Wrestlers and Bouncers

কুস্তিগির এবং বাউন্সাররা থাকেন এই গ্রামে, দেশের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ গ্রামে স্বাগত

সবচেয়ে অবাক করার বিষয়, অসোলা-ফতেহপুরের সিংহভাগ বাসিন্দাই নিরামিষাসী। গ্রামের একটি আখড়ার প্রধান প্রশিক্ষক বলেন, ‘‘আমরা সবাই স্বাস্থ্যকর খাবার খাই। এবং অবশ্যই সময়ে খাওয়া-দাওয়া করি।’’

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৫৮
Share:
০১ ১৬

এখানে দিনের শুরু হয় খুব সকালে। পাখি বাসা ছেড়ে বাইরে বেরনোর আগেই আখড়ায় আখড়ায় ভিড় জমে যায়। চলে মুগুর ভাঁজা, ডন-বৈঠক এবং কুস্তি। সকাল সকাল হাজারখানেক ডন-বৈঠক কোনও ব্যাপারই না এই যুবকদের কাছে। দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী লোকেরা নাকি থাকেন এ গ্রামে। জায়গার নাম অসোলা-ফতেহপুর বেড়ি।

০২ ১৬

রাজধানী দিল্লির পার্শ্ববর্তী একটি পরিচিত এলাকা অসোলা-ফতেহপুর। গ্রামের যুবশক্তি এখানকার ‘প্রাণ’। বস্তুত, দিল্লি-সহ দেশের বড় বড় রেস্তরাঁ-বারের বাউন্সারের দায়িত্বে যাঁরা থাকেন, তাঁদের সিংহভাগের ঠিকানা অসোলা-ফতেহপুর বেড়ি।

Advertisement
০৩ ১৬

শুধু বাউন্সারের চাকরিই নয়, রাজনীতিক থেকে ফিল্মস্টার, বেশির ভাগের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন অসোলা-ফতেহপুরের যুবকরা। কিন্তু এই গ্রামের বিশেষত্ব কী? কী ভাবে সিংহভাগ যুবকের পেশিবহুল শরীর? কেনই বা বাউন্সারের চাকরি তাঁদের এতটা টানে?

০৪ ১৬

কয়েক প্রজন্ম ধরে অসোলা-ফতেহপুরের বাসিন্দাদের দিন শুরু হয় ঘণ্টা দু’য়েক কসরত করে। বিকেলেও দু’ঘণ্টা ঘাম ঝরান তাঁরা। বছরের পর বছর বড়দের দেখে শিখছে ছোটরা। কিশোর থেকে পঞ্চাশ পেরনো প্রৌঢ়— সবাই আখড়ায় লড়েন। ব্যায়াম করেন। ইট তোলেন। ধুলো মেখে লড়াই করেন। একসঙ্গে ঘাম ঝরান।

০৫ ১৬

দিল্লির এই গ্রামের যুবকদের কাছে ভারোত্তোলন শখের খেলা। সময় কাটাতেও ব্যায়াম করেন তাঁরা। কেউ কেউ ৩৫০ কেজি পর্যন্ত ওজন তোলেন। স্বাস্থ্যের বিষয়ে সবাই সচেতন। ভাল খাওয়া-দাওয়া করা, নেশা থেকে দূরে থাকা— এটাই তাঁদের সুস্বাস্থ্যের কারণ বলে জানান গ্রামের বাসিন্দারা।

০৬ ১৬

কী খাওয়া-দাওয়া করেন এই যুবকরা? সংবাদমাধ্যমকে অসোলা-ফতেহপুরের বাসিন্দারা জানান, তাঁদের গ্রামে কেউ মদ্যপান করেন না। সিগারেট-বিড়ি বা তামাকজাত কোনও নেশায় কারও আসক্তি নেই।

০৭ ১৬

সবচেয়ে অবাক করার বিষয়, অসোলা-ফতেহপুরের সিংহভাগ বাসিন্দাই নিরামিষাসী। গ্রামের এমনই একটি আখড়ার প্রধান প্রশিক্ষক বলেন, ‘‘আমরা সবাই স্বাস্থ্যকর খাবার খাই। এবং অবশ্যই সময়ে খাওয়া-দাওয়া করি। এটাই এখানকার দৈনন্দিন রুটিন। প্রতি দিন ভাল খাবার খাও এবং প্রতি দিন শরীরচর্চা করো, এটা এখানকার রীতির মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’

০৮ ১৬

অসোলা-ফতেহপুরের বাসিন্দারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন ভারতের বিভিন্ন নাইটক্লাব, পাবে। কাজ করেন বাউন্সার হিসাবে।। আসলে এখানকার যুবকদের আলাদা করে চাহিদা রয়েছে এই কাজে। তাঁদের দায়িত্ববোধ এবং নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন সবাই পছন্দ করেন। জানাচ্ছেন দিল্লির এমন একটি নাইটক্লাবের পদস্থ কর্তা।

০৯ ১৬

তনওয়ার নামে এক যুবক কয়েক বছর আগে অলিম্পিকে কুস্তি লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কোনও কারণে তা হয়ে ওঠেনি। তার পরে নেন বাউন্সারের চাকরি।

১০ ১৬

কেন বাউন্সারের কাজ বাছলেন? সংবাদমাধ্যমকে তনওয়ারের সহজ জবাব, ‘‘আমি এমন একটা কাজ খুঁজছিলাম যেখানে আমার পেশিশক্তি দেখাতে পারব। পাশাপাশি ভাল উপার্জন করতে পারব। সে ক্ষেত্রে বাউন্সারের চাকরি আমার কাছে সবচেয়ে ভাল সুযোগ ছিল।’’

১১ ১৬

এই তনওয়ার নাকি তাঁর গ্রাম থেকে উঠে আসা প্রথম বাউন্সার। খেলাধুলো, সেনাবাহিনী ছাড়াও অসোলা-ফতেহপুরের বাসিন্দাদের সবচেয়ে বড় পছন্দের চাকরি বাউন্সারের।

১২ ১৬

তনওয়ারের দাবি, তাঁকে দেখেই পরে গ্রামের যুবকরা বাউন্সারের কাজ নিচ্ছেন। এবং এখন সারা দেশের ছোট-বড় শহরে কাজ করছেন তাঁরা। তিনি জানান, গ্রামের কেউ নেশা করেন না। পুষ্টিকর খাবার খান। আর সবাই এই লোহার মতো শরীর তৈরি করেছেন কঠোর পরিশ্রম করে। কোনও সাপ্লিমেন্টের ধার ধারেন না তাঁরা।

১৩ ১৬

তনওয়ারের কথায়, ‘‘আমার দেখাদেখি গ্রামের বাকি যুবকরাও পরে বাউন্সারের চাকরি নিয়েছে। শুধুমাত্র দিল্লির ক্লাব এবং বারেই আমার গ্রামের ৩০০ ছেলে বাউন্সারের কাজ করছে।’’

১৪ ১৬

দিল্লির এই গ্রামের বাসিন্দারা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, স্বাস্থ্যই সম্পদ। শুধু স্বাস্থ্যবানই নন, রুজিরোজগারেও তাঁদের সমান নজর। যেমন তনওয়ারই বলছেন পরিবারকে ভাল রাখা, সন্তানদের ভাল স্কুলে পড়াতে কে না চায়! তাঁরাও সেটা চান।

১৫ ১৬

তবে শুধু বাউন্সারের চাকরির জন্য যে কসরত করেন সেটাও না। আসলে তনওয়ারের গ্রামের ঐতিহ্যই হচ্ছে সুস্থ্য সবল ভাবে বাঁচা। ব্যায়াম করলে মন ভাল থাকে। শরীর ভাল থাকে। ছোটখাট চোট-আঘাত, জ্বর ইত্যাদি অসুখ চট করে কাহিল করতে পারে না।

১৬ ১৬

ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে তাই সবাই ব্যায়াম করেন। সেই চর্চা আগামিদিনেও থাকবে বলে বিশ্বাস গ্রামবাসীর। শুধু শরীরচর্চা করেও যে তাঁরা সবার থেকে আলাদা, সেটাই প্রমাণ করে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement