Bollywood Gossip

নায়ক-পরিচালক স্বামীকে নায়িকাদের সঙ্গে সন্দেহ করতেন! বলি অভিনেত্রীর জন্যই নাকি সংসার ভাঙে বাঙালি গায়িকার

হিন্দি সিনেমার এক অন্যতম বলিষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্যই নাকি ভেঙে গিয়েছিল বলি পরিচালক এবং বাঙালি গায়িকার দাম্পত্য। যদিও বিবাহ-বহির্ভূত সেই সম্পর্ক নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি ওই বলি নায়িকা। পরে ক্রমশ অর্থকষ্ট আর মদের নেশায় জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন পরিচালক।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৫ ১০:১৩
Share:
০১ ১৮

এক দিকে সঙ্গীতজগতের অন্যতম বলিষ্ঠ গায়িকা, অন্য দিকে হিন্দি চলচ্চিত্রজগতের নামকরা পরিচালক। তিন বছর প্রেম করে তার পর বিয়ে করেছিলেন দুই তারকা। তিন সন্তান, কেরিয়ার নিয়ে সুখের সংসার ছিল তাঁদের। কিন্তু সময়ের চাকায় তাঁদের সম্পর্কের মোড় অন্য দিকে ঘুরে যায়। এক দিকে চরম অর্থাভাব, অন্য দিকে এক বলি অভিনেত্রীর সঙ্গে ‘পরকীয়া’ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার জন্যই গুরু দত্তের সংসার ভেঙে গিয়েছিল।

০২ ১৮

চল্লিশের দশকে কোরিয়োগ্রাফার হিসাবে বলিপাড়ায় কাজ শুরু করেছিলেন গুরু। ১৯৪৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘চাঁদ’ ছবিতে গুরুর দক্ষতা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন বলি অভিনেতা দেব আনন্দ। শোনা যায়, তিনিই নাকি গুরুকে পরিচালনার জগতে পা রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। বন্ধুর কথা শুনে পরিচালনার ক্ষেত্রে কেরিয়ার শুরু করেন গুরু।

Advertisement
০৩ ১৮

১৯৫১ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘বাজ়ি’ নামের হিন্দি ছবি। গুরু পরিচালিত এই ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনাও করেছিলেন দেব। এই ছবির হাত ধরে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন গুরু। তার পর একের পর এক হিট ছবি পরিচালনা করতে শুরু করেছিলেন তিনি। এই ছবির মাধ্যমেই ব্যক্তিগত জীবন বদলে গিয়েছিল তাঁর।

০৪ ১৮

বলিপাড়ার একাংশের দাবি, ‘বাজ়ি’ ছবির মাধ্যমেই গীতা দত্তের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল গুরুর। পেশাগত সূত্রে আলাপ হলেও গীতার সুরেলা কণ্ঠ শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে প্রেম শুরু হয়েছিল তাঁদের। তিন বছর সম্পর্কে থাকার পর ১৯৫৩ সালের মে মাসে গীতা এবং গুরু বিয়ে করেছিলেন।

০৫ ১৮

কানাঘুষো শোনা যেতে থাকে যে, গুরুকে প্রথমে পছন্দ ছিল না গীতার পরিবারের। গুরুর সঙ্গে বাড়ির মেয়ের বিয়ে দিতে চাইতেন না তাঁরা। কারও কারও মতে, গীতা তাঁর পরিবারে উপার্জনকারী একমাত্র সদস্য ছিলেন। বিয়ে হলে পাছে অর্থাভাবের মুখে পড়েন, তাই গুরুর সঙ্গে গীতার বিয়ে দিতে চাননি তাঁরা।

০৬ ১৮

আবার অনেকে বলাবলি করেন, গুরু নাকি গীতাকে ভালবাসতেন না। তিনি ভালবাসতেন গীতার অর্থকে। টাকাপয়সার জন্য নাকি তিনি গীতাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। শত আপত্তি সত্ত্বেও প্রেমের কাছে সব বাধাই ভেঙে গিয়েছিল। অবশেষে গুরুকেই বিয়ে করেছিলেন গীতা। বিয়ের পর তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি।

০৭ ১৮

কেরিয়ার, স্বামী-সন্তান নিয়ে সুখের সংসার ছিল গীতার। কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন ভোগ করতে পারেননি তিনি। ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, সিনেমার জন্য অর্থাভাবে ভুগতে শুরু করেছিলেন গুরু। গোড়ার দিকে তাঁর ছবি হিট করলেও পরে আর তেমন ব্যবসা করতে পারছিল না ছবিগুলি। শোনা যায়, টাকা জোগাড়ের জন্য নিজের সম্পত্তি বিক্রি করতে শুরু করে দিয়েছিলেন গুরু। এমনকি, সাধারণ ভাবে জীবনযাপন করতে শুরু করে দিয়েছিলেন তারকা। তার প্রভাব গীতা এবং তাঁদের সন্তানদের উপরেও পড়তে শুরু করেছিল।

০৮ ১৮

বলিপাড়ার অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, গুরু নাকি গীতার পেশাগত জীবনেও নাক গলাতে শুরু করেছিলেন। আসলে, গুরু যে গীতার প্রতি আর্থিক ভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়তে পারেন এমন কথা মাঝেমধ্যেই হাওয়ায় উড়তে শুরু করেছিল। গুরুর কানেও সে কথা যায়। আত্মসম্মানের জায়গা থেকেই তিনি নাকি গীতাকে সব জায়গায় গান গাইতে দিতেন না তিনি। শুধুমাত্র নিজে কোনও ছবি পরিচালনা করলেই সেখানে গান গাওয়ার অনুমতি ছিল গীতার।

০৯ ১৮

বলিপাড়ার জনশ্রুতি, স্বামীকে নিয়ে নাকি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করে দিয়েছিলেন গীতাও। গুরু তাঁর যে ছবিতে যে নায়িকার সঙ্গে কাজ করতেন, সেই নায়িকাকে নিয়েই সন্দেহ জাগত গীতার। এমনকি, গুরুর সঙ্গে নায়িকাদের সম্পর্ক নিয়ে গোপনে খোঁজখবরও নিতেন গীতা।

১০ ১৮

গীতার এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের দাবি, অধিকাংশ সময় গুরু এবং গীতার সংসারে অশান্তি লেগে থাকত। ঝগড়া করে ছেলেমেয়েদের নিয়ে মাঝেমধ্যেই বাপের বাড়ি চলে যেতেন গীতা। স্ত্রীর রাগ ভাঙিয়ে তার পর তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হত গুরুকে। তার পর তাঁদের সংসারে নাকি ঘটেছিল এক ‘তৃতীয় ব্যক্তি’র আগমন।

১১ ১৮

হিন্দি সিনেমার এক অন্যতম বলিষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্যই নাকি ভেঙে গিয়েছিল গুরু এবং গীতার দাম্পত্য। যদিও বিবাহ-বহির্ভূত সেই সম্পর্ক নিয়ে কখনওই স্পষ্ট করে কিছু বলেননি ওই বলি নায়িকা। মূলত নৃত্যশিল্পী হিসাবে ১৯৫৫ সালে তেলুগু ভাষার ছবি ‘রোজুলু মারাই’-এ অভিনয় করেছিলেন ওয়াহিদা রহমান। তার পর আরও কয়েকটি দক্ষিণী ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। ক্রমশ নৃত্যশিল্পী থেকে অভিনেত্রী হয়ে উঠছিলেন তিনি। সেই সময় ওয়াহিদা নজরে পড়েছিলেন পরিচালক-প্রযোজক গুরুর।

১২ ১৮

বলিপাড়া সূত্রে খবর, কাজের সূত্রে ওয়াহিদাকে মুম্বইয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন গুরু। ১৯৫৬ সালের ‘সিআইডি’ ছবিতে ওয়াহিদাকে অভিনয়ের সুযোগ দিয়েছিলেন গুরু। এই ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করে হিন্দি সিনেমায় পা রেখেছিলেন ওয়াহিদা। অভিনয়ের গুণে খুব অল্প দিনেই ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা করে ফেলেছিলেন ওয়াহিদা। দেব আনন্দের সঙ্গে তাঁর জুটি বক্স অফিসে দারুণ জনপ্রিয় ছিল। ধীরে ধীরে প্রথম সারির অভিনেত্রী হয়ে উঠছিলেন তিনি।

১৩ ১৮

১৯৬২ সালে সত্যজিৎ রায়ের ছবি ‘অভিযান’-এ স্মরণীয় অভিনয় করেছিলেন ওয়াহিদা। ষাটের দশকে গুরু এবং ওয়াহিদার সম্পর্ক ছিল বলিপাড়ার কাছে চর্চার বিষয়। গুরুকে নিজের ‘মেন্টর’ মনে করতেন ওয়াহিদা। ‘প্যায়াসা’, ‘এক ফুল চার কাঁটে’, ‘চৌধভি কা চাঁদ’ প্রভৃতি ছবির সুবাদে আর্থিক ক্ষতি কিছুটা সামলে উঠছিলেন গুরু। এই সব ছবিতে গুরুর সঙ্গে কাজ করেছিলেন ওয়াহিদা।

১৪ ১৮

শোনা যায়, ওয়াহিদার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জন্য গীতার সঙ্গে ক্রমাগত দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল। অশান্তি চরমে উঠলে সন্তানদের নিয়ে গীতা বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। ক্রমশ অর্থকষ্ট আর মদের নেশায় জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন গুরু। ত্রিকোণ সম্পর্কের জেরে তিন জনের কেরিয়ারই ধাক্কা খেতে শুরু করেছিল।

১৫ ১৮

ভাল সম্পর্ক থাকলেও পরে নিজেকে গুরুর জীবন থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন ওয়াহিদা। ১৯৬২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘সাহেব বিবি অউর গুলাম’ ছিল তাঁদের একসঙ্গে শেষ কাজ। সব দিক থেকে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন গুরু। বলিপাড়া সূত্রে খবর, দু’বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।

১৬ ১৮

১৯৬৪ সালে নিজের ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল গুরুকে। চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধই তাঁর রহস্যজনক মৃত্যুর কারণ। স্বামীর মৃত্যুর আট বছর পর ১৯৭২ সালে মাত্র ৪১ বছর বয়সে সিরোসিস অফ লিভারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল গীতার।

১৭ ১৮

গীতার মৃত্যুর দু’বছর পর বিয়ে করেছিলেন ওয়াহিদা। ১৯৭৪ সালে সহ-অভিনেতা শশী রেখি ওরফে কমলজিৎকে বিয়ে করেছিলেন নায়িকা। ১৯৬৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘শগুন’ ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন তাঁরা। বিয়ের পর বেঙ্গালুরুতে থাকতে শুরু করেছিলেন ওয়াহিদা। ২০০০ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর আবার মুম্বই ফিরে যান ওয়াহিদা। তার পর থেকে মুম্বইয়েই রয়েছেন নায়িকা।

১৮ ১৮

গুরুর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বিশেষ ভাবে কিছু না জানালেও এক সাক্ষাৎকারে ওয়াহিদা জানিয়েছিলেন, তাঁদের শ্রদ্ধা এবং ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। নায়িকার কথায়, ‘‘আমাদের মধ্যে যে ভালবাসা ছিল, তা নিখুঁত ছিল না। বরং সেই ভালবাসা সত্য ছিল। সিনেমার প্রতি আগ্রহ থেকে আমাদের ভালবাসা জেগে উঠেছিল। আমরা সব সময় চাইতাম, খুব সুন্দর কিছু সৃষ্টি করতে।’’

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement