কাটোয়ায় হাতি। —নিজস্ব চিত্র।
দাঁতালের হামলায় জখম হলেন সরিফুল মণ্ডল (৩৫) নামে এক ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার কাটোয়ার পেকুয়া গ্রামের ঘটনা। ঘটনার সময়ে কোনও বন দফতরের কর্মীর দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের।
বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি বাঁকুড়া থেকে ৪টি দাঁতালের একটি দল প্রথমে আউশগ্রামে ঢোকে। পরে ভাতারের ওরগ্রাম হয়ে মঙ্গলকোটে পৌঁছায় দলটি। তারপরেই একটি দাঁতাল দলছুট হয়ে কাটোয়া-মালডাঙা রাস্তা ধরে পৌঁছে যায় কাটোয়ার শিলে গ্রামে। গত রবিবার দলছুট দাঁতালটি প্রথমে পৌঁছয় পূর্বস্থলীর ফলেয়া গ্রামে। এর পরে দিন দু’য়েক ওই এলাকারই বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে মঙ্গলবার সকালে ছাড়ি গঙ্গা পেরিয়ে নদিয়ার প্রতাপনগরে পৌঁছে যায় দাঁতালটি। গত মঙ্গলবার দুপুরে পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুরে দাঁতালটি ঢুকে পড়ার চষ্টা করতেই হুলা পার্টি তাকে নদিয়ার দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যায়। নদিয়ার কালীনগর-সহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে ওই দিন সন্ধ্যায় দাঁতালটি ফের পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুরে ঢুকে পড়ে। বুধবার ভোর হতেই দাঁতালটি চলে যায় পূর্বস্থলীর নাদনঘাটে। ওই দিন বিকেলে তার দেখা মেলে বগপুর পঞ্চায়েতের সাহাপুর গ্রামের একটি পাট খেতে।
এর পরে দাঁতালটি বৃহস্পতিবার ফের কাটোয়ায় পৌঁছয়। গত কয়েকদিনের মতো এ দিনও দাঁতালটিকে দেখে কয়েকজন বাসিন্দা অতি-উৎসাহী হয়ে পড়েন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ সিঙ্গি পঞ্চায়েতের পেকুয়া গ্রামের বাসিন্দা সরিফুল খেতে গরু চরাতে গিয়েছিলেন। উল্টো দিক থেকে দাঁতালটি আসছিল। গ্রামের কয়েকজন মানুষ দাঁতালটির পিছু নেয়। সারিফুলকে সামনে পেয়ে দাঁতালটি তাকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে। গুরুতর আহত হন সরিফুল। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা সরিফুলকে উদ্ধার করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করায়।
বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ওই সময় কোনও বন দফতরের কর্মীর দেখা মেলেনি। কাটোয়া ২ নম্বর পঞ্চায়েতের সদস্য হোসেন শেখ বলেন, ‘‘বন কর্মীরা থাকলে হয়তো দুর্ঘটনাটি এড়ানো যেত।’’ বন দফতরের তরফে যদিও অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। বন দফতরের এক আধিকারিক জানান, একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে কিছুটা দূরেই হুলা পার্টি ও বন কর্মীরা ছিলেন। সাধারণ মানুষের অতি উৎসাহের কারণেই দাঁতালটি হামলা করে। এ দিন রাতে দাঁতালটিকে মঙ্গলকোটের কৈচর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এরপর দাঁতালটিকে আউশগ্রামের জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে।