Bhojpuri Cuisine

গান শুনেছেন, ভোজপুরি খিচুড়ি খেয়েছেন কি! ছটপুজোর ‘ভোগ’ তৃপ্তি দিতে পারে বাঙালি জিভেও

ভোজপুরি সংস্কৃতিতে উৎসব মূলত দু’টি। এক, ছটপুজো আর দুই, দুর্গাপুজো। বাঙালিরা যেমন দুর্গাপুজোয় খিচুড়ি ভোগ অর্পণ করেন, ভোজপুরি সংস্কৃতিতেও তেমনই খিচুড়ি ভোগ দেওয়ার চল আছে ছটপুজোয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:১৫
Share:

ছটপুজোর ভোগের খিচুড়ি খাটুয়া। ছবি : সংগৃহীত।

ভোজপুরি! শুনলেই কি ‘মোটা দাগের আর চড়া দাগের’ সংস্কৃতি মনে হয়? যাঁরা বাজারচলতি কিছু ভোজপুরি সিনেমার গান বা পর্দায় তার প্রকাশ দেখে গোটা ভোজপুরি সংস্কৃতির বিচার করে থাকেন, তাঁরা জেনে রাখুন, ভোজপুরি সংস্কৃতির উদ্ভব যে ভোজপুরি ভাষা থেকে , তার উল্লেখ আছে চর্যাপদে। ইন্দো-আর্য ভাষা পরিবারের অন্যতম প্রাচীন সদস্য হল ভোজপুরি। জন্ম মগধে। রাজা হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালে। পরে যদিও তা ছড়িয়ে পড়ে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, নেপালের মাধেশ, গন্ডকী, লুম্বিনিতেও। যে বেনারসকে ভারতের প্রাচীনতম শহর বলে মনে করা হয়, একদা সেই বেনারস ছিল ভোজপুরি ভাষা এবং সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র। আর যে দুর্গাপুজো বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব, সেই দুর্গাপুজো ভোজপুরি সংস্কৃতিরও অন্যতম অঙ্গ। তবে বাঙালির সঙ্গে শুধু এইটুকুই মিল নেই ভোজপুরীভাষীদের।

Advertisement

বাঙালিরা যেমন দুর্গাপুজোয় খিচুড়ি ভোগ অর্পণ করেন, ভোজপুরি সংস্কৃতিতেও তেমনই খিচুড়ি ভোগ দেওয়ার চল আছে তাঁদের ছটপুজোয়। ছট, যা কিনা সূর্যের কিরণ বা ছটা, তাকে বাঙালিদের মতোই মাতৃরূপে পুজো করেন ভোজপুরিভাষীরা। সেই পুজোয় ভোগ হিসাবে যে খিচুড়ি দেওয়া হয়, তাকে বলা হয় ‘খাটুয়া’।

অর্থাৎ খাটুয়া হল ভোজপুরি ভোগের খিচুড়ি। তবে ওই খিচুড়ির রান্না করার পদ্ধতি সম্পূর্ণ আলাদা। বাঙালির চিরন্তন গোবিন্দভোগ আর মুগডালের বদলে ওই খিচুড়িতে ব্যবহার হয় বাসমতি আর অড়হর ডাল। মশলা আর উপকরণও পরে অন্যরকম। সাধারণত খাটুয়া বছরের অন্যান্য সময়ে পেঁয়াজ রসুন দিয়ে রান্না করা হয়। তবে ভোগ হিসাবে অর্পণ করা হলে বাদ পড়ে পেঁয়াজ-রসুন।

Advertisement

এমনিতে বাঙালি খিচুড়ি প্রিয়। খিচুড়ি খাওয়ার জন্য জানলার বাইরের কয়েক ফোঁটা বৃষ্টিই বাঙালির যথেষ্ট অজুহাত। আবার শীতকালের বাজারের তাজা সব্জি, ফুলকপি, কড়াইশুঁটি, গাজর, বিনস, ছোট ছোট আলু দেখেও খিচুড়ি খাওয়ার ইচ্ছে জাগে বঙ্গজদের। তেমনই খিচুড়ি খাওয়ার অজুহাত হতে পারে ছটপুজোও। মঙ্গলবার থেকেই ছটপুজোর উৎসব শুরু হয়েছে। চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। তার মধ্যেই ভোজপুরি খিচুড়ি খাটুয়ার স্বাদ নিতে পারেন বাঙালি। কী ভাবে বানাবেন?

উপকরণ

১ কাপ বাসমতি চাল

১ কাপ মিহি করে কুচোনো পেঁয়াজ

১ কাপ অড়হর ডাল

১ টেবিল চামচ ঘি

৪টি রসুনের কোয়া

২টি কাঁচা লঙ্কা

২ টেবিল চামচ লেবুর রস

১/২ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো

স্বাদ মতো নুন

প্রণালী

চাল এবং ডাল ভাল ভাবে ধুয়ে নিয়ে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। তার পরে চাল এবং ডালের মিশ্রণটি নুন, জল ও গুঁড়ো হলুদ দিয়ে প্রেশার কুকারে সুসিদ্ধ করে নিন। প্রেশার পুরোটা ছেড়ে গেলে কুকারের ঢাকনা খুলে খিচুড়ি সামান্য ঘেঁটে নিন।

এ বার একটি প্যানে ঘি গরম করে, তাতে পেঁয়াজ দিয়ে স্বচ্ছ হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। রসুন এবং লঙ্কা থেঁতো করে নিয়ে প্যানে দিন। রসুনের কাঁচা গন্ধ চলে যাওয়া পর্যন্ত ভাজতে থাকুন। এর পরে প্যানে থাকা মশলাটি খিচুড়ির মধ্যে দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। উপর থেকে লেবুর রস ছড়িয়ে আরও এক বার মিশিয়ে নিন।

সাজানোর জন্য উপরে ঘিতে শুকনো লঙ্কা নেড়ে নিয়ে ছড়িয়ে দিতে পারেন। ভোজপুরিরা খাটুয়ার সঙ্গে বুরানি রায়তা বা পালং রায়তা খান। আপনি চাইলে পাঁপড়ভাজা, আচার দিয়েও সাজিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement