ওয়ান প্লাস স্মার্টফোন। ছবি:সংগৃহীত
খুব দ্রুত গতিতে ভারতের বাজার কব্জা করে ফেলেছে ওয়ান প্লাস স্মার্টফোন। কিন্তু সম্প্রতি এক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, চাইনিজ এই স্মার্টফোন সংস্থা গোপনে স্মার্টফোন থেকে ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে নানা রকমের তথ্য সংগ্রহ করছে।
সিকিউরিটি রিসার্চার ক্রিস মুর সর্বপ্রথম এই বিষয়টি লক্ষ্য করেন। তার পরই তাঁর ব্লগে ওয়ান প্লাসের গোপনে তথ্য চুরির এই ঘটনাটি তুলে ধরেন মুর। তিনি জানান, কোনও স্মার্টফোনের আইএমইআই (IMEI) নম্বর, ম্যাক (MAAC) অ্যাড্রেস, মোবাইল নেটওয়ার্ক ইউসেজ, আইএমএসআই প্রেফিক্সেস (IMSI) থেকে মূলত তথ্য সংগ্রহ করছে এই ওয়ান প্লাস স্মার্টফোনগুলি।
আরও পড়ুন: আলোখেকো গ্রহের হদিশ মিলল এই প্রথম
নিজের ওয়ান প্লাস টু ফোন ব্যবহারের সময় ইন্টারনেট ট্র্যাফিক মনিটরিং অ্যাপ্লিকেশন ওডব্লিউএএসপি জ্যাপ-এ (OWASP ZAP) ওয়ান প্লাসে এই কারচুপি লক্ষ্য করেন ক্রিস মুর। এই অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারকারীকে তাঁর স্মার্টফোনের সমস্ত ইনকামিং ও আউটগোয়িং ট্র্যাফিকের তথ্য দেখতে সাহায্য করে। মুর আরও লক্ষ্য করেন যে প্রচুর তথ্য ‘ওপেন.ওয়ানপ্লাস.নেট’ ডোমেনে স্থানান্তরিত হচ্ছে। বহু ক্ষণ পরীক্ষানিরীক্ষার পর অ্যামাজন এডব্লিউএস (Amazon AWS) সার্ভারের সাহায্যে মুর আরেকটি বিষয়েও নিশ্চিত হয়ে যান যে এই ডোমেনের মালিকানা ওয়ান প্লাসেরই। বর্তমানে এই সার্ভার নিরাপদ এইচটিটিপিএস (HTTPS) ব্যবহার করে। এবং সেই দিক থেকে এই সার্ভারকে অবিশ্বাসযোগ্য বা জাল সূত্র বলা যায় না। এর পর আরও একটি বিষয় মুরের নজরে আসে যে তাঁর ওয়ান প্লাস টু ফোনটি, স্মার্টফোনের লক ও আন লক সংক্রান্ত নানা রকমের তথ্য পাঠাচ্ছে সার্ভারে। ফোনের আইএমইআই (IMEI) নম্বর, ফোন নম্বর, সিরিয়াল নম্বর থেকে ম্যাক (MAAC) অ্যাড্রেস, মোবাইল নেটওয়ার্কের নাম অর্থাৎ ওয়াই-ফাই (Wi-Fi) সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সার্ভারে পৌঁছে যাচ্ছে।
তবে মুর গোপনে তথ্য সংগ্রহের এই বিষয়ে কোডকেই বিশেষভাবে দায়ী করছেন যা ওয়ান প্লাস ডিভাইস ম্যানেজার ও ওয়ান প্লাস ডিভাইস ম্যানেজার প্রোভাইডারের অঙ্গ। ক্রিস মুর দাবি করছেন, যে তাঁর ক্ষেত্রে মাত্র ১০ ঘন্টার মধ্যেই ১৬ এমবি তথ্য চলে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: আকর্ষণীয় ফিচার নিয়ে বাজারে এল স্যামসাং গ্যালাক্সি নোট ৮
অ্যান্ড্রয়েড পুলিশ ওয়ান প্লাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাঁদের তরফে জানানো হয়, দুটো প্রবাহের মাধ্যমে ওয়ান প্লাস অ্যামাজন সার্ভারে অ্যানালিটিক্স পাঠায়। প্রথমটি ইউসেজ অ্যানালিটিক্স, যেটা আমরা সফটওয়্যারকে সুরক্ষিত রাখার জন্য পাঠাই। এবং দ্বিতীয়টি হল ফোনের তথ্য যা ফোন বিক্রির পর ব্যবহারকারীকে আরও সহায়তা দেওয়ার জন্য নেওয়া হয়। তবে ইউসেজ অ্যানালিটিক্স পাঠানো বন্ধও করা যেতে পারে। সেটিংস থেকে অ্যাডভান্স আর তার পর জয়েন ইউজার এক্সপিরিয়েন্স প্রোগ্রামে গেলেই ইউসেজ অ্যানালিটিক্স পাঠানো বন্ধ করা যায়।
তবে গোপনে তথ্য সংগ্রহের এই বিষয়টি কিন্তু এড়িয়ে যাননি ওয়ান প্লাস কর্তৃপক্ষ। ক্রিস মুর তাঁর ওয়ান প্লাস টু স্মার্টফোন থেকে বিষয়টি ধরতে পারেন। কে বলতে পারে ওয়ান প্লাসের নতুন মডেলগুলি যেমন ওয়ান প্লাস থ্রি, থ্রি টি এবং বাজারে এক্কেবারে নতুন মডেল ওয়ান প্লাস ফাইভ থেকেও এই ভাবে গোপনে তথ্য প্রেরিত হয়।