দল-হারা হাতিছানা ঠাঁই পেল গরুমারায়

দলছুট হাতি শাবককে উদ্ধার করল বন দফতর। সোমবার সকালে ডুয়ার্সের চালসা স্টেশন লাগোয়া কুর্তি নদীর ধারে শাবকটিকে ঘুরতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপরই গরুমারার দুই কুনকি হিলারি এবং চন্দনকে নিয়ে আসা হয় চালসাতে। কুর্তি নদীতে নেমে গিয়ে দুই কুনকি দুইপাশ দিয়ে চেপে ধরে হাতি শাবকটিকে দেড় কিমি হাঁটিয়ে চালসার রেঞ্জ অফিসে নিয়ে আসে। ৪-৬ মাসের মত বয়সের পুরুষ শাবকটিকে দেখতে চালসা রেঞ্জ অফিসে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন। হিলারি এবং চন্দনই স্থানীয় বাসিন্দাদের হাত থেকে শাবকটিকে নিরাপদ দূরত্বে আগলে আগলে রাখা শুরু করেছে। এ দিন কলাপাতাও খেয়েছে শাবকটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালবাজার শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:১৮
Share:

দুই কুনকির সঙ্গে উদ্ধার হওয়া শিশু। দক্ষিণ ধুপঝোরার বিটের পিলখানায় দীপঙ্কর ঘটকের তোলা ছবি।

দলছুট হাতি শাবককে উদ্ধার করল বন দফতর। সোমবার সকালে ডুয়ার্সের চালসা স্টেশন লাগোয়া কুর্তি নদীর ধারে শাবকটিকে ঘুরতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপরই গরুমারার দুই কুনকি হিলারি এবং চন্দনকে নিয়ে আসা হয় চালসাতে। কুর্তি নদীতে নেমে গিয়ে দুই কুনকি দুইপাশ দিয়ে চেপে ধরে হাতি শাবকটিকে দেড় কিমি হাঁটিয়ে চালসার রেঞ্জ অফিসে নিয়ে আসে। ৪-৬ মাসের মত বয়সের পুরুষ শাবকটিকে দেখতে চালসা রেঞ্জ অফিসে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন। হিলারি এবং চন্দনই স্থানীয় বাসিন্দাদের হাত থেকে শাবকটিকে নিরাপদ দূরত্বে আগলে আগলে রাখা শুরু করেছে। এ দিন কলাপাতাও খেয়েছে শাবকটি।

Advertisement

চাপড়ামারি জঙ্গল লাগোয়া জলপাইগুড়ি বনবিভাগের খুনিয়া রেঞ্জের পানঝোরা বিটের জঙ্গল। গত রবিবার রাত থেকেই বনদফতরের টহলরত কর্মীরা দলছুট শাবকটিকে দেখতে পান। পানঝোরার জঙ্গলে ২০-৩০টি হাতির একটি দলকে ঘুরতেও দেখেন বনকর্মীরা। এর পরেই শাবকটিকে একা অবস্থায় জঙ্গলে দেখা যায়। বন কর্মীদের অনুমান, শাবকটি পানঝোরার জঙ্গলে আসা হাতির দলটিরই সদস্য ছিল। শাবকটি যাতে ফের দলে ফিরে যেতে পারে তারজন্য শাবকটিকে রাতে উদ্ধার না করে জঙ্গলেই নজরে রাখা হয়। কিন্তু তা হয়নি। রাতে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ালেও এদিন সকালে কুর্তি নদীর ধারে শাবকটির দেখা মেলে। চালসা রেল স্টেশনের কাছাকাছিও সেটি চলে আসে। দলে ফেরার আর আশা না করে বনকর্মীরা সেটিকে উদ্ধার করেন। গরুমারার কুনকিদের মাহুত সঞ্জিত রায় এবং দিলীপ খেড়োয়ার জানান, শাবকটিকে উদ্ধার করতে বেগ পেতে না হলেও শাবকটিকে দেখে বেশ রাগী বলেই মনে হচ্ছে। কলাগাছ খেলেও মাঝেমধ্যেই অদ্ভুত আওয়াজ করছে। গরুমারার দক্ষিণ ধুপঝোরার বিটের পিলখানাতে শাবকটিকে আপাতত নজরে রাখা হচ্ছে। জলপাইগুড়ি বন্য প্রাণী ২ বিভাগের ডিএফও সুমিতা ঘটক জানান, দুই চিকিৎসক শাবকটির চিকিৎসা শুরু করেছেন। প্রথমে কিছুটা স্যালাইন দিয়ে সারারাতের ক্লান্তি কাটাবার চেষ্টা হলে পরে বেলা বাড়লে স্যালাইনের বদলে দুধ এবং জল পাশাপাশি অল্প কলাগাছে, কাঁচা নরম সবুজ পাতাও দেওয়া হয়। তবে মাত্র কয়েকমাসের এই শাবকটি আদৌও কৃত্রিম পদ্ধিতে খাবার পেয়ে কতটা সুস্থ থাকবে, সেটাই চিন্তার। গত ২৮ সেপ্টেম্বর ডুয়ার্সের বেতগুড়ি চা বাগানের নামজি লাইনে একটি ডোবার থেকে হস্তিশাবক উদ্ধার করা হয়েছিল। সেটিকেও ধূপঝোরার পিলখানাতেই আনা হয়েছিল। ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শাবকটি মারা যায়। ২০১০ মূর্তি নদীর চর থেকে মা হারা শাবককে উদ্ধার করা হয়। নাম রাখা হয়েছিল মূর্তিরাণি। কিন্তু মূর্তিরাণিকেও বাঁচানো যায়নি। তাতেই নতুন শাবকটিকে নিয়ে চিন্তিত কর্মীরা। এই শাবকটি অনেকটাই সুস্থ থাকায় আশাবাদী বনকর্মীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন