Aditya L1 Payloads

সাত ‘হাত’ নিয়ে সূর্যের উদ্দেশে পাড়ি আদিত্যের, কে কোন কাজটি করবে? শিখিয়ে দিয়েছে ইসরো

সূর্যের অপর নাম আদিত্য। সেই অনুযায়ী ভারতের প্রথম সূর্য অভিযানের নামকরণ করেছে ইসরো। সূর্যের কাছে কাঙ্ক্ষিত কক্ষপথে পৌঁছতে তার সময় লাগবে ১২৫ দিন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:২৫
Share:
০১ ২১

চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্যের কয়েক দিনের মধ্যেই সূর্যের দিকে ‘হাত’ বাড়িয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। শনিবার ইসরোর সৌরযান আদিত্য-এল১ সূর্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।

০২ ২১

শনিবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে ভারতীয় রকেট ‘পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল’ (পিএসএলভি)-এর কাঁধে ভর করে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস রিসার্চ সেন্টারের লঞ্চিং প্যাড থেকে আদিত্য-এল১-এর উৎক্ষেপণ হয়েছে।

Advertisement
০৩ ২১

আদিত্য-এল১ ভারত থেকে সূর্যের দিকে পাঠানো প্রথম মহাকাশযান। সূর্যের অপর নাম আদিত্য। সেই অনুযায়ী এই অভিযানের নামকরণ করেছে ইসরো।

০৪ ২১

সূর্য-পৃথিবীর মধ্যে একটি ‘হ্যালো’ কক্ষপথের ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট বা এল১ পয়েন্টে স্থাপন করা হবে মহাকাশযানবাহী কৃত্রিম উপগ্রহটিকে। সেখান থেকে সূর্যকে পর্যবেক্ষণ করবে আদিত্য-এল১।

০৫ ২১

পৃথিবী থেকে মোট ১৫ লক্ষ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবে ইসরোর মহাকাশযান। এই পথ অতিক্রম করতে তার সময় লাগবে অন্তত ১২৫ দিন। চাঁদের মতোই কক্ষপথ পরিবর্তন করে করে সূর্যের কাছে পৌঁছবে ইসরো।

০৬ ২১

আদিত্য-এল১-এ মোট সাতটি পেলোড রয়েছে। এগুলিই কৃত্রিম উপগ্রহটির এক একটি ‘হাত’ বলা চলে। ইসরোর সূর্য অভিযানের সাফল্য অথবা ব্যর্থতা এই পেলোডগুলির উপরেই নির্ভর করছে।

০৭ ২১

ইসরোর তথ্য অনুযায়ী, আদিত্য-এল১-এর পেলোডগুলিকে দু’টি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। এতে রয়েছে চারটি রিমোট সেন্সিং পেলোড এবং তিনটি ইন-সিটু পেলোড।

০৮ ২১

রিমোট সেন্সিং পেলোডগুলি হল, ভিইএলসি (ভিসিবল এমিশন লাইন কোরোনাগ্রাফ), এসইউআইটি (সোলার আলট্রাভায়োলেট ইমেজিং টেলিস্কোপ), সোলেক্স (সোলার লো এনার্জি এক্স-রে স্পেক্টোমিটার) এবং এইচইএল১ওএস (হাই এনার্জি এল১ অরবিটিং এক্স-রে স্পেক্টোমিটার)।

০৯ ২১

এ ছাড়া, সৌরযানের ইন-সিটু পেলোডের মধ্যে রয়েছে অ্যাসপেক্স (আদিত্য সোলার উইন্ড পার্টিকেল এক্সপেরিমেন্ট), পাপা (প্লাজমা অ্যানালাইজার প্যাকেজ ফর আদিত্য) এবং এটিএইচআরডিএম (অ্যাডভান্সড ট্রাই-অ্যাক্সিয়াল হাই রেজোলিউশন ডিজিটাল ম্যাগনেটোমিটার)।

১০ ২১

সূর্যের একেবারে বাইরের দিকের অংশটির নাম কোরোনা। ভিইএলসি পেলোডের কাজ এই অংশেই। কোরোনা স্তরের ছবি তুলবে এই পেলোড। ওই অংশের স্পেকট্রোস্কোপিও করবে ভিইএলসি।

১১ ২১

স্পেকট্রোস্কোপির অর্থ হল বর্ণালিবীক্ষণ। সূর্যের কোরোনা স্তর থেকে আলোর রশ্মি কী ভাবে বিচ্ছুরিত হচ্ছে, ওই স্তরে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন কেমন, তা খতিয়ে দেখবে ভিইএলসি।

১২ ২১

এসইউআইটি পেলোডটি সূর্যের অন্য দুই স্তর নিয়ে কাজ করবে। তার ‘কর্মক্ষেত্র’ ফটোস্ফিয়ার এবং ক্রোমোস্ফিয়ার। এই দুই স্তর পর্যবেক্ষণ করে সেখানকার ছবি তুলে পাঠাবে ইসরোর পেলোড।

১৩ ২১

সূর্যের পৃষ্ঠতলের নাম ফটোস্ফিয়ার। এই অংশটিই পৃথিবী থেকে আমরা দেখতে পাই। এ ছাড়া, এই ফটোস্ফিয়ার এবং কোরোনা স্তরের মাঝে রয়েছে প্লাজমার একটি পাতলা স্তর। তার নাম ক্রোমোস্ফিয়ার।

১৪ ২১

আদিত্য-এল১-এর সোলেক্স পেলোডটির কাজ খানিকটা অন্যরকম। এটি নক্ষত্র হিসাবে সূর্যের গুণাগুণ বিচার করবে। সেই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করবে। সফ্‌ট এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার হিসাবে কাজ করবে সোলেক্স।

১৫ ২১

এইচইএল১ওএস পেলোডের কাজও একই রকম। নক্ষত্র হিসাবে সূর্য কেমন, তা খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করবে এই পেলোড। তবে এটি সফ্‌ট নয়, হার্ড এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার হিসাবে কাজ করবে।

১৬ ২১

আদিত্য-এল১-এর ইন-সিটু পেলোড অ্যাসপেক্স সূর্যের মধ্যেকার বায়ু এবং বিভিন্ন কণা বিশ্লেষণ করবে। মূলত প্রোটন এবং তার ভারী আয়নগুলি কোন দিকে নির্দেশ করে, তা-ও পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব রয়েছে এই পেলোডের উপর।

১৭ ২১

পাপা পেলোডটির কাজও সূর্যে অবস্থিত কণা নিয়ে। এটি সূর্যের ইলেকট্রন এবং তার ভারী আয়নগুলি বিশ্লেষণ করবে। সেগুলি কোন দিকে নির্দেশ করছে, তা-ও খতিয়ে দেখবে।

১৮ ২১

আদিত্য-এল১-এর সপ্তম তথা শেষ পেলোড এটিএইচআরডিএম। এর কাজ সূর্যের চৌম্বকক্ষেত্রকে নিয়ে। চৌম্বকক্ষেত্র পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণের দায়িত্ব এটিএইচআরডিএমকে দিয়েছে ইসরো।

১৯ ২১

ইসরো সূত্রে খবর, উৎক্ষেপণের পর প্রায় ১৬ দিন পৃথিবীর চারিদিকে পাক খাবে আদিত্য-এল১। এই সময়ের মধ্যে পাঁচটি ধাপে কক্ষপথ পরিবর্তন করে ধীরে ধীরে গতিবেগ বৃদ্ধি করা হবে সৌরযানের।

২০ ২১

সূর্যের কাছাকাছি কাঙ্ক্ষিত ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্টে পৌঁছতে আরও প্রায় ১০৯ দিন সময় নেবে আদিত্য-এল১। এই অংশে সূর্য এবং পৃথিবীর আকর্ষণ এবং বিকর্ষণ বল একসঙ্গে ক্রিয়াশীল। ফলে এই অঞ্চলে পৌঁছে কৃত্রিম উপগ্রহ স্থির থাকতে পারবে।

২১ ২১

স্থির হয়ে খুঁটিয়ে সূর্যকে পর্যবেক্ষণ করবে ইসরোর সৌরযান। ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্টে তার ‘হাত’ হয়ে কাজ করবে সাতটি পেলোড। এই অভিযান সফল হলে ভারত তথা পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের হাতে সূর্য সম্পর্কে অনেক নতুন তথ্য আসতে চলেছে, আশাবাদী ইসরো।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement