What Is Operation Keller

জঙ্গিনিধনে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর শুরু নতুন অভিযান! খেলা ঘোরাবে সেনার ‘অপারেশন কেল্লার’?

জঙ্গিদের উপস্থিতি সম্পর্কে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ইউনিটের নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শোকাল কেল্লার এলাকায় ‘অপারেশন কেল্লার’ শুরু হয়েছে মঙ্গলবার। এখনও সেই অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৫ ১২:২২
Share:
০১ ২০

‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং তার পর থেকে চলা ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে আপাতত দাঁড়ি। পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর অঘোষিত ‘যুদ্ধ’ থামাতে বড় ভূমিকা নিয়েছে আমেরিকা। চার দিনের লড়াইয়ে ইতি টানা হলেও জঙ্গিদমনে নতুন একটি অভিযান শুরু করেছে ভারতীয় সেনা।

০২ ২০

পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে চালানো ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর মঙ্গলবার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আর একটি সামরিক অভিযান শুরু করেছে ভারতীয় সেনা। নাম ‘অপারেশন কেল্লার’।

Advertisement
০৩ ২০

কিন্তু কী এই ‘অপারেশন কেল্লার’? এই অভিযানে নেমে জম্মু এবং কাশ্মীরের শোপিয়ান জেলার শোকাল কেল্লার এলাকায় তিন কট্টর জঙ্গিকে নিকেশ করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

০৪ ২০

জঙ্গিদের উপস্থিতি সম্পর্কে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ইউনিটের নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শোকাল কেল্লার এলাকায় এই অভিযান শুরু করা হয়েছে। এখনও সেই অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনা।

০৫ ২০

মঙ্গলবার দুপুর ১টা নাগাদ ‘অপারেশন কেল্লার’-এর ঘোষণা করা হয়। ভারতীয় সেনার তরফে এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘‘অপারেশন কেল্লার। ১৩ মে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ইউনিটের নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শোপিয়ানের শোকাল কেল্লার এলাকায় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান এবং নিকেশ অভিযান শুরু করে ভারতীয় সেনা। অভিযান চলাকালীন জঙ্গিরা গুলিবর্ষণ করে। পাল্টা গুলি চালায় সেনা। যার ফলে তিন জন কট্টর জঙ্গিকে খতম করা হয়েছে।’’

০৬ ২০

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ভারতীয় সেনার জঙ্গিবিরোধী এই নয়া অভিযানে হত তিন জঙ্গিদের মধ্যে এক জন ছিল শাহিদ কুট্টে। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লশকর-এ-ত্যায়বার শীর্ষ কমান্ডার হিসাবে পরিচিত ছিল শাহিদ।

০৭ ২০

পুলিশের এক জন ঊর্ধ্বতন কর্তা জানিয়েছেন, নিহত তিন জনই লশকর জঙ্গি ছিল। তাদের মধ্যে দু’জনকে শাহিদ কুট্টে এবং আদনান শফি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে তৃতীয় জঙ্গির পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

০৮ ২০

পুলিশ আরও জানিয়েছে, শোপিয়ানের ছোটিপোরা-হীরপোরা এলাকার বাসিন্দা ছিল শাহিদ। অনেক দেশবিরোধী এবং জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।

০৯ ২০

২০২৩ সালে লশকর দলে নাম লিখিয়েছিল শাহিদ। সে ‘এ’ শ্রেণির জঙ্গি ছিল এবং লশকরের শীর্ষ জঙ্গি কমান্ডার হিসাবেও দায়িত্ব পালন করত।

১০ ২০

২০২৪ সালের ১৮ মে হীরপোরায় বিজেপির এক পঞ্চায়েত প্রধানকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগও উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন ভারতীয় খুন হওয়ার পর পর শাহিদের বাসভবন ভেঙে দেয় প্রশাসন।

১১ ২০

উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় পর্যটক-সহ মোট ২৬ জনকে নৃশংস ভাবে খুন করে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। ওই ঘটনার পরই সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করে নয়াদিল্লি। ইসলামাবাদের বিমানের জন্য বন্ধ করা হয় আকাশপথ। পাশাপাশি, পাক নাগরিকদের ভিসা না দেওয়ার কথাও ঘোষণা করে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার।

১২ ২০

পহেলগাঁও হামলার বদলা যে অচিরেই নেওয়া হবে, তা ঘোষণা করেছিল নয়াদিল্লি। সেই মতো গত ৭ মে মধ্যরাতে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের (পাক অকুপায়েড জম্মু-কাশ্মীর বা পিওজেকে) মোট ন’টি জায়গায় জঙ্গিদের গুপ্তঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় নয়াদিল্লি। এই অভিযানেরই পোশাকি নাম, ‘অপারেশন সিঁদুর’। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের দাবি, এতে শতাধিক সন্ত্রাসবাদীর মৃত্যু হয়েছে।

১৩ ২০

এর পরই দুই প্রতিবেশীর সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। জম্মু-কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (লাইন অফ কন্ট্রোল বা এলওসি) এবং পশ্চিমের আন্তর্জাতিক সীমান্তে দু’পক্ষের মধ্যে প্রবল গুলি বিনিময় হয়। একাধিক জায়গায় ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং যুদ্ধবিমান দিয়ে পাল্টা প্রত্যাঘাতের মরিয়া চেষ্টা চালায় ইসলামাবাদ।

১৪ ২০

কিন্তু, এতে ফল হয় হিতে বিপরীত। পাকিস্তানের যাবতীয় আগ্রাসন রুখে দেয় ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম)। ইসলামাবাদের সমস্ত ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রকে মাঝ-আকাশেই গুলি করে ধ্বংস করে এ দেশের বাহিনী। পাশাপাশি, চিনের তৈরি দু’টি জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানকেও নয়াদিল্লি ধ্বংস করেছে বলে স্বীকার করে নেয় পাকিস্তান।

১৫ ২০

গত ৮ এবং ৯ মে রাতে ইসলামাবাদের হামলার বিরুদ্ধে ফের প্রত্যাঘাত হানে ভারতীয় সেনা। নয়াদিল্লির ড্রোন উড়িয়ে দেয় লাহৌরের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং একটি রেডার সিস্টেম।

১৬ ২০

এর পাশাপাশি পাকিস্তানের একাধিক বায়ুসেনাঘাঁটিতে আগুন ঝরিয়েছে ভারতীয় বিমানবাহিনী। ১০ মে এই ইস্যুতে বিবৃতি দেন ভারতীয় সেনার কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ। তাঁরা বলেন, পাকিস্তানের রফিকি, মুরিদ, চকলালা এবং রহিম ইয়ার খান বায়ুসেনা ঘাঁটিতে আকাশপথে হামলা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া নিশানা করা হয় সুক্কুর এবং চুনিয়ায় পাক সেনাঘাঁটি, পসরুর এবং সিয়ালকোটের বিমানঘাঁটিকে।

১৭ ২০

নয়াদিল্লির তরফে এই বিবৃতি জারি করার আগেই বায়ুসেনাঘাঁটিতে হামলার বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলে ইসলামাবাদ। পাক সেনাবাহিনীর জনসংযোগ শাখার (ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন বা আইএসপিআর) মুখপাত্র আহমদ শরিফ চৌধরি জানান, রাওয়ালপিন্ডির নুর খান, চকওয়ালের মুরিদ এবং পঞ্জাব প্রদেশের ঝাং জেলার রফিকি বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত হেনেছে ভারত।

১৮ ২০

সংঘাত এ ভাবে তীব্র হওয়ায় নিয়ন্ত্রণরেখা এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তে সৈন্যসংখ্যা বৃদ্ধি করে পাকিস্তান। পাল্টা সেখানে বাহিনী ও হাতিয়ারের সংখ্যা বাড়়াতে থাকে ভারতও। পাকিস্তানের লাগাতার গোলাবর্ষণে প্রাণ হারান জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরী জেলার এক পদস্থ আধিকারিক। ভূস্বর্গের শম্ভু মন্দির এবং একটি গুরুদ্বারকে নিশানা করে ইসলামাবাদের সেনা।

১৯ ২০

তবে ছ’টি বায়ুসেনাঘাঁটিতে জোরালো প্রত্যাঘাতের পর কিছুটা দমে যায় পাকিস্তান। শেষে আমেরিকার মধ্যস্থতায় সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণা করে দুই দেশ। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, লড়াই থামার তিন ঘণ্টার মধ্যেই ফের সীমান্তে গোলাবর্ষণ করে ইসলামাবাদ। এতে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স বা বিএসএফ) এক জন কনস্টেবলের মৃত্যু হয়।

২০ ২০

নয়াদিল্লি জানিয়েছে, ১২ মে সংঘর্ষবিরতি নিয়ে দুই দেশের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন বা ডিজিএমও পর্যায়ের অফিসারদের মধ্যে হয়েছে একপ্রস্ত আলোচনা।

সব ছবি: পিটিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement