Operation Kalanemi

ভণ্ড সাধুদের ধরতে অভিযান, নাম দেওয়া হল পৌরাণিক অসুরের নামে! কী এই ‘অপারেশন কালনেমি’?

স্কন্দ পুরাণ অনুযায়ী, অমৃতমন্থনের সময় ভগবান বিষ্ণু নিধন করেছিলেন কালনেমিকে। দ্বাপর যুগে তিনি জন্ম নিয়েছিলেন মথুরার রাজা কংস হয়ে। অন্ধকার সময়ের প্রতিনিধিত্ব করেন কালনেমি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫ ১৪:১৫
Share:
০১ ১৭

বেড়েই চলেছে ভণ্ড সাধুদের রমরমা! রুখতে অভিযান শুরু করল উত্তরাখণ্ড সরকার। আর অভিযানে নেমেই গ্রেফতার করা হয়েছে ৮২ জন ভুয়ো সাধুকে। অভিযোগ, নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছিলেন তাঁরা।

০২ ১৭

সেই ভণ্ড সাধু পাকড়াও অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন কালনেমি’। বৃহস্পতিবার থেকে এই অভিযান শুরু করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার।

Advertisement
০৩ ১৭

দেহরাদূনের এসএসপি অজয় সিংহ জানিয়েছেন, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামির নির্দেশে এই অভিযান শুরু হয়েছে। সাধু সেজে জনগণের বিশ্বাসভঙ্গ করছেন যাঁরা, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

০৪ ১৭

বৃহস্পতিবার অভিযানটি শুরু হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী ধামি বলেন, ‘‘যে ভাবে অসুর কালনেমি সাধু সেজে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল, তেমনই আজকের সমাজে এমন অনেক কালনেমি আছে যারা ধর্মের নামে অপরাধ করছে।’’

০৫ ১৭

উল্লেখ্য, কালনেমি এক জন পৌরাণিক অসুর। ত্রেতা যুগে হনুমান সঞ্জীবনী আনতে যাওয়ার সময় সাধু সেজে তাঁকে বিপথে চালিত করার চেষ্টা করেছিলেন কালনেমি।

০৬ ১৭

স্কন্দ পুরাণ অনুযায়ী, অমৃতমন্থনের সময় ভগবান বিষ্ণু নিধন করেছিলেন কালনেমিকে। দ্বাপর যুগে তিনি জন্ম নিয়েছিলেন মথুরার রাজা কংস হয়ে। অন্ধকার সময়ের প্রতিনিধিত্ব করেন কালনেমি।

০৭ ১৭

সেই কালনেমি অসুরের নামেই ভণ্ড সাধুদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে উত্তরাখণ্ডের ধামি সরকার। মুখ্যমন্ত্রী ধামি জানিয়েছেন, ভুয়ো সাধু-সন্ন্যাসী এবং গুরুদের ধরতে ইতিমধ্যেই একাধিক দল গঠন করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সাধু সেজে মানুষের অনুভূতি নিয়ে খেলছেন, এমন মানুষদের খবর পেলেই সেখানে পৌঁছে যাচ্ছে পুলিশ।

০৮ ১৭

ধামি আরও জানিয়েছেন, রবিবার ৩৪ জন ভণ্ডকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে ২৩ জন অন্য রাজ্যের বাসিন্দা। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, বিগত কয়েক দিনে পার্বত্য রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে মোট ৮২ জন ভুয়ো ‘বাবা’কে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার প্রাসঙ্গিক ধারায় আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।

০৯ ১৭

পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার দেহরাদূনের সাহসপুর এলাকা থেকে ধৃত ভণ্ড সাধুদের মধ্যে রুকন রাকম ওরফে শাহ আলম নামে এক বাংলাদেশের নাগরিকও ছিলেন।

১০ ১৭

দেহরাদূনের এসএসপি জানিয়েছেন, ‘অপারেশন কালনেমি’ এখন কার্যকর থাকবে। বিশেষ করে চারধাম যাত্রা এবং কাঁওয়াড় যাত্রার কথা মাথায় রেখে এই অভিযান চালু রাখা হবে। কারণ, সেগুলি মূলত সাধু এবং আধ্যাত্মিক গুরুদের সমাগমের জায়গা।

১১ ১৭

জানা গিয়েছে, নকল সাধুদের খুঁজে বার করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার যে পদক্ষেপ উত্তরাখণ্ড সরকার করেছে, তাকে সাধুবাদ জানিয়েছে হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলি।

১২ ১৭

অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্র পুরী ইতিমধ্যেই উত্তরাখণ্ডের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন। তাঁর দাবি, কাঁওয়াড়িয়াদের (কাঁওয়াড় যাত্রায় যোগদান করেন যাঁরা) সঙ্গে প্রতারণাকারী যে কারও বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

১৩ ১৭

সংবাদসংস্থা এএনআইকে রবীন্দ্র বলেছেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। তাঁকে ধন্যবাদও জানাই। হরিদ্বারে কাঁওয়াড় যাত্রা হচ্ছে। ভুয়ো সাধুরা কাঁওয়াড়িয়াদের কাছ থেকে টাকা চায় এবং তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। এই ধরনের মানুষদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’

১৪ ১৭

অখণ্ড পরশুরাম আখড়ার প্রধানও ভণ্ড সাধুদের নিন্দা করেছেন। তাঁর দাবি, প্রতারকদের আধার কার্ড যাচাই করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

১৫ ১৭

অখণ্ড পরশুরাম আখড়ার প্রধানের কথায়, ‘‘আমরা উত্তরাখণ্ড সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিছু ভুয়ো সাধু রয়েছেন যাঁরা আমাদের শ্রদ্ধেয় সাধুদের অপমান করেন। এই ভণ্ডদের আধার কার্ড পরীক্ষা করা উচিত। ভারত যখন বিশ্বগুরু হওয়ার পথে, তখন কেবল আসল সাধুরাই সেখানে থাকতে পারেন। কিছু ভুয়ো সন্ন্যাসী রয়েছেন যাঁরা অপরাধ করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াই উচিত।’’

১৬ ১৭

উত্তরাখণ্ডের বিজেপি প্রধান মহেন্দ্র ভট্টও সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, কিছু মানুষ ভুয়ো সাধু সেজে সমাজকে অশান্ত করার চেষ্টা করে। সেই প্রতারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়েছেন তিনি।

১৭ ১৭

মহেন্দ্র বলেন, ‘‘কিছু অপরাধী সামাজিক পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করে। সকলেরই সরকারের তৈরি আইন মেনে চলা উচিত। এমন অসংখ্য লোক আছেন, যাঁরা সমাজকে অশান্ত করার চেষ্টা করেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’’

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement