ইসরোয় ডাক দুই খুদে ‘গবেষক’কে

নবম শ্রেণির দুই পড়ুয়ার পর্যবেক্ষণ নজর কাড়ল ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের (ইসরো) বিজ্ঞানীদের।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯ ০৮:৩২
Share:

সোহম মণ্ডল ও অতেন্দ্রীয় আচার্য। নিজস্ব চিত্র

ওদের এক জনের ভাবনায় নাচ, গানে ক্লান্তি দূর করার পথ। অন্য জন বলছে সঠিক পদ্ধতিতে বাড়ি তৈরির মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষার উপায়। সঙ্গে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের বার্তাও।

Advertisement

নবম শ্রেণির ওই দুই পড়ুয়ার সেই পর্যবেক্ষণ নজর কাড়ল ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের (ইসরো) বিজ্ঞানীদের। আগামী এপ্রিল–মে মাসে গরমের ছুটিতে জেলার ওই দুই পড়ুয়াকে বেঙ্গালুরুর মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে যেতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তাঁরা। দু’সপ্তাহ ধরে সেখানে বিজ্ঞানীদের সঙ্গে দেখা করবে দুই ছাত্র। কথা বলবে তাদের ভাবনা নিয়ে।

ইতিমধ্যে ওই দুই পড়ুয়ার স্কুল ও বাড়িতে নবান্নের তরফে পৌঁছেছে ইসরো কর্তৃপক্ষের চিঠি। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, রাজ্যের মধ্যে শুধুমাত্র ওই আমন্ত্রণ পেয়েছে জেলার ওই দু’জনই। এতে খুশি বীরভূম জেলা শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেস, দু’টি স্কুলের শিক্ষকেরা।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ওই দুই ছাত্র হল সোহম মণ্ডল ও অতেন্দ্রীয় আচার্য। প্রথম জন রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনের ছাত্র। দ্বিতীয় জন পড়ে সিউড়ি বেণীমাধব ইনস্টিটিউশনে।

আদিবাসী সমাজে নাচ, গানবাজনা ক্লান্তি দূর করার অন্যতম উৎস, তা জানিয়েছে সোহম। বাড়ি তৈরির সময় কী ভাবে পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে নজর রাখা যায়, তা দেখিয়েছে অতেন্দ্রীয়।

প্রাথমিক ভাবে জেলা শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসে তাঁদের পর্যবেক্ষণের ফল জমা দিয়েছিল তারা। পরে শামিল হয় রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায়। তার মাধ্যমেই ওই দুই বিষয়ের কথা জানতে পারে ইসরো।

বীরভূম জেলা শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসের আহ্বায়ক তারক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসে জেলার ১৫২টি স্কুল যোগ দিয়েছিল। পরে রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতা যোগ দেয় জেলার ওই দুই ছাত্র। রাজ্য সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের মাধ্যমে ইসরোর কাছে সেই তথ্য পৌঁছয়।

সোহমের বাবা, শিক্ষক সন্দীপ মণ্ডল জানান, তাঁর ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিকে পড়ার সময় থেকেই শিশু বিজ্ঞান কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছে। অষ্টম

শ্রেণিতে আদিবাসী সমাজের সাংস্কৃতিক চর্চা ক্লান্তি দূর করার মাধ্যম, সে সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করেছিল সে।

অতেন্দ্রীয়ের ‘গাইড’ শিক্ষক অম্লান রুজ জানান, নতুন বাড়ি তৈরির সময় তার চারপাশে গাছপালা লাগিয়ে এবং ব্যবহৃত জলের অপচয় না করে তা সে সব গাছের পরিচর্যায় কী ভাবে ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে গবেষণা করে তাঁর ছাত্র। বাড়িতে বৃষ্টির জল সঞ্চয় করে কী ভাবে বিভিন্ন কাজে লাগানো সম্ভব, জানিয়েছে তা-ও।

দু’টি স্কুলের শিক্ষকেরাও ছাত্রদের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ইসরোয় ওই পড়ুয়াদের পাঠাতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি তাঁরাও শুরু করেছেন।

সোহম ও অতেন্দ্রীয় তাদের সংগৃহীত তথ্যের বিষয়ে আরও বেশি করে জেনে তা নিয়ে ইসরোর বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলার অপেক্ষায় দিন গুনছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন