আজ চন্দ্রগ্রহণ বলে এটা খাবেন না, ওটা খাবেন না, তাই তো? এমনকি, জলও ছোঁবেন না? বাড়ির বাইরে পা-ও বাড়াবেন না? বাইরে থাকলে তড়িঘড়ি ঢুকে পড়বেন ঘরে?
না, না ও সবের দরকার নই। গ্রহণ আমাদের শত্রু নয়! এটা একটি স্বাভাবিক মহাজাগতিক নিয়ম, প্রক্রিয়া।
দেশের পেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের প্রধান সংগঠন ‘অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া’ (এএসআই)-র তরফে শুক্রবার এ কথা জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- ভিন গ্রহে যেতে চাঁদই হবে হল্টিং স্টেশন
এএসআইয়ের জনসংযোগ ও শিক্ষা-সংক্রান্ত কমিটির প্রধান অনিকেত সুলে বলেছেন, ‘‘গ্রহণের সময় খাওয়াদাওয়া নিয়ে যে সব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তা যে একেবারেই ভিত্তিহীন, আমরা সেই কথাটাই পৌঁছে দিতে চাইছি আমজনতার কাছে। ‘বাবা’ আর ‘গুরু’রা যা বলছেন, তা একেবারেই অর্থহীন। বিভ্রান্তিমূলক।’’
আরও পড়ুন- আজ চন্দ্রগ্রহণ: এমন বিরল মহাজাগতিক ঘটনা ফের ১০৫ বছর পর!
আরও পড়ুন- চাঁদ কেন হয়ে যাবে ব্লাড মুন? কেন এত উজ্জ্বল হবে মঙ্গল?
সুলের কথায়, এটা সেই সময়ের কুসংস্কার আর অন্ধবিশ্বাস, যখন বিদ্যুতের আবিষ্কার হয়নি। ফলে, সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হলেই ঘরে ঘরে ঝুপ্ করে নেমে আসত ঘুটঘুটে অন্ধকার। তাতে পোকামাকড় বা ধুলোবালি থেকে খাবার ও পানীয়ে ‘বিষ’ মেশার সম্ভাবনা স্বাভাবিক ভাবেই অনেকটা বেড়ে যেত।
গ্রহণ হয় ছায়া পড়ে বলে। ছায়ায় কোনও দোষ নেই। আমি, আপনি দিনে কোথাও দাঁড়িয়ে থাকলেও ছায়া পড়ে। তাতে সূর্যরশ্মির কোনও রদবদল ঘটে না। তা বিষাক্ত হয়ে পড়ে না।
আরও পড়ুন- শুক্রবার চার ঘণ্টার চন্দ্রগ্রহণ, কোথা থেকে কেমন দেখতে পাবেন, জেনে নিন
আরও পড়ুন- পৃথিবীতে এক দিন আর কোনও গ্রহণই হবে না!
গর্ভবতী মহিলাদের ওই সময় খাবার ও পানীয় খেতে বারণ করা হয়। এটাও একেবারেই বিভ্রান্তিমূলক।
দিল্লির সাকেতে ম্যাক্স হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান অনুরাধা কপূর বলছেন, ‘‘চিকিৎসা শাস্ত্র এমন কিছু বলে না। গোটা ব্যাপারটাই আজগুবি। বরং ওই দিন বা ওই সময় না খেলে গর্ভস্থ ভ্রূণ বা শিশুর ক্ষতিই হবে। তা গর্ভবতীর পক্ষেও বিপজ্জনক।’’
আর চন্দ্রগ্রহণে খালি চোখে দেখারও কোনও বিপদ নেই।
মুম্বইয়ের নেহরু প্ল্যানেটারিয়ামের অরবিন্দ পরাঞ্জপের কথায়, ‘‘খালি চোখে চন্দ্রগ্রহণ দেখার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা নেই।’’