Life on Mars

মঙ্গলে প্রাণ আছে? শিলাস্তর পরীক্ষা করেই মিলল উত্তর! আর কী বলছে নতুন গবেষণা

পৃথিবীতে প্রাণীজগৎ রয়েছে, অথচ তুলনামূলক ভাবে একই রকম গ্রহ হওয়া সত্ত্বেও কেন মঙ্গল অনুর্বর এবং বসবাসের অযোগ্য— এ সব প্রশ্নই এত দিন ভাবিয়েছে বিজ্ঞানীদের। এ বার মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বের প্রশ্নকে আরও এক বার উস্কে দিল নতুন গবেষণা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৫ ১৮:৫৯
Share:

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

মঙ্গল গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে বহু কাল ধরে জল্পনা চলছে। চলছে গবেষণাও। পৃথিবীতে প্রাণীজগৎ রয়েছে, অথচ তুলনামূলক ভাবে একই রকম গ্রহ হওয়া সত্ত্বেও কেন মঙ্গল অনুর্বর এবং বসবাসের অযোগ্য— এ সব প্রশ্নই এত দিন ভাবিয়েছে বিজ্ঞানীদের। এ বার মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বের প্রশ্নকে আরও এক বার উস্কে দিল নতুন গবেষণা।

Advertisement

আজ থেকে কয়েক লক্ষ বছর আগে মঙ্গলে প্রাণ ছিল কি না, তা খুঁজতে দিনরাত কাজ করে চলেছে একাধিক রোভার। তবে সম্প্রতি নাসার ‘কিউরিয়োসিটি’ রোভারের আবিষ্কার মঙ্গলে প্রাণ-রহস্যের একটি সমাধানসূত্র দিয়েছে। ‘কিউরিয়োসিটি’র পাঠানো তথ্য বলছে, মঙ্গল গ্রহে একসময় বিক্ষিপ্ত ভাবে প্রবাহিত নদীনালা থাকলেও আদতে এই গ্রহের মরুভূমি হওয়ারই কথা ছিল! কেন? নতুন গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, এর নেপথ্য কারণ হল কার্বনেট খনিজে সমৃদ্ধ শিলা! চলতি মাসে ‘নেচার’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটিতে বলা হয়েছে, এই কার্বনেট জাতীয় শিলা (যেমন পৃথিবীর চুনাপাথর) মূলত বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে পাথুরে স্তরে আটকে রাখে। এই শিলাগুলির অস্তিত্ব থেকেই মঙ্গল গ্রহের অতীত সম্পর্কে ধারণা করা যায়।

এই গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক তথা নাসার কিউরিয়োসিটি দলের সদস্য এডউইন কাইট। সংবাদসংস্থা এএফপিকে কাইট বলেন, ‘‘হয়তো মঙ্গল গ্রহের কোনও কোনও অংশে কিছু সময়ের জন্য প্রাণের অনুকূল পরিবেশ ছিল। তবে সেগুলি ব্যতিক্রম।’’ এমনিতে মঙ্গল গ্রহে প্রাণের জন্য প্রয়োজনীয় মোটামুটি সব উপাদানই রয়েছে, কেবলমাত্র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি ছাড়া— জল! তবে লাল গ্রহের বুকে নানা জায়গায় বড় বড় গর্ত এবং খাত দেখে অনুমান করা হয়, অতীতে কোনও একসময় মঙ্গলে নদী ও হ্রদ ছিল! তা হলে কেন একে ‘ব্যতিক্রম’ বলছেন বিজ্ঞানীরা? তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন কাইট। তিনি বলেন, পৃথিবীর ক্ষেত্রে বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহকে উষ্ণ রাখে। যুগ যুগ ধরে এই কার্বন ডাই-অক্সাইড কার্বনেটজাতীয় শিলাস্তরে আটকে যায়। তার পর আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের সময় গ্যাসটি আবার বায়ুমণ্ডলে ফিরে যায়। এই সুষম কার্বনচক্র বহমান জলেরও সহায়ক। ২০২১ সালে নাসার ‘পার্সিভারেন্স’ রোভারও মঙ্গল গ্রহে শুকিয়ে যাওয়া হ্রদের ধারে কার্বনেটের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছিল। তবে কাইট বলছেন, পৃথিবীর তুলনায় মঙ্গলে অগ্ন্যুৎপাতের সংখ্যা কম। এর ফলে লাল গ্রহের পরিবেশে কার্বনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়েছে। আর সে কারণেই মঙ্গল অনেক ঠান্ডা এবং বসবাসের অযোগ্য।

Advertisement

তবে নতুন গবেষণায় এ-ও জানা গিয়েছে, কোটি কোটি বছর আগে মঙ্গলে স্বল্প সময়ের জন্য জল ছিল। কিন্তু সেই শেষ! তার পরের প্রায় ১০ কোটি বছর ধরেই মঙ্গল গ্রহ অনুর্বর মরুভূমি হয়ে রয়েছে। এত দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিকূল পরিবেশে কোনও কিছুর পক্ষেই বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। তবে কাইট বলছেন, ‘‘মঙ্গল গ্রহের গভীর ভূস্তরে এখনও জল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আমরা এখনও পর্যন্ত তা খুঁজে পাইনি।’’ আপাতত মঙ্গলে কার্বনেটের আরও প্রমাণ খোঁজার চেষ্টায় রয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মঙ্গলের পৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীতে পাথরের নমুনা পাঠানো গেলেই এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা করা যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement