moon

পাকাপাকি ভাবে চাঁদে মহাকাশ স্টেশন বানাচ্ছে চিন-রাশিয়া, হল মউ স্বাক্ষর

চিনা মহাকাশ গবেষণা সংস্থার সঙ্গে মঙ্গলবার সমঝোতাপত্রে স্বাক্ষর করেছে রাশিয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২১ ১২:৫৬
Share:

চাঁদে প্রস্তাবিত মহাকাশ স্টেশনের নকশাগুলির একটি। ছবি- নাসার সৌজন্যে।

চাঁদে পাকাপাকি ভাবে স্টেশন বানাতে চলেছে চিন ও রাশিয়া। একেবারে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এর মতো। সেই লক্ষ্যে চিনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনএসএ)’-র সঙ্গে মঙ্গলবার একটি সমঝোতাপত্রে (‘মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং’ বা ‘মউ’) স্বাক্ষর করেছে রুশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘রসকসমস’।

Advertisement

সিএনএসএ-র তরফে জানানো হয়েছে চাঁদের সেই স্টেশনের নাম ‘আন্তর্জাতিক চাঁদ গবেষণা স্টেশন’ (আইএলআরএস)। গবেষণা চালানোর জন্য সেই স্টেশনে যেতে পারবেন যে কোনও দেশের মহাকাশচারী। যে কোনও দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা সেই স্টেশনে গবেষণার জন্য যন্ত্রপাতিও পাঠাতে পারবে। এই স্টেশনের উদ্দেশ্য ও কাজকর্ম হবে বহুমুখী। স্টেশনটি যাতে দীর্ঘ দিন ধরে স্বয়ংক্রিয় ভাবে চলতে পারে, সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই এগিয়েছে দুই দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। যাতে সেই স্টেশন চালাতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর পৃথিবী থেকে জ্বালানি পাঠাতে না হয়, সেই জ্বালানি যেন চাঁদের মহাকাশ স্টেশনই বানিয়ে নিতে পারে, সে দিকে নজর রাখা হয়েছে।

চিন ও রাশিয়ার স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্রে জানানো হয়েছে সেই স্টেশন একই সঙ্গে থাকতে পারে চাঁদের মাটি ও কক্ষপথে। আবার প্রাথমিক ভাবে সেটি শুধুই চাঁদের কক্ষপথেও বানানো হতে পারে।

Advertisement

এই দশকের শেষের দিকেই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের কাজের মেয়াদ ফুরবে। নাসা ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (এসা), রসকসমস, জাপান স্পেস এজেন্সি (জাক্সা) ও কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি-র (সিএসএ) অর্থানুকুল্যে চলা মহাকাশ স্টেশনটিকে ২০২৮-এ নামিয়ে ফেলা হবে অতলান্তিক মহাসাগরে। ১৯৯৮-এ প্রথম উৎক্ষেপণের পর গত ২৩ বছর ধরে ভূপৃষ্ঠ থেকে গড়ে ৪০০ কিলোমিটার উপরে থেকে দিনে প্রায় সাড়ে ১৫বার পৃথিবীকে বিভিন্ন কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করে চলেছে মহাকাশ স্টেশন।

মহাকাশের আবহাওয়া, মাইক্রোগ্র্যাভিটি, অ্যাস্ট্রোবায়োলজি, জ্যোতির্বিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, পৃথিবীর আবহাওয়া নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা চালাতে।

‘মউ’ স্বাক্ষরের পর চিনা মহাকাশ গবেষণা সংস্থার অধিকর্তা ঝাঙ কেজিয়ান (সামনে)। মঙ্গলবার, বেজিংয়ে। ছবি সৌজন্যে- সিএনএসএ।

গত এক দশকে সভ্যতার মহাকাশ অভিযানের লক্ষ্য কিছুটা বদলেছে। ‘লাল গ্রহ’ মঙ্গলে দ্বিতীয় উপনিবেশ বানানোর প্রয়োজন উত্তরোত্তর জোরদার হয়ে ওঠায় আরও দূরে মহাকাশ স্টেশন বানানোর তোড়জোর চলছে অনেক দিন ধরেই। মঙ্গলে উপনিবেশ বানানোর যাবতীয় পরীক্ষানিরীক্ষা বিভিন্ন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা সেরে ফেলতে চাইছে চাঁদে। তাই চাঁদে মহাকাশ স্টেশন গড়ে তোলার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে এখন প্রায় প্রতিটি দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাই।

চাঁদ পৃথিবী থেকে রয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ কিলোমিটার দূরে। তাই চাঁদের অভিজ্ঞতা মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর ক্ষেত্রে অনেক বেশি সহায়ক হবে বলে মনে করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। শুধু তাই নয়, আগামী দিনে যাতে চাঁদ থেকেই রকেট উৎক্ষেপণ করে মানুষকে মঙ্গলে পাঠানো সম্ভব হয় সেই পরীক্ষানিরীক্ষাও চলছে প্রায় এক দশক ধরে। এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে হলে কী কী করণীয়, তা বুঝতে এ বার নাসার পাঠানো রোভার পারসিভের‌্যান্স কাজ শুরু করে দিয়েছে লাল গ্রহে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন