Bollywood Gossip

খেতে দিতেন না স্ত্রী, তাড়িয়েও দেন বাড়ি থেকে! ২০ বছর ধরে অন্যের স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করেছিলেন বলি অভিনেতা

বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর নাকি মুম্বইয়ে পেয়িং গেস্ট হিসাবে থাকতেন অভিনেতা। বলিউডের গুঞ্জন, বিয়ের পর নাকি অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। সে কথা জানতে পেরে অভিনেতাকে বাড়ি থেকে বার করে দিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। বিবাহবিচ্ছেদের আবেদনও করেছিলেন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৫ ১৬:২৩
Share:
০১ ২৫

নব্বইয়ের দশক থেকে বলিপাড়ায় অভিনয় শুরু। নায়ক হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই এসেছিলেন অভিনয়জগতে। কিন্তু থেকে গিয়েছিলেন সহ-অভিনেতা হয়ে। পেশাগত জীবনে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। এমনকি, ভেঙে গিয়েছিল তাঁর সুখী দাম্পত্যজীবনও। ২০ বছর একসঙ্গে সংসার করার পর বলি অভিনেতা দীপক তিজোরী জানতে পেরেছিলেন যে, তিনি অন্যের স্ত্রীর সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন।

০২ ২৫

অভিনয়ের প্রতি বরাবর আগ্রহ ছিল দীপকের। তাঁর মা ছিলেন নৃত্য এবং বেতারশিল্পী। মুম্বইয়ে স্কুল এবং কলেজের পড়াশোনা শেষ করেন দীপক। তবে কলেজে পড়াশোনা চলাকালীন নাটকের দলে নাম লেখান তিনি। আমির খান, আশুতোষ গোয়ারিকর এবং পরেশ রাওয়ালের মতো বলি তারকারা সেই নাট্যদলের সদস্য ছিলেন।

Advertisement
০৩ ২৫

বড় পর্দায় অভিনয়ের জন্য দীপককে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন তাঁর বন্ধু। বন্ধুর কথা শুনে অডিশন দিতেও গিয়েছিলেন দীপক। কিন্তু কেরিয়ারের গোড়ার দিকে নানা বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন যে, তিন বছর ধরে প্রযোজকদের দোরে দোরে ঘুরেছিলেন তিনি। অনেকেই তাঁকে ফিরিয়ে দিতেন। কখনও আবার খুবই ছোট চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেতেন দীপক।

০৪ ২৫

বলিপাড়া সূত্রে খবর, রোজগারের জন্য একটি হোটেলে ম্যানেজারের পদে চাকরি শুরু করেছিলেন দীপক। এমনকি, একটি চলচ্চিত্র পত্রিকাতেও বেশ কিছু দিন কর্মরত ছিলেন তিনি। তার মধ্যেই অভিনেতা হওয়ার স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন দীপক।

০৫ ২৫

দীপকের প্রথম অভিনয় টেলিভিশনের পর্দায়। কয়েকটি ধারাবাহিকে কাজ করার পর তিনি বড় পর্দায় অভিনয়ের সিদ্ধান্ত নেন। বড় পর্দায় তাঁর প্রথম অভিনয় ১৯৮৮ সালে ‘তেরা নাম মেরা নাম’ ছবিতে। তার পর ‘ম্যায়ঁ তেরা দুশমন’, ‘পর্বত কে উস পার’, ‘ক্রোধ’-সহ বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু সবই ছোটখাটো চরিত্রে।

০৬ ২৫

১৯৯০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘আশিকি’ ছবিতে অভিনয় করে পরিচিতি পান দীপক। তার পর ‘দিল হ্যায় কে মানতা নহীঁ’, ‘সড়ক’, ‘খিলাড়ি’, ‘জো জিতা ওহি সিকন্দর’-এর মতো বহু হিন্দি ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কিন্তু ধীরে ধীরে দীপকের নাম উঠে যায় সহ-অভিনেতাদের খাতায়।

০৭ ২৫

অজয় দেবগণ, অক্ষয় কুমার, সুনীল শেট্টির মতো নায়কেরা যখন ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁদের পায়ের নীচে জমি পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছেন, তখন দীপক প্রতিষ্ঠিত তারকা হলেও তাঁকে টেক্কা দেন সকলে। বলিপাড়ায় নায়ক হতে আসা দীপক আর সফল হতে পারেননি।

০৮ ২৫

বলিউডের জনশ্রুতি, ‘জো জিতা ওহি সিকন্দর’ ছবির জন্য অডিশন দিয়েছিলেন অক্ষয় কুমারও। কিন্তু অক্ষয়কে বাদ দিয়ে তাঁর পরিবর্তে প্রযোজক-পরিচালকের পছন্দ হয়েছিল দীপককে। বন্ধুসম পরিচালক আশুতোষ গোয়ারিকর তাঁর প্রথম ছবি ‘পহেলা নশা’-য় নায়কের ভূমিকায় কাজ দিয়েছিলেন দীপককে। দীপকের বিপরীতে সেই ছবির নায়িকা ছিলেন পূজা ভট্ট এবং রবিনা টন্ডন।

০৯ ২৫

বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছিল ‘পহেলা নশা’। এই ছবির সঙ্গে সঙ্গে দীপকের নায়ক হওয়ার স্বপ্ন চিরতরে ফুরিয়ে যায়। অন্য দিকে, পার্শ্বচরিত্রাভিনেতার ক্ষেত্রেও বলিউডে প্রতিযোগিতা বাড়ছিল। অক্ষয় কুমার, অজয় দেবগণ বা সুনীল শেট্টির মতো অভিনেতারা স্বচ্ছন্দে তারকাসমন্বিত ছবিতে অভিনয় করতে রাজি হয়ে যেতেন। ফলে এত দিন দীপকের কাছে কাজের যে সুযোগ আসত, তা-ও হাতছাড়া হয়ে যেতে শুরু করল।

১০ ২৫

বলিপাড়ার গুঞ্জন, হাতের কাছে যে সুযোগ পেতেন, কেরিয়ারের দায়ে তা নিতেই বাধ্য হতে থাকেন দীপক। ‘সন্তান’ ছবিতে খলনায়কের ভূমিকায় তিনি অভিনয় করেন। কিন্তু সেই ছবিও ব্যর্থ হয় বক্স অফিসে। একটানা পার্শ্বনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন দীপক। তাই পরিচালনার জগতে পা রাখার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

১১ ২৫

২০০৩ সালে দীপকের পরিচালনায় মুক্তি পায় ‘উপস’। সেন্সর বোর্ডে বহু জটিলতার মুখোমুখি হয়েছিল ছবিটি। এই ছবির চিত্রনাট্যকার, পরিচালক এবং প্রযোজকের দায়িত্ব সমস্তই পালন করেছিলেন দীপক। কিন্তু ছবিটি ব্যবসা করতে ব্যর্থ হওয়ায় আর্থিক লোকসানের মুখে পড়েন তিনি। আর্থিক সঙ্গতি ফেরাতে দীপক ‘বিগ বস্‌’-এর মতো টেলিভিশন শোয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এর পর আরও কিছু ছবি তিনি পরিচালনা করেন। কিন্তু তাঁর পরিচালিত কোনও ছবিই সফল হয়নি।

১২ ২৫

এক সাক্ষাৎকারে দীপক জানিয়েছিলেন যে, ‘ম্যায়নে প্যার কিয়া’ ছবিতে নায়কের চরিত্রের জন্য অডিশন দিয়েছিলেন তিনি। প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে নাকি তাঁর কাজের কথাও হয়েছিল। দীপকের কথায়, ‘‘অডিশনের পর বরজাতিয়া ফিল্মস আমাকে জানিয়েছিল যে, ছবির প্রয়োজনে আমার নাম পাল্টাতে হতে পারে। আমাকে কী ভাবে ছবির জগতে পরিচয় করাবে, তা নিয়েও কথা বলবে বলেছিল।’’ কিন্তু পরে ছবি থেকে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়। তাঁর পরিবর্তে সেই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সলমন।

১৩ ২৫

দীপকের দাবি, ‘বাজিগর’ ছবির ভাবনা তাঁর কাছ থেকে চুরি করেছিলেন বলিপাড়ার ছবিনির্মাতা আব্বাস-মস্তান। শাহরুখ খানের চরিত্রে আসলে অভিনয় করার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তাঁকে অন্ধকারে রেখে সেই চরিত্রের জন্য শাহরুখকে বেছে নিয়েছিলেন পরিচালকদ্বয়।

১৪ ২৫

১৯৯১ সালে মুক্তি পায় আমেরিকান ক্রাইম থ্রিলার ‘আ কিস্‌ বিফোর ডায়িং’। সেই ছবির গল্প অবলম্বনেই তৈরি হয় ‘বাজিগর’ ছবি। এক সাক্ষাৎকারে দীপক বলেছিলেন, ‘‘আমি ‘আ কিস্‌ বিফোর ডাইং’ ছবিটি দেখার পর আব্বাস-মস্তানের কাছে যাই। ছবির ভাবনা ওঁদের পছন্দ হয়েছিল। আমি সেই সময় খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমায় কিছু জানাননি ওঁরা। পরে জানতে পারি যে, শাহরুখ সেই চরিত্রে অভিনয় করছেন।’’

১৫ ২৫

পেশায় ফ্যাশনশিল্পী শিবানীকে বিয়ে করেছিলেন দীপক। পরিচালক কবীর সদানন্দ এবং গায়িকা কুনিকা পালের বোন শিবানী। ২০০৯ সাল থেকে গোরেগাঁওয়ের একটি ফ্ল্যাটে পরিবার-সহ থাকতেন দীপক। সেই ফ্ল্যাটটি ছিল তাঁর স্ত্রীর নামে।

১৬ ২৫

বলিপাড়ার অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, যে আবাসনে দীপক তাঁর স্ত্রী এবং কন্যাকে নিয়ে থাকতেন সেই আবাসন কর্তৃপক্ষ নানা কারণে তাঁদের আচরণে ক্ষুব্ধ ছিলেন। অভিযোগ, তিজোরী পরিবার ঠিক সময়ে ফ্ল্যাটের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ দিতেন না। ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে তাঁদের ফ্ল্যাট ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন আবাসন কর্তৃপক্ষ। আইনি লড়াইয়ের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নেন দীপক। ২০১৪ সালের অক্টোবর মাসে আইনি লড়াইয়ে ফ্ল্যাটে থাকার অধিকার ফিরে পান দীপক এবং তাঁর পরিবার।

১৭ ২৫

কেরিয়ারের পাশাপাশি দাম্পত্যজীবনেও আশাভঙ্গ হয়েছিল দীপকের। অভিযোগ, দাম্পত্য সমস্যার জেরে দীপককে বাড়ি থেকে বার করে দিয়েছিলেন শিবানী। পরে বাড়ির মাত্র একটি ঘর দীপককে ব্যবহার করতে দিতেন তিনি। পরিচারকদের ওপর কড়া নির্দেশ ছিল দীপককে যেন কোনও খাবার না দেওয়া হয়। এমনকি, তাঁর ঘরও পরিষ্কার করতে দিতেন না শিবানী।

১৮ ২৫

বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর নাকি মুম্বইয়ে পেয়িং গেস্টে থাকতেন দীপক। বলিউডের গুঞ্জন, বিয়ের পর অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন দীপক। সে কথা জানতে পেরেই দীপককে বাড়ি থেকে বার করে দিয়েছিলেন শিবানী। পাশাপাশি বিবাহবিচ্ছেদের আবেদনও করেছিলেন তিনি।

১৯ ২৫

বিবাহবিচ্ছেদের নোটিস পাওয়ার পর আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করেন দীপক। তখনই বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের সময় দীপক জানতে পারেন যে, ২০ বছর ধরে তিনি যাঁর সঙ্গে সংসার করছিলেন, তিনি আগে থেকেই বিবাহিতা। শিবানী নাকি দীপককে বিয়ের আগে তাঁর আগের পক্ষের স্বামীর থেকে বিচ্ছেদই নেননি।

২০ ২৫

২০১৭ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শিবানী সম্পর্কে দীপক জানান, তিনি নাকি শিবানীর অতীত সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। তাঁর কাছে সব কিছু গোপন রেখেছিলেন শিবানী। তার ফলে দীপকের সঙ্গে শিবানীর বিয়ে আইনি স্বীকৃতিই পায় না। শিবানীকে ভরণপোষণ দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন দীপক।

২১ ২৫

আত্মপক্ষ সমর্থনে মুখ খুলেছিলেন শিবানীও। তাঁর দাবি, প্রথম বিয়েটা তাঁর জীবনের খুব বড় ভুল ছিল। ‘প্রাক্তন’ স্বামীর সঙ্গ পরিত্যাগ করলেও তাঁর সঙ্গে যে আইনি বিচ্ছেদ হয়নি সে কথা দীপককে জানিয়েছিলেন তিনি। সব কিছু জানার পরেও তাঁকে নিয়ে নাকি কুৎসা রটিয়েছেন দীপক।

২২ ২৫

২০২৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘টিপসি’ নামের একটি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় দীপককে। বড় পর্দায় এখনও পর্যন্ত এই ছবিতেই তাঁর শেষ অভিনয়। ‘টিপসি’ ছবির পরিচালক এবং চিত্রনাট্যকারের দায়িত্বও সামলান তিনি।

২৩ ২৫

বড় পর্দার পাশাপাশি ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও অভিনয় দেখা গিয়েছে দীপকের। ইতিমধ্যে ‘অভয়’, ‘বুলেট্‌স’ এবং ‘ইললিগাল— জাস্টিস, আউট অফ অর্ডার’ নামের ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন তিনি।

২৪ ২৫

হলিউডের একাধিক ছবির হিন্দি সংস্করণে কণ্ঠ দিতে শোনা গিয়েছে দীপককে। মার্ভেলের ‘থর: রাগনারক’ নামের ছবিতে গ্র্যান্ডমাস্টার চরিত্রের জন্য হিন্দি ভাষায় ডাবিং করেছিলেন দীপক।

২৫ ২৫

২০১৮ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ইনক্রেডিবল্স ২’ নামের ইংরেজি ভাষার একটি অ্যানিমেটেড ছবি। বলিপাড়া সূত্রে খবর, এই ছবিতে মিস্টার ইনক্রেডিবলের চরিত্রের জন্য হিন্দি ভাষায় ডাবিং করেছিলেন দীপক। এই ছবির প্রথম পর্বে একই চরিত্রের জন্য হিন্দিতে ডাবিং করেছিলেন শাহরুখ।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement