চলছে গণেশ পুজো। সোমবার রাতে কার্বি-আংলঙের গ্রামে। ছবি: গ্রিন গার্ডের সৌজন্যে।
লোকালয়ে ঢুকে যাওয়া দলছুট হস্তিশাবককে ধরে ‘দেবদূত’ হিসেবে পুজো শুরু করেছিল গ্রামবাসীরা। আদিবাসী-অধ্যুষিত ওই এলাকার বাসিন্দাদের হাতে দেশি মদের বোতল, নগদ টাকা দিয়ে ক্ষুধার্ত, ক্লান্ত প্রাণীটিকে উদ্ধার করল বন দফতর। বনকর্তারা জানিয়েছেন, নগাঁও ও কার্বি আংলং জেলার সীমানার কাছে পারকাপ-মেজিগাঁও গ্রাম বুনো হাতিদের যাতায়াতের ‘করিডর’। গত কাল সকালে ওই পথে যাওয়ার সময় দলছুট হয়ে একটি হস্তিশাবক মেজিগাঁওতে ঢুকে পড়ে। গ্রামবাসীরা হাতিটিকে জঙ্গলে তাড়িয়ে দেওয়ার আগেই স্থানীয় এক মহিলা ও যুবক বাধা দেন। হস্তিশাবকটিকে দেখে না কি তাঁদের দু’জনের উপর অপদেবতা ভর করেছিল। কখনও তাঁরা চিৎকার করতে থাকেন, কখনও মাটিতে বসে কাঁদতে শুরু করেন। বেহুঁশও হয়ে যান। মহিলা বলতে থাকেন, অপদেবতা গোটা গ্রাম ছারখার করে দেবে। হস্তিশাবকটি দেবতার দূত। সেটিই অপদেবতাকে তাড়িয়ে গ্রাম বাঁচাতে পারে। দ্রুত খবর রটে যায় আশপাশের গ্রামে। দলে-দলে মানুষ মেজিগাঁওয়ে এসে শাবকটির পুজো শুরু করেন। সেটির শরীরে তেল-সিঁদুর লেপে দেওয়া হয়। চারপাশে জ্বালানো হয় ধূপকাঠি, প্রদীপ। ভয়ে, ক্লান্তিতে অসুস্থ হয়ে পড়ে হস্তিশাবকটি। জ্ঞানও হারায়।
প্রাণীটিকে উদ্ধার করতে বনকর্মী, স্বেচ্ছাসেবী ‘গ্রিন গার্ড’ সংস্থার সদস্যরা সেখানে পৌঁছন। কিন্তু, হস্তিশাবকটিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই গ্রামবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বন দফতর হাতিটিকে সরানোর চেষ্টা করলে ফল ভাল হবে না। জোর করে ওই কাজ করলে সমস্যা হতে পারে দেখে, অন্য উপায় বের করেন চাপানালার বিট অফিসার প্রণব বরা, পশুপ্রেমী দুলু বরা। গ্রামবাসীদের দেশি মদ, টাকার লোভ দেখানো হয়।