Brigette Macron

ফরাসি প্রেসিডেন্টের স্ত্রী পুরুষ ছিলেন? দাবি উঠতেই অর্ধাঙ্গিনীর নারীত্ব প্রমাণে মরিয়া মাকরঁ, দেবেন বিজ্ঞানসম্মত নথি!

২০১৭ সালে নাতাশা রে ওরফে নাতালি রে নামে এক ব্লগার ইউটিউবে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করেন, মাকরঁ-জায়া ব্রিজেত আসলে পুরুষ। নাম, জঁ-মিশেল ট্রগনিউক্স। তিনিই পরে লিঙ্গ এবং নাম পরিবর্তন করে মহিলা হন। নাম রাখেন, ব্রিজেত।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:৫৭
Share:
০১ ২৩

চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ‘ব্লক এভরিথিং’-এর ব্যানারে প্রবল গণবিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে ‘নেপোলিয়নের দেশ’। ফ্রান্স জুড়ে শুরু হয়েছে আন্দোলন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁকে। সেই আবহে তাঁর মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে অন্য একটি বিষয়ও।

০২ ২৩

স্ত্রী তথা ফরাসি ফার্স্ট লেডি ব্রিজেত-ক্লদ মাকরেঁর নামে ওঠা এক অদ্ভুত ‘লিঙ্গ ষড়যন্ত্রের’ বিরুদ্ধেও লড়াই করছেন মাকরঁ। আদালতে তিনি ‘প্রমাণ’ করতে বাধ্য হচ্ছেন যে, তাঁর স্ত্রী এক জন রূপান্তরিত ব্যক্তি নন।

Advertisement
০৩ ২৩

অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যিই অদ্ভুত ওই সমস্যায় পড়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর পরিবার। পুরো বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত ২০১৭ সালে।

০৪ ২৩

২০১৭ সালে নাতাশা রে ওরফে নাতালি রে নামে এক ব্লগার ইউটিউবে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করেন, মাকরঁ-জায়া ব্রিজেত আসলে পুরুষ। নাম, জঁ-মিশেল ট্রগনিউক্স। তিনিই পরে লিঙ্গ এবং নাম পরিবর্তন করে মহিলা হন। নাম রাখেন, ব্রিজেত।

০৫ ২৩

নাতাশার দাবিকে সে সময় ‘পাগলের প্রলাপ’ ভেবে পাত্তা দেননি কেউই। বিষয়টি নিয়ে তেমন হইচইও হয়নি। এর পর ২০২১ সালে একটি সাক্ষাৎকারে ব্রিজেতকে নিয়ে সেই একই দাবি করেন নাতাশা।

০৬ ২৩

সেই অদ্ভুত দাবির সপক্ষে ‘প্রমাণ’ও পেশ করেছিলেন নাতাশা। একটি পুরুষের ছবি দেখিয়ে ব্লগার দাবি করেছিলেন, সেই ছবিটি জঁ-মিশেলের। ওই ছবিতে থাকা পুরুষের সঙ্গে ব্রিজেতের মুখের মিল রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

০৭ ২৩

প্রথম বার কিছু না হলেও ২০২১ সালে নাতাশার ওই সাক্ষাৎকারের পর বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হয়। ২০২২ সালে ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে ভাইরাল হয় নাতাশার সাক্ষাৎকার। জল্পনা দানা বাঁধে।

০৮ ২৩

সমাজমাধ্যমে নাতাশার দাবি গুজব হিসাবে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে নাতাশা এবং তাঁর সাক্ষাৎকার নেওয়া মহিলার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন মাকরঁ দম্পতি। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে অভিযুক্ত দু’জনকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

০৯ ২৩

তবে প্যারিসের একটি আদালত ২০২৫ সালের জুলাই মাসে রায়টি বাতিল করে দেয়। আদালতের দাবি ছিল, নাতাশা নিজের বিশ্বাস থেকেই ব্রিজেতের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ করেছিলেন। তাই কোনও মানহানি হয়নি।

১০ ২৩

প্যারিসের ওই আদালত নাতাশাকে রেহাই দেওয়ার আগেই ব্রিজেত-বিতর্ক অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছিল। ২০২৪ সালে ব্লগার নাতাশার মতো ফরাসি ফার্স্ট লেডিকে নিয়ে একই দাবি করে বসেন অতি-দক্ষিণপন্থী হিসাবে পরিচিত আমেরিকার নেটপ্রভাবী তথা রাজনৈতিক ভাষ্যকার ক্যান্ডেস ওয়েন্স।

১১ ২৩

নাতাশার মতো ওয়েন্সও দাবি করেন, ফ্রান্সের ফার্স্ট লেডি ব্রিজেত আসলে এক জন পুরুষ। রূপান্তরিত হয়ে মহিলা হয়েছেন তিনি। ওয়েন্স এ-ও জানান, ওই দাবির জন্য তাঁর পেশা এবং খ্যাতিকেও ঝুঁকির মুখে ফেলতে রাজি তিনি।

১২ ২৩

এর পর চলতি বছরের জুলাই মাসে ওয়েন্সের বিরুদ্ধে ব্রিজেতকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ তোলেন মাকরঁ। ওয়েন্সের বিরুদ্ধে মানহানির মামলাও দায়ের হয়।

১৩ ২৩

যদিও সেই মামলা দমাতে পারেনি ওয়েন্সকে। আরও ঝাঁঝিয়ে তিনি দাবি করেন, ‘মরিয়া হয়ে জনসংযোগ’ করার উদ্দেশ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে মাকরঁ পরিবার। এমনকি, ফরাসি প্রেসিডেন্টকে ‘খুব বোকা মানুষ’ বলেও মন্তব্য করেন ওয়েন্স।

১৪ ২৩

পুরো বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মামলাও চলছে। মাকরঁ পরিবারের আইনজীবী টম ক্লেয়ার জানিয়েছেন, আমেরিকার আদালতে ‘ছবি এবং বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণ’ দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন মাকরঁ।

১৫ ২৩

ক্লেয়ারের দাবি, প্রমাণ হিসাবে ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাকরঁ তাঁর স্ত্রীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার এবং সন্তানদের লালন-পালনের ছবি আদালতের হাতে তুলে দিতে পারেন।

১৬ ২৩

ক্লেয়ার বলেছেন, ‘‘মাকরঁ বিশ্বের অন্যতম বড় নেতা। কিন্তু তিনিও তো মানুষ। তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ তোলা এবং বিশ্বের কাছে তাঁদের পরিচয় নিয়ে মিথ্যা বলার ষড়যন্ত্র আপত্তিকর এবং ক্ষতিকারক। আদালতে প্রমাণ দিতে তাঁকে নিজেকেই যেতে হবে ভাবলে আরও বিরক্তি তৈরি হচ্ছে।’’

১৭ ২৩

সমাজমাধ্যমে যথেষ্ট জনপ্রিয় ওয়েন্স। ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে তাঁর। সেই চ্যানেলের ফলোয়ারের সংখ্যা ৪০ লক্ষেরও বেশি।

১৮ ২৩

ওয়েন্সের মন্তব্যে এর আগেও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে ইহুদিদের উপর নাৎসিবাহিনী কোনও রকম অত্যাচার বা চিকিৎসা পরীক্ষা করেনি বলে দাবি করেন ওয়েন্স। তাঁর এ-হেন মন্তব্যের জন্য ২০২৪ সালে নিউ জ়িল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে তাঁর ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।

১৯ ২৩

ইমানুয়েল-ব্রিজেতের সম্পর্কের দিকে আঙুল এই প্রথম উঠল না। তাঁদের অসম বয়সের প্রেম নিয়েও বহু ব্যঙ্গবিদ্রুপ হয়েছে অতীতে। ২০০৭ সালে তিন সন্তানের মা ব্রিজেত ট্রগনিউক্সের সঙ্গে বিয়ে হয় মাকরেঁর। তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিস্তর কাঁটাছেড়া হয় সেই সময়।

২০ ২৩

দু’জনের বয়সে ২৫ বছরের ফারাক নিয়ে যথেচ্ছ হাসি-মশকরা হয়ে থাকে। তার প্রেক্ষিতে মাকরঁ বরাবরই ফলাও করে বলে এসেছেন ১৫ বছরের কিশোরের ৪০ বছরের শিক্ষিকার প্রেমে পড়ার গল্প।

২১ ২৩

সম্পর্কে ব্রিজেত এবং মাকরঁ ছিলেন শিক্ষিকা এবং ছাত্র। ব্রিজেত ছিলেন সেবাস্তিয়ান অজিয়ের নামে এক ব্যাঙ্কারের স্ত্রী। স্বামী এবং তিন সন্তানকে নিয়ে সুখের সংসার ছিল তাঁর। কিন্তু ২৫ বছরের বড় সেই শিক্ষিকারই প্রেমে পড়েন মাকরঁ।

২২ ২৩

ইমানুয়েল রাখঢাক না করেই শিক্ষিকাকে বলেছিলেন, ‘‘তুমি যা-ই করো না কেন, আমি তোমাকেই বিয়ে করব।’’ প্রথমে তেমন আমল না দিলেও ইমানুয়েলের জেদের কাছে শেষমেশ হার মানতে হয়েছিল ব্রিজেতকে।

২৩ ২৩

প্রথমে ছাত্রকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ব্রিজেত। কারণ তাঁর বড় মেয়ে ইমানুয়েলের সঙ্গে একই ক্লাসে পড়তেন। মেয়ে ও প্রেমিক সহপাঠী হওয়ায় প্রথমে দোলাচলে ভুগছিলেন ব্রিজেত। বহু পরে, ২০০৭ সালে, দাম্পত্য ভেঙে প্যারিসে এসে প্রেমমুগ্ধ ছাত্রটিকে বিয়ে করেন তিনি।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement