Puna

অষ্টাদশ শতকের এই কেল্লায় নাকি কেঁদে বেড়ায় তরুণ পেশওয়ার অতৃপ্ত আত্মা

এক গভীর রাতে কেল্লা আক্রমণ করল গর্দি উপজাতিরা। ঘুমন্ত নারায়ণকে তারা ঘিরে ফেলল। ঘুম থেকে উঠে নারায়ণ বুঝতে পারলেন শিয়রে দাঁড়িয়ে মৃত্যু। তিনি ছুটলেন কাকার মহলের দিকে। সঙ্গে আর্ত চিৎকার, ‘কাকা, মালা ভাচওয়া…’। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দে নারায়ণরাও-কে হত্যা করা হয় নৃশংস ভাবে। আজও নাকি তাঁর আত্মা কেঁদে বেড়ায় প্রসাদে।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৬:৩৬
Share:
০১ ১০

দেশের ‘ভৌতিক’ ঐতিহাসিক সৌধের মধ্যে অন্যতম পুণের শনিবারওয়াড়া কেল্লা। জনশ্রুতি, ২৮৯ বছরের প্রাচীন এই কেল্লায় আজও ঘুরে বেড়ায় এক তরুণ পেশওয়ার বিদেহী আত্মা। প্রতি পূর্ণিমার রাতে নাকি শোনা যায় কিশোর কণ্ঠের আর্তনাদ। সেই অশরীরী কণ্ঠ নাকি বলে, ‘কাকা, মাল ভাচওয়া’। বাংলায় যার অর্থ, ‘কাকা, আমার প্রাণ বাঁচাও’।

০২ ১০

কেল্লার নামকরণের পিছনেও আছে এক কাহিনি। ১৭৩০ খ্রিস্টাব্দের ১০ জানুয়ারি কেল্লার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন পেশওয়া প্রথম বাজিরাও। সে দিনটি ছিল শনিবার। তার থেকেই কেল্লার এই নাম-প্রাপ্তি। মরাঠি ভাষায় ‘ওয়াড়া’ কথার অর্থ বসতবাড়ি। ১৭৩২ খ্রিস্টাব্দের ২২ জানুয়ারি, যে দিন কেল্লায় পা রেখেছিল পেশওয়া বংশ, সে দিনটিও ছিল এক শনিবার।

Advertisement
০৩ ১০

১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বাজিরাওয়ের প্রয়াণে পেশওয়া হন বালাজি বাজিরাও। তিনি ছিলেন প্রথম বাজিরাও এবং কাশীবাঈয়ের পুত্র। বালাজি বাজিরাওয়ের তিন পুত্র। মাধবরাও, বিশ্বাসরাও এবং নারায়ণরাও | পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে নিহত হন বালাজি বাজিরাও এবং বিশ্বাস রাও | পরবর্তী পেশওয়া হন মাধবরাও| কিন্তু ভাইয়ের শোকে তিনিও দ্রুত পরলোকগমন করেন|

০৪ ১০

এর পর পেশওয়ার সিংহাসনে বসেন ষোলো বছর বয়সি কিশোর নারায়ণরাও। নাবালক নারায়ণকে সামনে রেখে রাজ্য চালাতে থাকেন প্রথম বাজিরাও-কাশীবাঈ-এর আর এক ছেলে রঘুনাথরাও |

০৫ ১০

এই ব্যবস্থা মানতে রাজি ছিলেন না রঘুনাথের স্ত্রী আনন্দী বাঈ | তিনি চাইলেন পেশওয়ানি হতে | এ দিকে পেশওয়া হয়ে নারায়ণরাও নিজেও আর কাকার অধীনে থাকতে চাইলেন না | বিপদ বুঝে রঘুনাথ হাত মেলালেন শিকারি উপজাতি গর্দিদের দলপতির সঙ্গে|

০৬ ১০

গর্দিদের নির্দেশ দিলেন রঘুনাথ। গোপন পত্রে লিখলেন, বন্দি করা হোক নারায়ণকে। কিন্তু সেই চিঠি হাতে পেয়ে নতুন অভিসন্ধি করলেন আনন্দী বাঈ। সেই চিঠি পাল্টে দিলেন। পেশওয়ার সিলমোহরে লিখলেন, নারায়ণকে হত্যা করা হোক।

০৭ ১০

এক গভীর রাতে কেল্লা আক্রমণ করল গর্দি উপজাতিরা। ঘুমন্ত নারায়ণকে তারা ঘিরে ফেলল। ঘুম থেকে উঠে নারায়ণ বুঝতে পারলেন শিয়রে দাঁড়িয়ে মৃত্যু। তিনি ছুটলেন কাকার মহলের দিকে। সঙ্গে আর্ত চিৎকার, ‘কাকা, মালা ভাচওয়া…’। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দে নারায়ণরাও-কে হত্যা করা হয় নৃশংস ভাবে। আজও নাকি তাঁর আত্মা কেঁদে বেড়ায় প্রসাদে।

০৮ ১০

আনন্দী বাঈ সফল হয়েছিলেন লক্ষ্যপূরণে। রঘুনাথরাওয়ের পরে পেশওয়া হয়েছিলেন আনন্দীর পুত্র দ্বিতীয় বাজিরাও। তাঁরই দত্তক পুত্র ঢোন্ধু পন্থ ভারতীয় ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন সিপাহি বিদ্রোহের নানাসাহিব হয়ে।

০৯ ১০

১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে তৃতীয় ইঙ্গ মরাঠা যুদ্ধে পতন হয় মরাঠা শক্তির। তার আগে অবধি এই দুর্গ ছিল পেশওয়াশক্তির শাসনকেন্দ্র। নিজের স্বর্ণযুগে এই দুর্গের বাসিন্দা ছিলেন অন্তত এক হাজার জন।

১০ ১০

১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ভয়ঙ্কর ক্ষতিগ্রস্ত হয় শনিবারওয়াড়া দুর্গ। এখন যা দাঁড়িয়ে আছে, তা আগের থেকে অনেকটাই জৌলুসহীন। কিন্তু পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। তাতে আলাদা মাত্রা এনেছে অশরীরী-যোগ। (ছবি : সোশ্যাল মিডিয়া)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement