Pakistan

তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডার! একই ‘কুমিরছানা’ বার বার দেখিয়ে কোটি কোটি ডলার লুটছে পাকিস্তান

তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডার! একই ‘কুমিরছানা’ বার বার দেখিয়ে কোটি কোটি ডলার লুটছে পাকিস্তান।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৫ ০৭:৫৬
Share:
০১ ১৯

পাকিস্তানে হদিস মিলেছে খনিজের বিশাল ভান্ডারের। পাওয়া গিয়েছে বিপুল পরিমাণে তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস। পাকিস্তানের ইতিহাসে সে দেশের সরকারের তরফে এই ঘোষণা বার দশেক করা হয়েছে। কিন্তু প্রতি বারই ফল একই হয়েছে। অনেক ‘পরীক্ষানিরীক্ষা’ চালানোর পরও কিছু মেলেনি।

০২ ১৯

কিন্তু কেন তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডারকে ‘কুমিরছানা’ হিসাবে গোটা পৃথিবীর কাছে দেখায় পাকিস্তান?

Advertisement
০৩ ১৯

গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর। পাক সরকার ঘোষণা করে যে, সে দেশে মিলেছে তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের বিশাল ভান্ডার, যা তাদের ধসে পড়া অর্থনীতিকে একধাক্কায় চাঙ্গা করে দেবে এবং সেই গুপ্তধন পাওয়া গিয়েছে পাকিস্তানের আঞ্চলিক সমুদ্রসীমায়।

০৪ ১৯

একই জিগির তোলে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলিও। একে বিশ্বের চতুর্থ বৃহৎ খনিজ তেলের ভান্ডার বলেও দাবি করা হয় পাক সরকারের তরফে।

০৫ ১৯

এই খনিজ ভান্ডার থেকে যে বিপুল অর্থ উপার্জন হবে, পাক সরকারের তরফে তাকে ‘ব্লু ওয়াটার ইকনমি’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়। তেল ও গ্যাসের উপস্থিতি যাচাই করার জন্য বন্ধুপ্রতিম দেশের সহযোগিতায় তিন বছরের একটি পরিকল্পনাও করা হয়।

০৬ ১৯

কিন্তু দেখা যায় পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাগ্য বড়ই খারাপ। সন্ধান মিললে যা আর্থিক সঙ্কটে থাকা দেশটির ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারবে বলে দাবি তোলা হয়, বাস্তবে তা কতটা সম্ভব সে নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন সরকারেরই একাধিক আধিকারিক।

০৭ ১৯

তবে পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডার মেলা নিয়ে পাকিস্তানের এমন দাবি নতুন নয়। ২০১৮ সালে সে দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি তুলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন।

০৮ ১৯

সেই সময় পাক জনতাও উৎফুল্ল হয়ে বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল যে, সে দেশে তেল ও জ্বালানির সঙ্কট কাটতে চলেছে। তবে প্রচুর ঢাকঢোল পিটিয়ে করাচির উপকূলে খনন চালিয়েও কোনও তেলের ভান্ডার খুঁজে পাওয়া যায়নি।

০৯ ১৯

এর পর গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর একই ঘোষণা করে পাক সরকার। যদিও পাকিস্তানের এক জন উচ্চপদস্থ নিরাপত্তা কর্মকর্তা পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আবার বলেছিলেন, সরকার আশাবাদী হলেও ১০০ শতাংশ নিশ্চয়তা নেই যে বিপুল তেলের সন্ধান মিলবে।

১০ ১৯

তেলের হদিস না পাওয়া গেলেও খনন ও তেল উত্তোলনের জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের থেকে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ।

১১ ১৯

কারণ, খনিজ তেলের অনুসন্ধানের জন্য বিশাল বিনিয়োগের প্রয়োজন। যদি অনুসন্ধানে ভাল ফল পাওয়া যায়, তা হলে মজুত উত্তোলন ও জ্বালানি উৎপাদনের জন্য কূপ এবং পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য আরও বিনিয়োগের প্রয়োজন।

১২ ১৯

সরকার এবং পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলির রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে পাকিস্তানের ‘লুকোনো প্রাকৃতিক সম্পদের’ প্রতি বেশ কিছু বিনিয়োগকারী আগ্রহ দেখাতে শুরুও করেছিলেন।

১৩ ১৯

এর আগে ইমরান সরকারও একই কায়দায় প্রায় একই পরিমাণ বিনিয়োগ টানার চেষ্টা করেছিল ২০১৮ সালে। তবে সেই প্রয়াস ফলপ্রসূ হয়নি।

১৪ ১৯

কিন্তু কেন বার বার খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান মেলা নিয়ে ওই একই ঘোষণা করে পাকিস্তান? বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থনৈতিক খরার মুখে পড়লেই ওই ঘোষণাকে হাতিয়ার করে পাকিস্তান।

১৫ ১৯

লক্ষ্য, খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ‘কুমিরছানা’ দেখিয়ে বিনিয়োগকারী এবং আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারের থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা। অন্তত তেমনটাই মনে করেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। কখনও প্রচেষ্টা সফল হয় আবার কখনও বিফলে যায়।

১৬ ১৯

বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডার পাওয়ার জিগির তোলা আসলে পাকিস্তানের বিনিয়োগ জোগাড়ের ফিকির। টাকা পাওয়া হয়ে গেলে পরীক্ষানিরীক্ষা চালানোর ‘ভান’ করে পাকিস্তান। পরে জানিয়ে দেয় প্রাকৃতিক গ্যাস এবং তেল না মেলার কথা। কিন্তু তত দিনে আত্মসাৎ হয়ে যায় বিনিয়োগ।

১৭ ১৯

তবে বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ভান্ডার পাওয়া নিয়ে বিশ্বের দরবারে এত বার ‘কুমিরছানা’ দেখিয়েছে পাকিস্তান, যে কেউই আর টাকা ঢালতে রাজি হয় না। এমনকি, এ নিয়ে সরকারকে আর বিশ্বাস করতে রাজি নয় পাক জনগণও।

১৮ ১৯

আর তাই বিশেষজ্ঞদের একাংশ এ-ও মনে করছেন যে, এর পর রাখালের পালে সত্যিকারের বাঘ পড়লে, অর্থাৎ, পাকিস্তান চরম বিপদের মুখে পড়লেও তাদের আর্থিক সাহায্য করবে না আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি।

১৯ ১৯

বর্তমান বিশ্বে খনিজ তেল মজুতে শীর্ষে রয়েছে ভেনেজুয়েলা। দেশটিতে প্রায় ৩৪০ কোটি ব্যারেল তেল মজুত রয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তেলের খনি রয়েছে ভেনেজুয়েলাতেই। এ ছাড়া সৌদি আরব, ইরান, রাশিয়া, কানাডা, ইরাকেও প্রাকৃতিক গ্যাস ও পেট্রোলিয়ামের খনি রয়েছে।

ছবি: প্রতীকী ছবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement