প্রতিমা গড়তে পরিবেশ সহায়ক রং বিলি

পুজোর ক’টা দিন আনন্দের পরে বিসর্জনও হয় বেশ জাঁকজমকের সঙ্গে। প্রতিমা পুকুর বা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার দিন কয়েক পরে কাঠামো হয়তো টেনে তোলা হয়। কিন্তু রং তো মিশে যায় জলেই। প্রতিমা উজ্জ্বল, চকচকে করতে যে সব রং ব্যবহার হয়, তা থেকে জলদূষণ হয়। শুধু ধুমধাম করে পুজো করলেই চলবে না, খেয়াল রাখতে হবে পরিবেশের দিকেওএই বার্তা দিতে মৃৎশিল্পীদের পরিবেশ সহায়ক রং বিতরণ করল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও আসানসোল মহকুমা প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১৩
Share:

চলছে অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র।

পুজোর ক’টা দিন আনন্দের পরে বিসর্জনও হয় বেশ জাঁকজমকের সঙ্গে। প্রতিমা পুকুর বা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার দিন কয়েক পরে কাঠামো হয়তো টেনে তোলা হয়। কিন্তু রং তো মিশে যায় জলেই। প্রতিমা উজ্জ্বল, চকচকে করতে যে সব রং ব্যবহার হয়, তা থেকে জলদূষণ হয়। শুধু ধুমধাম করে পুজো করলেই চলবে না, খেয়াল রাখতে হবে পরিবেশের দিকেওএই বার্তা দিতে মৃৎশিল্পীদের পরিবেশ সহায়ক রং বিতরণ করল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও আসানসোল মহকুমা প্রশাসন।

Advertisement

বুধবার আসানসোলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অফিস থেকে জনা পঞ্চাশ মৃৎশিল্পীকে এই রং বিলি করা হয়। কী ভাবে এই রং ব্যবহার করলে প্রতিমা সুন্দর হবে, সে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় তাঁদের। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান বিনয় দত্ত জানান, কলকাতার বাইরে এই প্রথম কোনও শাখা কার্যালয় থেকে জেলার মৃৎশিল্পীদের জন্য পরিবেশ সহায়ক রং দেওয়া হল। তিনি বলেন, “এর একটাই কারণ, এলাকার পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখা।”

বিনয়বাবু জানান, প্রতিমা চকচকে ও উজ্জ্বল করে তুলতে শিল্পীরা সাধারণত যে রং ব্যবহার করেন, তা অত্যন্ত ক্ষতিকারক। তাতে মেটাল অক্সাইড, লেড অক্সাইড ও লেড ক্রোমেড ম্যাঙ্গানিজ, পারদ জাতীয় দূষিত পদার্থ ও ধাতু ব্যবহার করা হয়। এই রং ব্যবহার করায় শিল্পীদেরও নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিমা নদী বা পুকুরে বিসর্জনের পরে রং জলের দূষণ বাড়ায়। ক্ষতি হয় মাছেরও। বিনয়বাবু বলেন, “গত বছরে কলকাতায় অনেক শিল্পীকে এই রং দেওয়া হয়েছিল। এ বছর আসানসোল ও হলদিয়ায় দেওয়া হচ্ছে।” দুর্গাপুর থেকে পরিবেশ সহায়ক রং নিতে এসেছিলেন মৃৎশিল্পী দীপক পাল। তিনি বলেন, “আমরা পর্ষদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি। ক্রেতারা যদি খুশি হন তবেই সব দিক ঠিক মতো বজায় থাকবে।” আসানসোলের শিল্পী অজয় পাল বলেন, “আমরা এই রং ব্যবহার করতে রাজি। একই সঙ্গে ক্রেতাদের সচেতনতাও বাড়ানোর ব্যবস্থা করা হোক। তাঁরা যেন এই রঙের প্রতিমাই কেনেন, সেই দিকটিও দেখা দরকার।” পরিবেশ সহায়ক রং প্রস্তুতকারক সংস্থার কর্তারা শিল্পীদের বোঝান, কী পদ্ধতিতে এই রং ব্যবহার করলে প্রতিমা উজ্জ্বল দেখাবে। বাজারে নিয়মিত এই রং মিলবে বলেও তাঁরা দাবি করেন। মৃৎশিল্পীদের হাতে এ দিন রং তুলে দিয়েছেন আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস। তিনি জানান, এই শিল্পাঞ্চলে দূষণএমনিতেই বেশি। সরকার তাই দূষণ রোধের নানা পদ্ধতি নিচ্ছে। এটি তারই অঙ্গ।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন