Taiwan Low Birth Rate

জন্মহার তলানিতে, কমছে সৈন্যও! তরুণ প্রজন্মকে সন্তানের জন্মে উৎসাহ দিতে লক্ষ লক্ষ খরচ করছে বুড়িয়ে যাওয়া দ্বীপরাষ্ট্র

ক্রমবর্ধমান গড় আয়ু এবং ক্রমহ্রাসমান জন্মহারের দৌলতে তাইওয়ানের জনসংখ্যার বার্ধক্যের গতি ত্বরান্বিত হচ্ছে। এই সমস্যা মোকাবিলায় তাইওয়ান সরকার নতুন পারিবারিক ভর্তুকি এবং অন্যান্য সুবিধা দিয়ে এই নিম্ন জন্মহারের বিরুদ্ধে লড়াই করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:২২
Share:
০১ ১৫

দেশের জন্মহার তলানিতে ঠেকেছে। মাত্রাতিরিক্ত হয়ে উঠছে দেশের বৃদ্ধ জনগোষ্ঠী। টানা ১৯ মাস ধরে জনসংখ্যার লেখচিত্র নীচের দিকেই রয়েছে। জুলাইয়ের শেষে দেশটির মোট জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ২ কোটি ৩৩ লাখ ৩৭ হাজার ৯৩৬ জনে, যা জুনের তুলনায় ৮,৮০৫ জন কম।

০২ ১৫

৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সি প্রবীণ নাগরিকের সংখ্যা ৪৫ লাখ ৮০ হাজার। দেশটির মোট জনসংখ্যার ১৯.৬৪ শতাংশ। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ৬৪,৩১৪ শিশু জন্ম নিয়েছে। গত বছরের পরিসংখ্যানের তুলনায় প্রায় ১০ হাজার শিশু কম জন্ম নিয়েছে। বার্ষিক মোট জন্মহার ছিল প্রতি হাজারে ৪.৫১।

Advertisement
০৩ ১৫

ক্রমবর্ধমান গড় আয়ু এবং ক্রমহ্রাসমান জন্মহারের দৌলতে তাইওয়ানের জনসংখ্যায় বার্ধক্যের গতি ত্বরান্বিত হচ্ছে। এই সমস্যা মোকাবিলায় তাইওয়ান সরকার নতুন পারিবারিক ভর্তুকি এবং অন্যান্য সুবিধা দিয়ে এই নিম্ন জন্মহারের বিরুদ্ধে লড়াই করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

০৪ ১৫

সন্তান জন্ম দিলেই মিলবে টাকা। ‘তাইওয়ান নিউজ়’-এর এক প্রতিবেদন অনুসারে, নয়া এই সরকারি প্রকল্পের আওতায় সন্তানের জন্মের জন্য বাবা-মায়েরা ২ লক্ষ ৯২ হাজার ৪৬২ টাকা পাবেন। যমজ সন্তানের জন্ম হলে এই টাকার পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি হয়ে যাবে। ৬ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা পাবেন দম্পতি।

০৫ ১৫

এর আগেও তাইওয়ানে সন্তান জন্মের জন্য উৎসাহ ভাতা প্রদান প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। পূর্ববর্তী সেই প্রকল্পে কিছু শর্ত আরোপ করা ছিল। মা যদি চাকরি বা ব্যবসা করেন তার উপর নির্ভর করে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ কমবেশি করা হত। সন্তানের জন্য সরকারি সহায়তা ১৩০০ ডলার থেকে ২৩০০ ডলার পর্যন্ত ছিল।

০৬ ১৫

তাইওয়ান সরকার ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজ়েশনের মাধ্যমে সন্তান ধারণ করতে ইচ্ছুক দম্পতিদের জন্য আর্থিক সহায়তার সম্প্রসারণের কথা ঘোষণা করেছে। ব্যয়বহুল এই পদ্ধতিটিকে আরও সহজলভ্য করার লক্ষ্যে সরকার এখন ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সহায়তা প্রদান করবে। শীঘ্রই মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে এই বিলটি। আশা করা যায় ২০২৬ সালের প্রথমেই এই প্রকল্পটি চালু করবে তাইপেই।

০৭ ১৫

অর্থনৈতিক অস্থিরতা, অভিবাসনে কড়াকড়ি এবং পরিবার ছোট রাখার প্রবণতায় বিশ্ব জুড়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস পেয়েছে। এ সব কিছুর কারণে আগের অনুমানের তুলনায় দ্রুত গতিতে কমছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলিতে। জাপান ছাড়াও এই তালিকায় রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, চিন এবং তাইওয়ানও। ২০২১ সালের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, চিন এবং তাইওয়ানের প্রজননহার সবচেয়ে কম। নারীপিছু শিশুর জন্মের সংখ্যা সেখানে ১.০৭ জন।

০৮ ১৫

অল্পবয়সি ছেলেমেয়েদের সংসার করতে উৎসাহ দিতে এবং পরিবারের সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি করতেই এই উদ্যোগ বলে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। সরকার জনগণকে সন্তানধারণে উৎসাহিত করার জন্য আর্থিক সহায়তার পথ বেছে নিয়েছে।

০৯ ১৫

মোট জনসংখ্যার অনুপাতে তরুণদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। দ্বীপরাষ্ট্রটিতে বুড়ো-বুড়ির সংখ্যা তরুণ ও শিশুর তুলনায় বেশি। বয়সের কারণেই প্রবীণ নাগরিকেরা সচরাচর দেশের উন্নয়নে বিশেষ সহায়তা করেন না। জনসংখ্যায় বয়স্কদের অনুপাত বাড়লে দেশের সার্বিক উৎপাদনশীলতা কমে।

১০ ১৫

প্রশান্ত মহাসাগরীয় ওই দ্বীপরাষ্ট্রটিতে বাধ্যতামূলক সামরিক পরিষেবার নিয়ম রয়েছে। তবুও সেনাবাহিনীতে নতুন নিয়োগের জন্য তরুণদের খুঁজে পেতে হিমশিম খাচ্ছে তাইওয়ান। একসময় ‘আগ্রাসী’ চিনকে আটকাতে আমেরিকা থেকে সামরিক সহায়তা পেত তাইওয়ান। সেই সহায়তার হাত সরতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অর্থাৎ, তাইওয়ানকে নিজের সামরিক জোরেই চিনকে ঠেকাতে হতে পারে।

১১ ১৫

তাইওয়ানের উপর চিনের নজর দীর্ঘ দিনের। বরাবরই তারা দাবি করে এসেছে, সমগ্র তাইওয়ান নাকি চিনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তবে বেজিংয়ের এই দাবিকে বার বার নস্যাৎ করেছে তাইপেই। প্রশাসনিক স্তরে দু’টি সম্পূর্ণ ভিন্ন রাষ্ট্র। চিন কমিউনিস্ট রাষ্ট্র, অন্য দিকে তাইওয়ানে গণতান্ত্রিক প্রশাসন।

১২ ১৫

পাশাপাশি নিরাপত্তার অজুহাতে তাইওয়ানের নাগরিকদের আটক এবং ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে আতঙ্ক তৈরি করছে চিন। বশ্যতা স্বীকার করাতে দ্বীপরাষ্ট্রটিকে ক্রমাগত গুপ্তচরবৃত্তি, সাইবার হামলা, কূটনৈতিক এবং বাণিজ্যিক চাপ দিয়ে চলেছে বেজিং।

১৩ ১৫

আগ্রাসী পড়শি মোকাবিলায় তাইপে হাত গুটিয়ে বসে নেই। সামরিক শক্তিবৃদ্ধির দিকেও নজর দিয়েছে তাইওয়ান। বাড়িয়েছে প্রতিরক্ষা বাজেট। সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে চাই সেনাবাহিনী। তাইওয়ানের ‘লেজিসলেটিভ ইউয়ানের বাজেট সেন্টারের’ তথ্য অনুসারে, গত তিন বছরে স্বেচ্ছাসেবক সৈন্যের সংখ্যা ১২,০০০ কমেছে। সেনাবাহিনীতে বর্তমানে ১ লক্ষ ৫২ হাজার ৮৮৫ জন সৈন্য রয়েছে, যা ২০২১ সালে ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৮৮৪ জন ছিল।

১৪ ১৫

এই বছরের শেষ নাগাদ তাইওয়ানে বয়স্ক সমাজের পরিমাণ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর অর্থ হল তাইওয়ানের জনসংখ্যার ২০ শতাংশেরও বেশি হতে চলেছেন ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সিরা। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট একটি বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, যুদ্ধ এড়াতে এবং শান্তি রক্ষায় আমাদের অবশ্যই সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি, সামাজিক স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করাও জরুরি।

১৫ ১৫

দ্বীপরাষ্ট্রটিতে বিশ্বের নিরিখে নিম্ন জন্মহার রয়েছে। ২০২২ সালে তাইওয়ানের মোট জন্মহার ছিল মাত্র ০.০৮৭। ফরাসি ইনস্টিটিউট ফর ডেমোগ্রাফিক স্টাডিজ়ের গবেষণা অনুসারে, স্থিতিস্থাপক স্তরে পৌঁছোনোর জন্য তাইওয়ানে প্রতি মহিলাকে অন্তত দু’টি সন্তান জন্মদানের প্রয়োজন হবে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement