শারীরিক সুস্থতার জন্য ঘুম মানবজীবনের অপরিহার্য অঙ্গ। কম ঘুম হলে যেমন শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে তেমনই অতিরিক্ত ঘুম শরীরের জন্য ভাল নয়। প্রাপ্তবয়স্ক যে কোনও মানুষের সাধারণ ভাবে প্রতি দিন সাত থেকে ন’ঘণ্টা ঘুম দরকার। পরিমিত, গাঢ়, গভীর ঘুম শরীরের পক্ষে উপযোগী।
এ তো গেল শরীরের ভাল-মন্দের ব্যাপার। ঘুমের চাহিদা ব্যক্তিবিশেষের অভ্যাসের উপর নির্ভর করে। কেউ পাঁচ ঘণ্টা ঘুমিয়েই তরতাজা থাকতে পারেন। আবার কেউ বিছানায় পড়লে আর হুঁশ ফেরে না। বহু মানুষের কাছে ঘুম হল তাঁদের জীবনের অন্যতম বিলাসিতা। তাঁরা মনে করেন পৃথিবীর সমস্ত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য এক দিকে এবং ঘুম থাকবে আর এক দিকে।
ঘুমকাতুরে মানুষগুলিকে রাশির দিক থেকে বিচার করলে গুটি কয়েক রাশির সঙ্গে মিল পাওয়া যাবে। কারণ রাশিচক্রের কয়েকটি রাশি আছে যাঁদের জাতক-জাতিকারা ঘুমবিলাসী। তাঁদের ঘুমের প্রয়োজন কেবল বিশ্রামের জন্য হয় না।
জ্যোতিষশাস্ত্রের এমন কিছু রাশি রয়েছে যাদের জাতকেরা ঘুমকে তাঁদের মানসিক সুস্থতার অপরিহার্য অংশ বলে মনে করেন। তাঁদের ব্যক্তিত্ব, মানসিক গঠন এবং শাসক গ্রহগুলি তাঁদের ঘুম, বিশ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসুন দেখে নেওয়া যাক কোন কোন রাশির মানুষ অন্য সব কিছুর তুলনায় ঘুমকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।
এই তালিকার প্রথমে যে নামটি জ্বলজ্বল করে সেটি বৃষ রাশি। এই রাশিটির জাতক-জাতিকারা দৈনন্দিন জীবনে ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতাকে বেশ গুরুত্ব দিতে পছন্দ করেন। ঠিক তেমনই এই রাশির মানুষ ঘুমিয়ে সময় কাটাতে খুব আনন্দ পান। তাই সুযোগ পেলেই ঘুমোন।
এই রাশির জাতক-জাতিকারা অন্য যে কোনও কিছুর চেয়ে সবচেয়ে বেশি ঘুমকে উপভোগ করেন। নরম আরামদায়ক বিছানা এবং উষ্ণ ঘর পছন্দের তালিকায় রয়েছে এই রাশির। বৃষ রাশির জাতকেরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুমোতে পারেন। তাতেও তাঁরা মনে করেন এই ঘুম যথেষ্ট নয়।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কর্কট রাশি। এই রাশির জাতক-জাতিকা ঘুমের মধ্যেই তাঁদের মানসিক আরাম খুঁজে পান। এই রাশির জাতক-জাতিকারা তাঁদের ঘর, বিছানায় ঘুমোতে ভালবাসেন। এই অনুভূতি তাঁদের নিরাপদ বোধ করায়।
কর্কট রাশির জাতক-জাতিকাদের উপরে চন্দ্রের প্রভাব অত্যন্ত বেশি হয়। এই প্রভাবের ফলে তাঁরা অত্যন্ত আবেগী এবং কোমল। যখন জীবনে সমস্যা খুব বেশি অনুভূত হয়, তখন কর্কট রাশি ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুমই তাঁদের মানসিক স্থিতি ফিরিয়ে মনে শান্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে।
উদার, যত্নশীল এবং উষ্ণতায় ভরা সিংহ রাশির জাতকেরা জঙ্গলের রাজা সিংহের মতোই ঘুমোতে পছন্দ করেন। ঘুম তাঁদের চোখে সহজেই ধরা দেয়। সিংহ রাশি ঘুমোতে, বিশ্রাম নিতে এবং শুয়ে সময় কাটাতে পছন্দ করে। এর অর্থ এই নয় যে তারা অলস। এর অর্থ হল যখন তাঁরা বেশি ঘুমোন তখন তাঁদের শরীর ও মন ভাল ভাবে কাজ করে।
এঁরা ভাল করে ঘুমোতে জানেন। তাই শুয়ে পড়া মাত্র এঁরা বেশির ভাগ সময়েই ঘুমিয়ে পড়েন। এঁরা ঘুমের গভীরে স্বপ্নে বিচরণ করেন। সিংহ রাশির মানুষেরা সাধারণত রাত জাগতে পছন্দ করেন না এবং তাদের ঘুমের সময়সূচি মেনে চলতে পছন্দ করেন। তাঁরা কর্মঠ, তবুও তাঁদের পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন হয়।
জীবনে সমস্ত ক্ষেত্রেই ভারসাম্য বজায় রাখতে পছন্দ করেন তুলা রাশির জাতক-জাতিকাগণ। এই ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে তাঁদের মানসিক ভারসাম্যকে ঠিক রাখতে হয়। কোনও সমস্যা বা উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হলে তাঁরা ঘুমিয়ে পড়তেই পছন্দ করেন। তুলা রাশির জাতকেরা মানসিক চাপ বা কোলাহল পছন্দ করেন না।
ঘুম তাদের শান্ত এবং সুখী থাকতে সাহায্য করে। ভাল ঘুম না হলে সারা দিনে কোনও কাজেই ঠিকমতো মনঃসংযোগ করতে পারেন না তাঁরা। কখনও যদি ঘুম কম হয়, তা হলে পরের দিন বেশি ঘুমিয়ে তা পূরণ করে নেয় এই রাশি। সব কাজেই সমতা রাখার ক্ষমতা এই রাশির খুব বেশি।
মীন রাশির মানুষ ঘুমোতে বেশি পছন্দ করেন। সব কিছুর থেকে ঘুম এঁদের বেশি প্রিয়। এঁরা যখন ঘুমোন তখন এঁদের চোখেমুখে একটা উত্তেজনা ফুটে থাকে। এঁরা যখন ঘুমোন তখন এঁদের স্নায়ু উত্তেজিত অবস্থায় থাকে। ঘুম থেকে জেগে উঠলে এঁরা বিরক্ত হয়ে থাকেন। তাই এঁরা শান্তিপূর্ণ ভাবে ঘুমোতে চান।
সৃজনশীল রাশি হিসাবে চিহ্নিত মীন রাশি। অনুভূতি এবং কল্পনায় ভরা নিজস্ব জগতে বাস করতে পছন্দ করে তাঁরা। ঘুমের সময় যে জিনিসটা তাঁদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে সেটি হল স্বপ্ন। স্বপ্নের জগৎ তাঁদের এমন একটি জায়গা দেয় যেখানে তারা নিজেদের কল্পনাপ্রবণ মনকে সম্পূর্ণ রূপে মিশিয়ে দিতে পারেন। নিজেকে তরতাজা রাখতে অল্প সময়ের জন্যও চোখের পাতা বন্ধ করে নিতে পছন্দ করেন মীন রাশির জাতক-জাতিকারা।