্থীদেরও ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতিযাগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার নির্দেশ দেয়। ওই বছরই এনডিএ (ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি) দ্বারা পরিচালিত পরীক্ষায় বসেছিলেন বছর উনিশের শনন।
পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর শনন জানতে পারেন, তিনি দশম স্থানের অধিকারী হয়েছেন। শুধু তাই নয়, মহিলা প্রার্থীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন তিনি।
সরকারি তথ্য অনুসারে, মোট পাঁচ লক্ষ ৭৫ হাজার ৮৫৬ জন প্রার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তার মধ্যে মহিলা পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল এক লক্ষ ৭৭ হাজার ৬৫৪ জন।
এনডিএ-র প্রথম মহিলা ব্যাচের প্রথম হয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যুক্ত হবেন শনন। পঞ্জাবের জিরাকপুর এলাকার বাসিন্দা তিনি।
ঠাকুরদা ও বাবা দু’জনেই ভারতীয় সেনাবাহিনীতে সুবেদার ও নায়েব সুবেদার পদে থাকায় ছোটবেলা থেকে অন্য রকম পরিবেশে বড় হয়ে উঠেছেন শনন।
এক সাক্ষাৎকারে শনন জানিয়েছেন, ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বড় হয়ে ওঠার সময় তিনি দেখেছেন, ভারতীয় সেনাদের প্রতি দেশবাসী কতটা ভরসা, কতটা শ্রদ্ধা করেন। মাতৃভূমির সেবা করার সুযোগ পেয়েছেন, এ তাঁর কাছে অত্যন্ত সম্মানের।
বাবার চাকরি বদলি সূত্রে তিনি রুড়কি, জয়পুর, চণ্ডীমন্দির এলাকার আর্মি পাবলিক স্কুলে পড়েছেন। স্নাতকস্তরের পড়াশোনা করতে তিনি দিল্লিতে গেলে এনডিএ–র পরীক্ষার ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পারেন।
নিজেই জানিয়েছেন, তিনি এই পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য টানা ৪০ দিন ধরে রোজ ৫ ঘণ্টা করে পড়াশোনা করতেন। শননের ঠাকুরদা ও বাবা সব সময় তাঁকে উৎসাহ দিতেন।
শননরা তিন বোন। তাঁর দিদি সামরিক বাহিনীতে নার্সিং বিভাগে কর্মরতা এবং তাঁর ছোট বোন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে।
শনন বলেন, ‘‘এপিজে আব্দুল কালামের জীবন আমাকে ভীষণ ভাবে অনুপ্রেরিত করেন। তাঁর মেধা, সততা, অধ্যবসায়ের গুণে তিনি শূন্য থেকে শুরু করে দেশের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। সর্বোচ্চ পদে থেকেও তিনি মাটির মানুষই ছিলেন।’’
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উদ্দেশে শনন বলেন, ‘‘পদমর্যাদার প্রলোভনে পা দিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সত্যিই দেশের জন্য কাজ করতে উৎসাহী হলে সেনাবাহিনীতে যোগ দিন।’’