Amirbai

অত্যাচার থেকে বাঁচতে স্বামীকে গাড়ি কিনে দেন, সেই গাড়িতেই অপহরণ গান্ধীর প্রিয় গায়িকাকে!

গানকে প্রাণের থেকেও বেশি ভালবাসতেন। নিজের গান বাঁচানোর জন্য বড় দাম দিতেও পিছপা হননি তিনি। সে যুগে গায়িকা বা নায়িকাদের যোগ্য সম্মান দেওয়া হত না। আমিরবাই ছিনিয়ে এনেছিলেন সম্মান।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৬:৪৪
Share:
০১ ১৫

তাঁর কণ্ঠের জাদুতে এক সময় মজেছিল আসমুদ্রহিমাচল। এমনকি তাঁর ভজনের ভক্ত ছিলেন মহাত্মা গান্ধী। গানকে প্রাণের থেকেও বেশি ভালবাসতেন আমিরবাই। নিজের গান বাঁচানোর জন্য বড় দাম দিতেও পিছপা হননি তিনি। সে যুগে গায়িকা বা নায়িকাদের যোগ্য সম্মান দেওয়া হত না। সমাজের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমিরবাই ছিনিয়ে এনেছিলেন সম্মান।

০২ ১৫

‘বৈষ্ণব জন তো তেনে কহিয়ে’, এই ভজন খুব প্রিয় ছিল মহাত্মা গান্ধীর। গুজরাতি এই ভজন গেয়েছিলেন কন্নড় গায়িকা আমিরবাই। তাঁর কণ্ঠে এই গান শুনতে খুব পছন্দ করতেন গান্ধী।

Advertisement
০৩ ১৫

শুধু ভজন নয়, ছবির গানও গেয়েছিলেন আমিরবাই। কন্নড়, হিন্দি, মারাঠা ভাষায় শতাধিক গান গেয়েছিলেন তিনি। হিন্দি ছবিতে অভিনয়ও করেন। চল্লিশের দশকে হিন্দি ছবির জগতে বিখ্যাত হয়ে উঠেছিলেন আমিরবাই। প্রায় ৩৮০টি গান গেয়েছিলেন।

০৪ ১৫

জন্মের দিন জানা যায়নি। ১৯১২ সালে কর্নাটকের বিজাপুরে জন্ম হয়েছিল আমিরবাইয়ের। ওই বছরই তৈরি হয়েছিল প্রথম ভারতীয় সিনেমা ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’। আমিরের বাবা হুসেন সাব, মা আমিনাবাইও ছিলেন সঙ্গীতশিল্পী। নাটকে গান গাইতেন তাঁরা।

০৫ ১৫

বাবা-মায়ের থেকেই গানের তালিম পেয়েছিলেন আমিরবাই। তাঁর বাকি চার বোনও ছিলেন সুগায়িকা। বিজাপুর তখন নাচের আঁতুড়ঘর। বিখ্যাত মরাঠি নাট্যকার বাল গন্ধর্ব তখন নিজের দল নিয়ে প্রায়ই আসতেন বিজাপুরে। আমিরবাই এবং তাঁর দিদি গওহরবাইয়ের কণ্ঠ পছন্দ হয় গন্ধর্বের। নিজের দলে তাঁদের গান গাইতে ডাকেন।

০৬ ১৫

গন্ধর্বের নাটকের পাশাপাশি মঞ্চে অনুষ্ঠান করতে শুরু করেন আমির। তখনও নির্বাক ছবির যুগ। তাই সিনেমায় গান গাওয়ার তেমন সুযোগ ছিল না। আর যে মেয়েরা সিনেমায় গান গাইতেন বা অভিনয় করতেন, তাঁদের খুব একটা সম্মান দিত না সমাজ। পরিবারও বাধা দিত।

০৭ ১৫

আমিরবাই এ সব বাধাবিপত্তিতে খুব একটা কান দেননি। ক্রমেই তাঁর ঝোঁক বাড়তে থাকে সিনেমার দিকে। ১৯৩১ সালে প্রথম টকি ‘আলম আরা’ মুক্তি পায়। আর বিজাপুরে বসে থাকেননি আমির। চলে আসেন মুম্বইতে। ঠিক কোন সময়ে মুম্বই এসেছিলেন, তা যদিও নিশ্চিত হয়ে কেউ বলতে পারেননি।

০৮ ১৫

১৯৩৪ সালে ‘বিষ্ণুভক্তি’ ছবিতে প্রথম সুযোগ পান আমিরবাই। ওই ছবিতে ছিলেন তাঁর দিদি গওহরও। তবে ওই ছবিতে আমিরবাইকে সে ভাবে কেউ লক্ষ্যই করেননি। ১৯৩৬ সালে ‘জমানা’ ছবিতে প্রথম নেপথ্যশিল্পী হিসাবে সুযোগ পান আমির। বিখ্যাত হয় তাঁর সেই গান ‘ইস পাপ কি দুনিয়া সে কহি অওর লে চল’।

০৯ ১৫

১৯৪৫ সালে ব্লকব্লাস্টার হিট হয়েছিল ‘কিসমত’। ওই ছবিই তারকার মর্যাদা দিয়েছিলেন অশোক কুমারকে। ছবিতে একটি গান গেয়েছিলেন আমিরবাই। অশোক কুমারের সঙ্গে দ্বৈতকণ্ঠে। তার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি আমিরকে।

১০ ১৫

এক দিকে যখন কেরিয়ার গ্রাফ উঠছিল আমিরবাইয়ের, তখন ব্যক্তিগত জীবনে বাড়ছিল দুর্ভোগ। সে সময় বিখ্যাত ভিলেন আফজল কুরেশিকে বিয়ে করেছিলেন আমির। পর্দার মতো বাস্তব জীবনেও খলচরিত্রেরই ছিলেন কুরেশি। দিনরাত স্ত্রীকে মারধর করতেন। সেখানেই শেষ নয়, স্ত্রীর উপার্জন করা টাকা কেড়ে নিতেন।

১১ ১৫

হিন্দি ছবির জগতে তখন বিখ্যাত হতে শুরু করেছেন লতা মঙ্গেশকর। ক্রমেই জমি হারাচ্ছিলেন আমির। এই পরিস্থিতিতে তাঁর গানে প্রভাব ফেলেছিল ব্যক্তিগত জীবন। ক্রমেই কাজ হারাচ্ছিলেন আমিরবাই। মেনে নিতে পারেননি। স্বামীকে একটি প্রস্তাব দেন। জানান, অঢেল টাকা আর একটি গাড়ি দেবেন স্বামীকে। বদলে তাঁকে ডিভোর্স দিতে হবে।

১২ ১৫

রাজি হয়ে যান কুরেশি। জানিয়েছিলেন, আর কোনও দিন আমিরবাইয়ের জীবনে হস্তক্ষেপ করবেন না। আমির ভেবেছিলেন, আর সমস্যায় পড়তে হবে না। কিন্তু নাহ্‌। সে রকম কিছু হয়নি।

১৩ ১৫

পরের দিনই স্টুডিয়োতে গান রেকর্ড করতে গিয়েছিলেন আমির। কুরেশিকে যে গাড়িটি দিয়েছিলেন, সেই গাড়িতে চেপে আসেন তিনি। স্ত্রীকে অপহরণ করে ওই গাড়িতে চাপিয়েই তুলে নিয়ে যান কুরেশি। ঘরে বন্ধ করে রাখেন। চলে বেধড়ক মারধর।

১৪ ১৫

এর পর আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে বিচ্ছেদের মামলা করেন আমিরবাই। দীর্ঘ টানাপড়েনের পর বিচ্ছেদ হয় আমিরের। এই সম্পর্কের ধাক্কা দীর্ঘদিন বয়ে বেড়াতে হয়েছিল আমিরকে। মানসিক অবসাদে ভুগেছিলেন তিনি। পরে বদ্রি কাঞ্চনওয়ালাকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। সেই বিয়ে সুখের হয়েছিল।

১৫ ১৫

দেশভাগের পর পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন কুরেশি। সেখানে ছবিতে অভিনয় করে বিখ্যাত হয়েছিলেন তিনি। এ দিকে এ দেশে লতা এবং আশা ভোঁসলের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছিলেন আমিরবাই। শেষে ১৯৬৫ সালে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন। শেষে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর।

ছবি: সংগৃহীত

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement