আকাশের একাংশ মেঘলা থাকলেও তা সাহারার বিশালত্বের কাছে নস্যি!
ধু ধু মরুভূমিই এ বার জীবন দেবে আমাদের!
মরুভূমির ‘আলো’ই দূর করে দেবে আমাদের জীবনের যাবতীয় অন্ধকার।
যত ‘আলো’ জমা রয়েছে গোবি সাহারার বুকে, সেই আলোই এ বার আমাদের বাঁচাতে চলেছে দূষণ-যন্ত্রণার হাত থেকে।
দৃশ্যতই প্রাণহীন মরুভূমি এই বাসযোগ্য গ্রহের দূষিত বাতাসে ফের ফিরিয়ে দেবে প্রাণ!
আরও পড়ুন- পৃথিবীতে প্রথম জল এনেছিল কোনও উল্কা?
এই নজরকাড়া প্রকল্পের প্রাথমিক লক্ষ্য- শিল্প-সমৃদ্ধ ইউরোপের প্রায় সবক’টি দেশ। পরে ধাপে ধাপে ওই প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা যাতে গোটা বিশ্ব পায়, চলছে তারও জোর প্রস্তুতি-তোড়জোড়।
‘ডেসার্টেক ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনিশিয়েটিভ’ নামের ওই প্রকল্পটি ঠিক কী রকম?
যে হেতু সূর্যালোকের প্রাবল্য সবচেয়ে বেশি সাহারা মরুভূমিতে, তাই এই প্রকল্পের ‘আদর্শ জায়গা’ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে সাহারা মরুভূমিকে। সেখানে সোলার প্যানেল বসিয়ে যে বিপুল পরিমাণ সৌরশক্তি পাওয়া যাবে, তা দিয়ে গোটা ইউরোপের সব শিল্প, কল-কারখানা ও গার্হস্থ্য বিদ্যুতের একটা বড় অংশের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।
সাহারায় সৌরশক্তি উৎপাদনের প্রস্তাবিত নেটওয়ার্ক। ছবি-ডেসার্টেক।
ওই প্রকল্পের অন্যতম প্রধান বিজ্ঞানী গেরহার্ড নাইস বলেছেন, ‘‘এই প্রকল্পটির ভাবনা আমার মাথায় এসেছিল, চেরনোবিলের পরমাণু চুল্লিতে বিস্ফোরণের খবরটি পাওয়ার পর। এখন গোটা পৃথিবীতে বিদ্যুৎ ও অন্যান্য প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তি যতটা তৈরি হয়, তার অন্তত পনেরো হাজার গুণ বেশি শক্তি জমা হয়ে রয়েছে সূর্যের মধ্যে। সেই শক্তির একটা সামান্য অংশকে ঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারলেই মানবসভ্যতার শক্তির যাবতীয় চাহিদা মেটানো যায়। সেই লক্ষ্যেই সাহারা মরুভূমিতে ওই প্রকল্পটি চালু করার প্রস্ততি শুরু হয়েছে।’’
সাহারার কাছেই মরক্কোয় একটি সৌরশক্তি উৎপাদন প্রকল্প। ছবি-ডেসার্টেক।
জুরিখে সুইস ফেডেরাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক টোনি প্যাট বলেছেন, ‘‘সাহারা মরুভূমি এতটাই বিশাল যে আকাশ মেঘলা থাকলেও পর্যাপ্ত সৌরশক্তির উৎপাদনে তা ব্যাঘাত ঘটাতে পারবে না। আকাশের যে অংশটুকু মেঘলা থাকে, তা সাহারার বিশালত্বের কাছে ‘সমুদ্রে এক ফোঁটা জল-বিন্দু’র মতো।’’