বাঘের হানা
নিজস্ব সংবাদদাতা • গোসাবা
বাড়ির গোয়ালে বাঘের হানাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল কুমীরমারি এলাকার শুক্রবারের বাজার গ্রামে। বুধবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ গ্রামের বাসিন্দা গৌরপদ রায় আচমকা গোয়ালে গৃহপালিত পশুদের চিৎকার শুনে বাইরে বেরিয়ে আসেন। গৌরবাবু দেখেন একটি বাঘ গোয়ালে ঢুকেছে। গোলমালের জেরে জড়ো হন অন্যান্য বাসিন্দারাও। বাসিন্দারা বাঘটিকে আগুন জ্বেলে নজরবন্দি করে রাখেন। খবর দেওয়া হয় ছোটমোল্লাখালি কোস্টাল থানা ও বন দফতরে। বাঘটিকে শেষ পর্যন্ত ঘুম পাড়ানি গুলি মেরে নিজেদের হেফাজতে নেয় বন দফতর। বাঘটিকে চামতা জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, বাঘটি আরবেসি জঙ্গল থেকে রায়মঙ্গল ও ঝিলা নদী পেরিয়ে গ্রামে ঢোকে।
কাজিরাঙায় শিকার
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি
গন্ডারের চোরাশিকার নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে তরুণ গগৈ সরকারের কাজিয়ার মধ্যেই ফের ওই প্রাণীর শিকার হল কাজিরাঙায়। আজ বুড়াপাহাড় রেঞ্জের সনকা এলাকার কাঁঠালচাং বন শিবিরের কাছে একটি প্রাপ্তবয়স্ক গন্ডারের খড়্গহীন দেহ মেলে। তার দেহে তিনটি গুলির ক্ষত ছিল। ঘটনাস্থল থেকে রাইফেলের সাইলেন্সার উদ্ধার করা হয়। গন্ডার শিকার নিয়ে ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল পদ্মনাভ বালকৃষ্ণ আচার্য সম্প্রতি কাজিরাঙার অধিকর্তা ও বনমন্ত্রীকে পদত্যাগের পরামর্শ দিয়েছিলেন। তার জেরে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ রাজ্যপালকে ‘সাংবিধানিক সীমা’র মধ্যেই থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন। আজ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অঞ্জন দত্ত বলেন, “কাজিরাঙা বা মানস জাতীয় উদ্যানকে ঘিরে ফেলা সম্ভব নয়। তাই, শিকার বন্ধ করা যাচ্ছে না। রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের কাজে অন্যায় হস্তক্ষেপ করছেন রাজ্যপাল।” রাজ্যপাল অবশ্য বলেছেন, “সরকারের ভুল হলে আমি বলবই।” অন্য দিকে, চিতাবাঘের চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে দু’জন পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। এ দিন আমিনগাঁও এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। ধৃতদের কাছে একটি চিতাবাঘের চামড়া ও হাড় মিলেছে। জেরায় তারা জানায়, ওরাং এলাকায় চিতাবাঘটিকে শিকার করা হয়েছিল।
উল্টো পথে হাতির দল নয়াগ্রামে
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর
সারা রাত তাণ্ডব চালিয়ে খড়্গপুর ছাড়ল হাতির দল। তবে ফের উল্টো দিকে হেঁটে নয়াগ্রাম গেল তারা। সোমবার কলাইকুণ্ডার শঙ্করবনির জঙ্গল ছাড়ে প্রায় ৪০টি হাতির দলটি। রাতেই সাঁকরাইল হয়ে তারা চলে যায় নয়াগ্রামের দিকে। সারা রাতের চেষ্টায় বনকর্মীরা হাতিগুলিকে সুবর্ণরেখা নদী পার করিয়ে দেন। এরপর দলটি নয়াগ্রামের খাসজঙ্গল এলাকায় চলে গিয়েছে বলে খবর। এখনও জঙ্গলেই ঘুরছে তারা। বন দফতর সূত্রে খবর, হাতির দাপটে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৮০ হেক্টর জমির ধান ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। প্রতি বছরই দলমা থেকে আসা একাধিক হাতির দল নয়াগ্রাম হয়ে পুজোর সময় ওড়িশা চলে যায়। ওড়িশা সরকার এখন হাতি চলার পথ বন্ধ করে দেওয়ায় বহু হাতি নয়াগ্রামে থেকে যায়। নভেম্বর নাগাদ হাতিগুলি ফের দলমায় ফেরত যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। ডিসেম্বর নাগাদ তারা খড়্গপুরে আসে। কাঁসাই নদী পেরিয়ে মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর হয়ে ঝাড়খণ্ডে ঢুকে দলমায় ফিরে যায়। কিন্তু এ বার এই দলটি দলমায় না গিয়ে খড়্গপুরে চলে আসে। তারপর আবার উল্টোপথে তারা গেল নয়াগ্রাম। খড়্গপুরের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “হাতিগুলি রাতেই কলাইকুণ্ডা ছেড়ে সুবর্ণরেখা পেরিয়ে সেই উল্টো রুটেই নয়াগ্রামে চলে গিয়েছে।” কেন? তাঁর ব্যাখ্যা, “এখনও সকালের দিকে ঠান্ডা হাওয়া বইছে। তার উপর খেতে ধান থাকায় দলটি এ দিকে ফিরে এসেছে বলে মনে হচ্ছে।”
হাতির হানায় দেওয়াল চাপা পড়ে বৃদ্ধার মৃত্যু
হাতির হানায় ঘরের দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হল এক বৃদ্ধার। পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডি থানার বিদরি গ্রামের.ঘটনা। মৃতার নাম রম্ভা কুমার (৭৫)। শনিবার রাতে বাড়িতে দেওয়াল চাপা পড়ে গুরুতর জখম হন ওই বৃদ্ধা। তাঁকে প্রথমে ভর্তি করানো হয়েছিল পাথরডি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রবিবার ভর্তি করানো হয় পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে। বেশি রাতের দিকে সেখানেই মারা যান তিনি। অন্য দিকে, টানা তিনদিন ধরে হাতির একটি দল বাঘমুণ্ডি ব্লক এলাকায় উপদ্রব চালাচ্ছে। দলটিকে তাড়াতে অভিযান শুরু করেছে বনদফতর। পুরুলিয়া বিভাগের ডিএফও ওমপ্রকাশ বলেন, “হাতির হামলায় বাঘমুণ্ডির বিদরি গ্রামে দেওয়াল চাপা পড়ে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিপূরণের নতুন হার অনুযায়ী তাঁর পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।” তিনি জানান, হাতির হানায় যে সব এলাকার জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে এবং ঘরবাড়ি ভাঙা পড়েছে, সে ক্ষেত্রেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। গত মাসের শেষদিকে সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে ঝাড়খণ্ড থেকে ১৮টি হাতির একটি দল ঢুকে পড়েছিল ঝালদা এলাকায়। সেখানকার বনকর্মীরা দলটিকে তাড়ানোর অভিযানে নামলে ঝাড়খণ্ডে ফিরে না গিয়ে দলটি শুক্রবার রাতে ঢুকে পড়ে বাঘমুণ্ডি ব্লক এলাকায়। শনিবার থেকে বুড়দা ও কালিমাটি বিট এলাকায় উপদ্রব শুরু করে দলটি। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে বুড়দা বিটের বিদরি গ্রামে ঢুকে পড়ে হাতিরা। একটি কাঁচা বাড়ি ভাঙে। ওই বাড়িতেই ছিলেন রম্ভাদেবী। শনিবার ও রবিবার দু’দিনে দলটি বুড়দা ও কালিমাটি বিট এলাকায় মোট পাঁচটি কাঁচা বাড়ি ভেঙেছে। নষ্ট করেছে তিন হেক্টর জমির সব্জী। বন দফতর সূত্রের খবর, সোমবার দুপুরে দলটি কালিমাটি বিটের পেড়েতোড়াং পাহাড়ে ছিল। এ দিন বিকাল থেকে দলটিকে তাড়ানোর চেষ্টা শুরু করেন বনকর্মীরা।
খড়্গ-সহ গ্রেফতার বনরক্ষী
গন্ডার শিকার ও খড়্গ পাচারের কাজে খোদ বনরক্ষী জড়িত থাকায় ফের বন বিভাগের মুখ পুড়ল। শোণিতপুরের পুরুবাড়ি এলাকায় একটি গাড়ি থামিয়ে পুলিশ গন্ডারের খড়্গ-সহ পাঁচ ব্যক্তিকে আজ গ্রেফতার করেছে। খড়্গ কেনার টোপ দিয়ে তাদের ডাকা হয়েছিল। জেরায় পুলিশ জানতে পারে, ধৃতদের মধ্যে থাকা ডিম্বেশ্বর বুড়াগোঁহাই নিজেই বনরক্ষী। সে অরণ্য সুরক্ষা বাহিনীর প্রথম ব্যাটেলিয়ানের জওয়ান। বর্তমানে কাজিরাঙার বুড়াপাহাড় রেঞ্জে সে কর্মরত। উল্লেখ্য, এই রেঞ্জেই সাম্প্রতিক কালে সবচেয়ে বেশি গন্ডার হত্যা হয়েছে। ধৃত বনরক্ষীকে জেরা করে গোটা চক্রের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। বনমন্ত্রী এটোয়া মুণ্ডা বলেন, “দোষী প্রমাণিত হলে কেউ ছাড় পাবে না।”