হরিয়ানার অনুকরণে জেলার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পরিবেশ বান্ধব উদ্যান তৈরিতে উদ্যোগী হল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন ও বন-ভূমি সংস্কার দফতর। আগামী জুলাই মাসে রাজ্যজুড়ে অরণ্য সপ্তাহ পালনের সময়ে ‘আমার গ্রাম, আমার বাগান’ কর্মসূচিতে এই কাজ শুরুর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, গ্রামীণ বিদ্যালয় বা প্রধান রাস্তা সংলগ্ন এলাকায় সরকারি জমিতে এই বাগানের জায়গা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের প্রস্তাব, বাগানের জন্যে ৩৪-৩৫ ডেসিমল জমি হলে ভাল হয়। ওই জমিতে অগভীর জলাশয় খনন করতে হবে। জলে থাকবে শালুক, কচুরিপানা, পদ্মফুল ইত্যাদি জলজ উদ্ভিদ। জলাশয়ের চারধারে বেড়া দেওয়া রাস্তা থাকবে। যাতে শিশু ও বয়স্কেরা নিরাপদে তার ধারে ঘুরতে পারেন। থাকবে দোলনা ও বয়ষ্কদের বসার বেঞ্চ। বাগানে থাকবে বিভিন্ন ধরনের ফুল, ফলের বাগান। এক কথায় পরিবেশ বান্ধব এমন একটি জায়গা তৈরি করা হবে, যেখানে শিশু-বয়ষ্কেরা সহজে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পান।
সম্প্রতি জেলা পরিষদের বন ও ভূমি সংস্কার দফতরের স্থায়ী সমিতির বৈঠকে ওই প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। দফতরের কর্মাধ্যক্ষ মৃণালকান্তি দাস জানান, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ‘আমার গ্রাম, আমার বাগান’ কর্মসূচিতে জেলার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কমপক্ষে একটি করে পরিবেশ বান্ধব উদ্যান গড়ে তোলা হবে। এই কাজের জন্য একশো দিনের কাজের প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ করা হবে বলে তিনি জানান। ইতিমধ্যে প্রতিটি ব্লকে মডেল পরিকল্পনা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, এক একটি উদ্যান গড়তে খরচ ধরা হয়েছে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিয়ানায় ‘হামারা গাঁও, হামারা বাগিচা’ নামে এক প্রকল্প রয়েছে। ওই প্রকল্পে প্রতিটি গ্রামীণ এলাকায় পরিবেশ বান্ধব বাগান গড়ার কাজ চলছে। তার অনুকরণেই গ্রামীণ এলাকার শিশু ও বয়স্কদের অবসর সময়কে আনন্দদায়ক করতে এই উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অজয় পাল বলেন, “মডেল অনুযায়ী দ্রুত উদ্যান গড়তে জেলার প্রতিটি ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েতকে বলা হয়েছে।” আগামী ১৪ জুলাই থেকে ২০ জুলাই অরণ্য সপ্তাহ পালনের সময় এই কাজ শুরু করার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে।
মৃণালকান্তি দাস জানান, অরণ্য সপ্তাহে বনসৃজনের জন্য জেলার ২৫টি ব্লকের প্রতিটিকে এক লক্ষ করে মোট ২৫ লক্ষ বিভিন্ন চারাগাছ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও স্কুল-ক্যাম্পাসে ফলের বাগান তৈরির জন্য জেলার এক হাজার বিদ্যালয়কে আগামী ১৫ আগস্ট ১০০টি করে বিভিন্ন ফলের চারাগাছ দেওয়া হবে।