Nauru Island's citizenship

‘সলিলসমাধি’ আটকাতে নাগরিকত্ব বেচছে ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র! কত লাখে হতে পারবেন সমুদ্রেঘেরা দেশের নাগরিক?

জলবায়ু সঙ্কটের মোকাবিলা করার মতো পর্যাপ্ত সংস্থান বা পরিবেশরক্ষার ব্যবস্থাও নেই নাউরুর মতো ছোট দেশগুলোর। সেই অর্থ জোগানের জন্য সম্প্রতি এই দেশটি নাগরিকত্ব বিক্রির কথা ঘোষণা করেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৫ ১৫:০৫
Share:
০১ ১৬

আয়তনে দক্ষিণ কলকাতার থেকেও ছোট। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের ধারের ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র। দেশটির ক্ষেত্রফল মাত্র ২১ বর্গ কিলোমিটার। সেখানে কলকাতার ক্ষেত্রফল প্রায় ২০৬ বর্গ কিলোমিটার। সেই নিরিখে কলকাতার ১০ ভাগের ১ ভাগ এই দ্বীপরাষ্ট্র। নাম নাউরু।

০২ ১৬

সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঝড়ের তাণ্ডব এবং উপকূলীয় ভাঙনের কারণে অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়েছে বিশ্বের অন্যতম ক্ষুদ্র দেশ নাউরু। বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবের ফলে দ্রুত সমুদ্রের পেটে তলিয়ে যেতে বসেছে দ্বীপটি। সেই সঙ্কট থেকে উদ্ধারের জন্য চাই বিপুল পরিমাণ অর্থ।

Advertisement
০৩ ১৬

এখানকার অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি ছিল ফসফেট। ১৯৭৫ সালে নাউরুর জনগণের মাথাপিছু আয় এত বেশি ছিল যে, তাদের থেকে একমাত্র ধনী রাষ্ট্র ছিল কুয়েত। নাউরুকে তখন বলা হত ‘প্রশান্ত মহাসাগরের কুয়েত’। তেলের রাজ্য কুয়েতের মতোই ফসফেট থেকে বিপুল আয় করত নাউরু।

০৪ ১৬

এককালে খনিজ সম্পদে ফুলেফেঁপে থাকা দ্বীপটির বর্তমানে আর্থিক অবস্থা টলমল। ১৯০০ সালের গোড়ার দিকে নাউরুতে ফসফেট খনির কাজ শুরু হওয়ার ফলে দ্বীপের প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। ফসফেট ফুরিয়ে যাওয়ার পর, রাজস্বের নতুন উৎসের সন্ধান করতে শুরু করেছে নাউরু।

০৫ ১৬

জলবায়ু সঙ্কটের মোকাবিলা করার মতো পর্যাপ্ত সংস্থান বা পরিবেশ রক্ষার ব্যবস্থা নাউরুর মতো ছোট দেশগুলোর নেই। সেই অর্থ জোগানের জন্য সম্প্রতি এই দেশটি নাগরিকত্ব বিক্রির কথা ঘোষণা করেছে। অর্থ সংগ্রহের জন্য দ্বীপটি ‘গোল্ডেন পাসপোর্ট’ দেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে।

০৬ ১৬

১ লাখ ৫ হাজার ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯১ লক্ষ টাকা দিলেই মিলবে উত্তর-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র নাউরুর নাগরিকত্ব। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর প্রতিবেদন অনুসারে নাউরুর পাসপোর্টধারীরা ইংল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুর-সহ বিশ্বের ৮৯টি দেশে ভিসামুক্ত ভ্রমণের সুবিধা পাবেন।

০৭ ১৬

নাগরিকত্ব বিক্রি করে যে তহবিল গড়ে উঠবে তা দিয়ে দেশের সাড়ে ১২ হাজার নাগরিককে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে তুলনামূলক উঁচু ও নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত করা হবে। সেখানে তাঁদের বাসস্থান তৈরি করে দেওয়া হবে। এই টাকা দিয়ে নাউরুর জনপদকে নতুন রূপে গড়ে তোলা হবে বলে সে দেশের সরকার জানিয়েছে।

০৮ ১৬

নাউরুর প্রেসিডেন্ট ডেভিড আদেয়াং সিএনএনকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, গোটা বিশ্বেই জলবায়ু কর্মকাণ্ড নিয়ে বিতর্ক বাড়ছে। নাউরুর বাসিন্দাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার জন্য অবশ্যই সক্রিয় পদক্ষেপ করতে হবে। সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের যেন একটি নিরাপদ ও টেকসই বাড়ি থাকে।

০৯ ১৬

গোল্ডেন পাসপোর্ট নিয়ে ইতিপূর্বে বেশ কিছু অপরাধমূলক কাজকর্মের অভিযোগ উঠেছে। তাই নাগরিকত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেছে নাউরু সরকার।

১০ ১৬

অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়ানোর ইতিহাস রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের নাগরিকত্বের সুযোগ দেওয়া হবে না। যাঁরা অপরাধী বা পুলিশের খাতায় নাম রয়েছে, তাঁরা এখানে থাকতে পারবেন না বলে আগে থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

১১ ১৬

লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিকসের অধ্যাপক কির্স্টিন সুরাক বলেছেন, ‘‘এই নতুন পাসপোর্টধারীদের মধ্যে খুব কম লোকেরই প্রত্যন্ত নাউরুতে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দেশটির নাগরিকত্ব তাঁদের অন্যান্য দেশে ঘুরতে সহায়ক হবে। বিশেষ করে, যাঁদের পাসপোর্টে খুব বেশি ভ্রমণ করা যায় না, তাঁদের জন্য নাউরুর নাগরিকত্ব হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো হতে পারে।’’

১২ ১৬

রাজধানীবিহীন দেশ নাউরু। রাজধানী যেমন নেই, তেমনই দ্বীপটিতে নেই দ্বিতীয় কোনও শহর। ইয়ারেনই একমাত্র শহর যেখানে বেশির ভাগ গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় অবস্থিত। নাউরুর আয়তন এত ছোট যে পুরো দ্বীপ জুড়েই রয়েছে বিমানবন্দরের রানওয়ে। ২০০৫ সাল পর্যন্ত এখানে জেট বিমান অবতরণ করত।

১৩ ১৬

দ্বীপে পর্যটকদের আনাগোনা কম যাওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয় ও অক্ষুণ্ণ রয়েছে। ২০১১ সালে মাত্র ২০০ জন পর্যটক নাউরু গিয়েছিলেন। এখানকার আদি বাসিন্দারা হলেন মাইক্রোনেশীয় ও পলিনেশীয় জাতির মানুষ। মোট জনসংখ্যার ৫৭ শতাংশ মানুষ নাউরুর আদি অধিবাসী।

১৪ ১৬

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, সামুদ্রিক পাখিদের মুক্তাঞ্চল ছিল প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে অবস্থিত এই নাউরু। তাদের ফেলে যাওয়া বর্জ্য কয়েক লাখ বছর ধরে জমতে জমতে উৎকৃষ্ট মানের ফসফেটের টিলায় পরিণত হয়। পরবর্তী কালে এই ফসফেটের টিলা নাউরুর জন্য আশীর্বাদ বলে চিহ্নিত হয়।

১৫ ১৬

নাউরুর আশপাশে সমুদ্রের নীচে থাকা প্রবালপ্রাচীর এবং নির্মল জলরাশি প্রকৃতিপ্রেমী এবং ডুবুরিদের জন্য স্বর্গরাজ্য।

১৬ ১৬

২০০০ সালের গোড়ার দিক থেকে অস্ট্রেলিয়ায় বসতি স্থাপনের চেষ্টা করা শরণার্থী এবং অভিবাসীদের জন্য এখানে একটি শিবির খোলা হয়েছিল। বন্দিদের মৃত্যুর পর এই কর্মসূচিটি প্রায় বন্ধই করে দেওয়া হয়েছে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement