Coronavirus

Covid 19: অ্যান্টিবডিকে বোকা বানিয়ে কোষ থেকে কী ভাবে কোষে ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস, দেখাল গবেষণা

গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস-এ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২১ ১৪:৪৩
Share:

-ফাইল ছবি।

নিজেকে বাঁচাতে আর দ্রুত সংক্রমণ ঘটাতে মানবদেহে ঢুকে চোরাপথে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। কোষ থেকে কোষে। যা মানবদেহের অ্যান্টিবডিগুলি টেরও পাচ্ছে না। মানবদেহের ভিতরে থাকা ‘প্রহরী’ (অ্যান্টিবডি)-দের চোখে এই ভাবে ধুলো দিতে পারছে বলেই দ্রুত সংক্রমণ ঘটানোর ক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠছে সার্স-কোভ-২ ভাইরাস। ওমিক্রন, ডেল্টা-সহ ভাইরাসের সবক’টি রূপেরই আছে এই অনায়াস দক্ষতা।

Advertisement

সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই খবর দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস’-এ।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা। এর ফলে, আরও কার্যকরী নতুন ওষুধ বা টিকা আবিষ্কারের পথ খুলে যেতে পারে অনতিবিলম্বে।

গবেষকরা পরীক্ষা চালিয়েছেন গবেষণাগারে। কালচার্ড মানব দেহকোষের উপর। তাঁরা দেখেছেন, মানবশরীরে ঢোকার পরপরই করোনাভাইরাস তার বহিরাবরণের ভিতরে থাকা পদার্থ (আরএনএ-র মতো ‘ভাইরাল পার্টিক্‌লস’) বার করছে না। মানবশরীরের অ্যান্টিবডিগুলিকে ধোঁকা দিতে। যাতে তারা বুঝতে না পারে বাইরে থেকে কোনও হানাদার ঢুকে পড়েছে মানবশরীরে। কারণ, অ্যান্টিবডিগুলি হানাদারি টের পেলে ভাইরাসের মুশকিল। তার শরীর থেকে বেরিয়ে আসা ভাইরাল পার্টিক্‌লগুলিকে তখন নিষ্ক্রিয় করে দেবে অ্যান্টিবডি।

Advertisement

তাই করোনাভাইরাস মানবশরীরে ঢোকার পর চট করে ভাইরাল পার্টিক্‌লগুলি তার দেহের ভিতর থেকে বার না করে দিয়ে আশ্রয়দাতার কোষগুলির গায়ে গিয়ে লেগে থাকে। তাদের এই ভাবে সেঁটে থাকতে সাহায্য করে মানব দেহকোষের বাইরের আবরণীতে থাকা এসিই-২ প্রোটিন। আর মানবকোষগুলির গায়ে নোঙর ফেলতে ভাইরাসকে সাহায্য করে তাদের আবরণীর বাইরে থাকা শুঁড়ের মতো স্পাইক প্রোটিন।

মূল গবেষক ওহায়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির ভাইরোলজি বিভাগের অধ্যাপক শান-লু লিউ বলেছেন, ‘‘এই ভাবে অভিনব উপায়ে চোরাপথে মানবদেহে একটি কোষ থেকে অন্য কোষে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাসের সবক’টি রূপই। মানবদেহের অ্যান্টিবডিগুলি যা টেরই পাচ্ছে না। যখন পাচ্ছে তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। কোষের প্রাচীর ভেঙে তার ভিতরে ঢুকে পড়েছে ভাইরাস। আর তার দেহের ভিতরে থাকা ভাইরাল পার্টিক্‌লগুলিকে বার করে দিয়েছে। ফলে মানব দেহকোষের ভিতরে তখন জোরকদমে শুরু হয়ে গিয়েছে ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি (‘রেপ্লিকেশন’)।’’

এই ভাবে কোষ থেকে কোষে অনেকটা তরঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। যা মানবদেহের অ্যান্টিবডিগুলি টেরই পাচ্ছে না।

যখন তা টের পাচ্ছে মানবদেহের প্রহরী অ্যান্টিবডিগুলি ততক্ষণে আশ্রয়দাতার ‘ধন’ চুরি করে নিয়েছে ভাইরাস!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন